নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের চাওয়া পূরণ না হলে ভিসা নীতি ঘোষণার পর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আশঙ্কার কথাও বলছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো। তবে তেমন পরিস্থিতি এড়াতে রাষ্ট্রদূতসহ কূটনীতিকেরা সব পক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন।
গতকাল রোববার ঢাকায় সরকার, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সফররত দুই মার্কিন কংগ্রেসম্যান এবং ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত। এসব বৈঠকে তাঁরা জানতে-বুঝতে চেয়েছেন ভোটের আগে দুই পক্ষের মধ্যৈ সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিরোধীদের প্রধান যে দাবি, তা নিয়ে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের সময় সরকারপ্রধান হিসেবে কে থাকবেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপির মূল বিরোধ তা নিয়ে। আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেই ভোটে যেতে চায়। আর ঠিক উল্টোটি চায় বিএনপি—শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এখন পর্যন্ত দুই দলই অনড় নিজ নিজ অবস্থানে।
দুই কংগ্রেসম্যান—ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের এড কেস ও রিপাবলিকান রিচার্ড ম্যাককরমিক—সফরের প্রথম দিন গতকাল পরপর চারটি বৈঠকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা স্থানীয় বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতার পথ খুঁজছেন। বিষয়টি তাঁরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনায় তুলেছেন।
প্রায় দুই ঘণ্টা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন দুই কংগ্রেসম্যান। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতার পথ আছে কি না জানতে চেয়েছেন কংগ্রেসম্যানরা। তিনি তাঁদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে টেড কেনেডির মতো একজন আছেন, যিনি ঐকমত্যের জন্য মধ্যস্থতা করেছেন। এখানে ঐকমত্যের কোনো দাবি নেই। এখানকার বিরোধী দলের কাছে নির্বাচন নয়, সরকারের পতন গুরুত্বপূর্ণ, যা আলোচনার বিষয় নয়। বিরোধী দল বলছে, সরকারের পতন হবে, তারপর তারা নির্বাচন করবে। এই অবস্থায় সরকারের সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।
দুই মার্কিন রাজনীতিক আগামী নির্বাচন নিয়ে প্রায় অচলাবস্থার মতো পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে কোনো ফর্মুলা দিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে মোমেন ‘না’ বলেন। তিনি মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের বলেন, সরকার সংবিধানের ভিত্তিতে নির্বাচন করবে। সরকার মনে করে, এতে সবার অংশগ্রহণ করা উচিত।
কংগ্রেসম্যানরা নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতা এড়ানোর প্রসঙ্গটিও আলোচনায় আনেন। এ প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, তিনি তাঁদের জানিয়েছেন, শুধু নির্বাচন কমিশন ও সরকার চাইলেই এটা নিশ্চিত করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাকাঠামোর অনেকের মতো এই দুই কংগ্রেসম্যানও মনে করেন, বাংলাদেশ চীনের খপ্পরে পড়ে গেছে। কোনো রাখঢাক না রেখে তাঁরা বিষয়টি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তুলেছেন। মন্ত্রী বলেন, তাঁকে কংগ্রেস সদস্যরা চীন থেকে বিপুল ঋণ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তোমরা চীনের ভেতরে চলে যাচ্ছ।’
মোমেন জানান, দুই কংগ্রেসম্যান বিভিন্ন মানুষের কাছে শুনেছেন, বাংলাদেশ ‘চীনের খপ্পরে’ পড়ে গেছে। আর এটি একটি ভয়ংকর জায়গা, যেখানে অশান্তি চলছে। পুলিশ যখন-তখন লোক ধরে ফেলছে এবং মেরে ফেলছে।
এ বিষয়ে মোমেন কংগ্রেসম্যানদের জানান, বাংলাদেশের মোট ঋণের মাত্র ১ শতাংশের মতো চীন থেকে নেওয়া, যা কোনো বড় বিষয় নয় বলে সরকার মনে করে।
তিন দলের সঙ্গে বৈঠক
চার দিনের সফরে দুই কংগ্রেসম্যান শনিবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান। তাঁরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের গুলশানের বাসভবনে আলাদা বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
বৈঠকে কংগ্রেসম্যানরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে ব্যাখ্যা করেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কেন বাংলাদেশের অবস্থা ও অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সারা পৃথিবীতে যেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কমে যাচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেন গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে, সেটা চায় আমেরিকা।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান, নাহিম রাজ্জাক এবং তামান্না নুসরাত (বুবলী)। কংগ্রেসম্যান এড কেইস আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলকে বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীর কাছে অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আইনের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হয়েছে। আর সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো বিধান রাখা সম্ভব নয়। জাতীয় সংসদের সামনের অধিবেশনে আরেকটা আইন আসবে। তাতে নির্বাচনকালীন সময়ে বিশৃঙ্খলা করা হলে শাস্তির বিধান রাখা হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করা হয়।
বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। তিনি জানান, মার্কিন প্রতিনিধিদের তাঁরা বলেছেন, দেশে এক ব্যক্তির শাসন চলছে। এই অবস্থায় বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। একই সঙ্গে দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলেও উল্লেখ করে।
জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদলে ছিলেন তিন সংসদ সদস্য শেরিফা কাদের, রানা মোহাম্মদ সোহেল ও নাজমা আকতার। রানা মোহাম্মদ সোহেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, কংগ্রেস সদস্যরা বলেছেন, বাংলাদেশে এমন নির্বাচন হওয়া উচিত, যেন বহির্বিশ্ব বলতে পারে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে।
পরিবেশ বুঝতে নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক
মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যান এড কেস ও রিচার্ড ম্যাককরমিক গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। গুলশানে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসভবনে এ বৈঠকে তাঁরা প্রধানত সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ করেন।
বৈঠকে অনেকের মধ্যে ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দুই কংগ্রেসম্যান মূলত বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বুঝতে চেয়েছেন, নির্বাচন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার কোনো সুযোগ আছে কি না। তবে দুই মার্কিন রাজনীতিক নিজেরা কোনো মন্তব্য করেননি।
মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল ১৯-এর আঞ্চলিক পরিচালক ফারুক ফয়সালও ছিলেন বৈঠকে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হলে কী করা দরকার, সে বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। নির্বাচন প্রসঙ্গ তার মধ্যে একটি। তাঁরা জানতে চেয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আগে ছিল কি না?
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন কংগ্রেসম্যানদের জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আগে ছিল। এখন তা সংবিধানে নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, কংগ্রেসম্যানদের এমন প্রশ্নে কয়েকজন জানান, সেটা রাজনৈতিক দলগুলো ভালো বলতে পারবে।
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, বিআইপিএসএস প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ন ম মুনিরুজ্জামান, নারীনেত্রী শিরিন হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান, অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানসহ অন্যরা এ বৈঠকে অংশ নেন।
ছাড় সরকারকেই দিতে হবে
গত শনিবার বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের উল্লেখ করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি অংশ বলছে, দুই রাজনৈতিক পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে তাদের মধ্যে সংলাপের সম্ভাবনাও তেমন দেখা যাচ্ছে না।
কাদের বলেছেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। মন চাইলে নির্বাচনে আসবেন, না হয় যা মন চায় তা করেন।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুঃখজনক ব্যাপার হলো, তেমন কোনো বিষয়ই নেই, যা নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনার টেবিলে বসতে পারে। এই অবস্থায় সংলাপের কোনো সুযোগ দেখি না।’
চলমান সংকট নিরসনে এখনো আলোচনাকেই গুরুত্ব দেওয়া দরকার বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। আর এ ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগী হওয়া দরকার বলে মনে করেন তাঁরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আলোচনার উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকেই আগে আসা দরকার। তাদেরই ছাড় দিতে হবে। তা না হলে দুই দলকে আলোচনায় বসানো সম্ভব নয়। আর এই আলোচনা না হলে বিরোধী দল রাজপথে সমাধান খুঁজবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের চাওয়া পূরণ না হলে ভিসা নীতি ঘোষণার পর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আশঙ্কার কথাও বলছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো। তবে তেমন পরিস্থিতি এড়াতে রাষ্ট্রদূতসহ কূটনীতিকেরা সব পক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন।
গতকাল রোববার ঢাকায় সরকার, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সফররত দুই মার্কিন কংগ্রেসম্যান এবং ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত। এসব বৈঠকে তাঁরা জানতে-বুঝতে চেয়েছেন ভোটের আগে দুই পক্ষের মধ্যৈ সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিরোধীদের প্রধান যে দাবি, তা নিয়ে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের সময় সরকারপ্রধান হিসেবে কে থাকবেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপির মূল বিরোধ তা নিয়ে। আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেই ভোটে যেতে চায়। আর ঠিক উল্টোটি চায় বিএনপি—শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এখন পর্যন্ত দুই দলই অনড় নিজ নিজ অবস্থানে।
দুই কংগ্রেসম্যান—ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের এড কেস ও রিপাবলিকান রিচার্ড ম্যাককরমিক—সফরের প্রথম দিন গতকাল পরপর চারটি বৈঠকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা স্থানীয় বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতার পথ খুঁজছেন। বিষয়টি তাঁরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনায় তুলেছেন।
প্রায় দুই ঘণ্টা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন দুই কংগ্রেসম্যান। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতার পথ আছে কি না জানতে চেয়েছেন কংগ্রেসম্যানরা। তিনি তাঁদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে টেড কেনেডির মতো একজন আছেন, যিনি ঐকমত্যের জন্য মধ্যস্থতা করেছেন। এখানে ঐকমত্যের কোনো দাবি নেই। এখানকার বিরোধী দলের কাছে নির্বাচন নয়, সরকারের পতন গুরুত্বপূর্ণ, যা আলোচনার বিষয় নয়। বিরোধী দল বলছে, সরকারের পতন হবে, তারপর তারা নির্বাচন করবে। এই অবস্থায় সরকারের সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।
দুই মার্কিন রাজনীতিক আগামী নির্বাচন নিয়ে প্রায় অচলাবস্থার মতো পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে কোনো ফর্মুলা দিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে মোমেন ‘না’ বলেন। তিনি মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের বলেন, সরকার সংবিধানের ভিত্তিতে নির্বাচন করবে। সরকার মনে করে, এতে সবার অংশগ্রহণ করা উচিত।
কংগ্রেসম্যানরা নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতা এড়ানোর প্রসঙ্গটিও আলোচনায় আনেন। এ প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, তিনি তাঁদের জানিয়েছেন, শুধু নির্বাচন কমিশন ও সরকার চাইলেই এটা নিশ্চিত করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাকাঠামোর অনেকের মতো এই দুই কংগ্রেসম্যানও মনে করেন, বাংলাদেশ চীনের খপ্পরে পড়ে গেছে। কোনো রাখঢাক না রেখে তাঁরা বিষয়টি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তুলেছেন। মন্ত্রী বলেন, তাঁকে কংগ্রেস সদস্যরা চীন থেকে বিপুল ঋণ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তোমরা চীনের ভেতরে চলে যাচ্ছ।’
মোমেন জানান, দুই কংগ্রেসম্যান বিভিন্ন মানুষের কাছে শুনেছেন, বাংলাদেশ ‘চীনের খপ্পরে’ পড়ে গেছে। আর এটি একটি ভয়ংকর জায়গা, যেখানে অশান্তি চলছে। পুলিশ যখন-তখন লোক ধরে ফেলছে এবং মেরে ফেলছে।
এ বিষয়ে মোমেন কংগ্রেসম্যানদের জানান, বাংলাদেশের মোট ঋণের মাত্র ১ শতাংশের মতো চীন থেকে নেওয়া, যা কোনো বড় বিষয় নয় বলে সরকার মনে করে।
তিন দলের সঙ্গে বৈঠক
চার দিনের সফরে দুই কংগ্রেসম্যান শনিবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান। তাঁরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের গুলশানের বাসভবনে আলাদা বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
বৈঠকে কংগ্রেসম্যানরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে ব্যাখ্যা করেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কেন বাংলাদেশের অবস্থা ও অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সারা পৃথিবীতে যেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কমে যাচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেন গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে, সেটা চায় আমেরিকা।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান, নাহিম রাজ্জাক এবং তামান্না নুসরাত (বুবলী)। কংগ্রেসম্যান এড কেইস আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলকে বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীর কাছে অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আইনের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হয়েছে। আর সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো বিধান রাখা সম্ভব নয়। জাতীয় সংসদের সামনের অধিবেশনে আরেকটা আইন আসবে। তাতে নির্বাচনকালীন সময়ে বিশৃঙ্খলা করা হলে শাস্তির বিধান রাখা হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করা হয়।
বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। তিনি জানান, মার্কিন প্রতিনিধিদের তাঁরা বলেছেন, দেশে এক ব্যক্তির শাসন চলছে। এই অবস্থায় বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। একই সঙ্গে দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলেও উল্লেখ করে।
জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদলে ছিলেন তিন সংসদ সদস্য শেরিফা কাদের, রানা মোহাম্মদ সোহেল ও নাজমা আকতার। রানা মোহাম্মদ সোহেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, কংগ্রেস সদস্যরা বলেছেন, বাংলাদেশে এমন নির্বাচন হওয়া উচিত, যেন বহির্বিশ্ব বলতে পারে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে।
পরিবেশ বুঝতে নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক
মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যান এড কেস ও রিচার্ড ম্যাককরমিক গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। গুলশানে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসভবনে এ বৈঠকে তাঁরা প্রধানত সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ করেন।
বৈঠকে অনেকের মধ্যে ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দুই কংগ্রেসম্যান মূলত বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বুঝতে চেয়েছেন, নির্বাচন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার কোনো সুযোগ আছে কি না। তবে দুই মার্কিন রাজনীতিক নিজেরা কোনো মন্তব্য করেননি।
মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল ১৯-এর আঞ্চলিক পরিচালক ফারুক ফয়সালও ছিলেন বৈঠকে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হলে কী করা দরকার, সে বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। নির্বাচন প্রসঙ্গ তার মধ্যে একটি। তাঁরা জানতে চেয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আগে ছিল কি না?
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন কংগ্রেসম্যানদের জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আগে ছিল। এখন তা সংবিধানে নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, কংগ্রেসম্যানদের এমন প্রশ্নে কয়েকজন জানান, সেটা রাজনৈতিক দলগুলো ভালো বলতে পারবে।
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, বিআইপিএসএস প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ন ম মুনিরুজ্জামান, নারীনেত্রী শিরিন হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান, অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানসহ অন্যরা এ বৈঠকে অংশ নেন।
ছাড় সরকারকেই দিতে হবে
গত শনিবার বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের উল্লেখ করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি অংশ বলছে, দুই রাজনৈতিক পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে তাদের মধ্যে সংলাপের সম্ভাবনাও তেমন দেখা যাচ্ছে না।
কাদের বলেছেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। মন চাইলে নির্বাচনে আসবেন, না হয় যা মন চায় তা করেন।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুঃখজনক ব্যাপার হলো, তেমন কোনো বিষয়ই নেই, যা নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনার টেবিলে বসতে পারে। এই অবস্থায় সংলাপের কোনো সুযোগ দেখি না।’
চলমান সংকট নিরসনে এখনো আলোচনাকেই গুরুত্ব দেওয়া দরকার বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। আর এ ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগী হওয়া দরকার বলে মনে করেন তাঁরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আলোচনার উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকেই আগে আসা দরকার। তাদেরই ছাড় দিতে হবে। তা না হলে দুই দলকে আলোচনায় বসানো সম্ভব নয়। আর এই আলোচনা না হলে বিরোধী দল রাজপথে সমাধান খুঁজবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের চাওয়া পূরণ না হলে ভিসা নীতি ঘোষণার পর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আশঙ্কার কথাও বলছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো। তবে তেমন পরিস্থিতি এড়াতে রাষ্ট্রদূতসহ কূটনীতিকেরা সব পক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন।
গতকাল রোববার ঢাকায় সরকার, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সফররত দুই মার্কিন কংগ্রেসম্যান এবং ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত। এসব বৈঠকে তাঁরা জানতে-বুঝতে চেয়েছেন ভোটের আগে দুই পক্ষের মধ্যৈ সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিরোধীদের প্রধান যে দাবি, তা নিয়ে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের সময় সরকারপ্রধান হিসেবে কে থাকবেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপির মূল বিরোধ তা নিয়ে। আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেই ভোটে যেতে চায়। আর ঠিক উল্টোটি চায় বিএনপি—শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এখন পর্যন্ত দুই দলই অনড় নিজ নিজ অবস্থানে।
দুই কংগ্রেসম্যান—ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের এড কেস ও রিপাবলিকান রিচার্ড ম্যাককরমিক—সফরের প্রথম দিন গতকাল পরপর চারটি বৈঠকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা স্থানীয় বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতার পথ খুঁজছেন। বিষয়টি তাঁরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনায় তুলেছেন।
প্রায় দুই ঘণ্টা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন দুই কংগ্রেসম্যান। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতার পথ আছে কি না জানতে চেয়েছেন কংগ্রেসম্যানরা। তিনি তাঁদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে টেড কেনেডির মতো একজন আছেন, যিনি ঐকমত্যের জন্য মধ্যস্থতা করেছেন। এখানে ঐকমত্যের কোনো দাবি নেই। এখানকার বিরোধী দলের কাছে নির্বাচন নয়, সরকারের পতন গুরুত্বপূর্ণ, যা আলোচনার বিষয় নয়। বিরোধী দল বলছে, সরকারের পতন হবে, তারপর তারা নির্বাচন করবে। এই অবস্থায় সরকারের সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।
দুই মার্কিন রাজনীতিক আগামী নির্বাচন নিয়ে প্রায় অচলাবস্থার মতো পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে কোনো ফর্মুলা দিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে মোমেন ‘না’ বলেন। তিনি মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের বলেন, সরকার সংবিধানের ভিত্তিতে নির্বাচন করবে। সরকার মনে করে, এতে সবার অংশগ্রহণ করা উচিত।
কংগ্রেসম্যানরা নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতা এড়ানোর প্রসঙ্গটিও আলোচনায় আনেন। এ প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, তিনি তাঁদের জানিয়েছেন, শুধু নির্বাচন কমিশন ও সরকার চাইলেই এটা নিশ্চিত করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাকাঠামোর অনেকের মতো এই দুই কংগ্রেসম্যানও মনে করেন, বাংলাদেশ চীনের খপ্পরে পড়ে গেছে। কোনো রাখঢাক না রেখে তাঁরা বিষয়টি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তুলেছেন। মন্ত্রী বলেন, তাঁকে কংগ্রেস সদস্যরা চীন থেকে বিপুল ঋণ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তোমরা চীনের ভেতরে চলে যাচ্ছ।’
মোমেন জানান, দুই কংগ্রেসম্যান বিভিন্ন মানুষের কাছে শুনেছেন, বাংলাদেশ ‘চীনের খপ্পরে’ পড়ে গেছে। আর এটি একটি ভয়ংকর জায়গা, যেখানে অশান্তি চলছে। পুলিশ যখন-তখন লোক ধরে ফেলছে এবং মেরে ফেলছে।
এ বিষয়ে মোমেন কংগ্রেসম্যানদের জানান, বাংলাদেশের মোট ঋণের মাত্র ১ শতাংশের মতো চীন থেকে নেওয়া, যা কোনো বড় বিষয় নয় বলে সরকার মনে করে।
তিন দলের সঙ্গে বৈঠক
চার দিনের সফরে দুই কংগ্রেসম্যান শনিবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান। তাঁরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের গুলশানের বাসভবনে আলাদা বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
বৈঠকে কংগ্রেসম্যানরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে ব্যাখ্যা করেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কেন বাংলাদেশের অবস্থা ও অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সারা পৃথিবীতে যেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কমে যাচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেন গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে, সেটা চায় আমেরিকা।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান, নাহিম রাজ্জাক এবং তামান্না নুসরাত (বুবলী)। কংগ্রেসম্যান এড কেইস আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলকে বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীর কাছে অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আইনের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হয়েছে। আর সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো বিধান রাখা সম্ভব নয়। জাতীয় সংসদের সামনের অধিবেশনে আরেকটা আইন আসবে। তাতে নির্বাচনকালীন সময়ে বিশৃঙ্খলা করা হলে শাস্তির বিধান রাখা হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করা হয়।
বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। তিনি জানান, মার্কিন প্রতিনিধিদের তাঁরা বলেছেন, দেশে এক ব্যক্তির শাসন চলছে। এই অবস্থায় বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। একই সঙ্গে দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলেও উল্লেখ করে।
জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদলে ছিলেন তিন সংসদ সদস্য শেরিফা কাদের, রানা মোহাম্মদ সোহেল ও নাজমা আকতার। রানা মোহাম্মদ সোহেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, কংগ্রেস সদস্যরা বলেছেন, বাংলাদেশে এমন নির্বাচন হওয়া উচিত, যেন বহির্বিশ্ব বলতে পারে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে।
পরিবেশ বুঝতে নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক
মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যান এড কেস ও রিচার্ড ম্যাককরমিক গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। গুলশানে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসভবনে এ বৈঠকে তাঁরা প্রধানত সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ করেন।
বৈঠকে অনেকের মধ্যে ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দুই কংগ্রেসম্যান মূলত বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বুঝতে চেয়েছেন, নির্বাচন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার কোনো সুযোগ আছে কি না। তবে দুই মার্কিন রাজনীতিক নিজেরা কোনো মন্তব্য করেননি।
মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল ১৯-এর আঞ্চলিক পরিচালক ফারুক ফয়সালও ছিলেন বৈঠকে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হলে কী করা দরকার, সে বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। নির্বাচন প্রসঙ্গ তার মধ্যে একটি। তাঁরা জানতে চেয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আগে ছিল কি না?
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন কংগ্রেসম্যানদের জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আগে ছিল। এখন তা সংবিধানে নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, কংগ্রেসম্যানদের এমন প্রশ্নে কয়েকজন জানান, সেটা রাজনৈতিক দলগুলো ভালো বলতে পারবে।
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, বিআইপিএসএস প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ন ম মুনিরুজ্জামান, নারীনেত্রী শিরিন হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান, অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানসহ অন্যরা এ বৈঠকে অংশ নেন।
ছাড় সরকারকেই দিতে হবে
গত শনিবার বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের উল্লেখ করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি অংশ বলছে, দুই রাজনৈতিক পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে তাদের মধ্যে সংলাপের সম্ভাবনাও তেমন দেখা যাচ্ছে না।
কাদের বলেছেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। মন চাইলে নির্বাচনে আসবেন, না হয় যা মন চায় তা করেন।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুঃখজনক ব্যাপার হলো, তেমন কোনো বিষয়ই নেই, যা নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনার টেবিলে বসতে পারে। এই অবস্থায় সংলাপের কোনো সুযোগ দেখি না।’
চলমান সংকট নিরসনে এখনো আলোচনাকেই গুরুত্ব দেওয়া দরকার বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। আর এ ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগী হওয়া দরকার বলে মনে করেন তাঁরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আলোচনার উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকেই আগে আসা দরকার। তাদেরই ছাড় দিতে হবে। তা না হলে দুই দলকে আলোচনায় বসানো সম্ভব নয়। আর এই আলোচনা না হলে বিরোধী দল রাজপথে সমাধান খুঁজবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের চাওয়া পূরণ না হলে ভিসা নীতি ঘোষণার পর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আশঙ্কার কথাও বলছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো। তবে তেমন পরিস্থিতি এড়াতে রাষ্ট্রদূতসহ কূটনীতিকেরা সব পক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন।
গতকাল রোববার ঢাকায় সরকার, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সফররত দুই মার্কিন কংগ্রেসম্যান এবং ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত। এসব বৈঠকে তাঁরা জানতে-বুঝতে চেয়েছেন ভোটের আগে দুই পক্ষের মধ্যৈ সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিরোধীদের প্রধান যে দাবি, তা নিয়ে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের সময় সরকারপ্রধান হিসেবে কে থাকবেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপির মূল বিরোধ তা নিয়ে। আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেই ভোটে যেতে চায়। আর ঠিক উল্টোটি চায় বিএনপি—শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এখন পর্যন্ত দুই দলই অনড় নিজ নিজ অবস্থানে।
দুই কংগ্রেসম্যান—ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের এড কেস ও রিপাবলিকান রিচার্ড ম্যাককরমিক—সফরের প্রথম দিন গতকাল পরপর চারটি বৈঠকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা স্থানীয় বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতার পথ খুঁজছেন। বিষয়টি তাঁরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনায় তুলেছেন।
প্রায় দুই ঘণ্টা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন দুই কংগ্রেসম্যান। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতার পথ আছে কি না জানতে চেয়েছেন কংগ্রেসম্যানরা। তিনি তাঁদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে টেড কেনেডির মতো একজন আছেন, যিনি ঐকমত্যের জন্য মধ্যস্থতা করেছেন। এখানে ঐকমত্যের কোনো দাবি নেই। এখানকার বিরোধী দলের কাছে নির্বাচন নয়, সরকারের পতন গুরুত্বপূর্ণ, যা আলোচনার বিষয় নয়। বিরোধী দল বলছে, সরকারের পতন হবে, তারপর তারা নির্বাচন করবে। এই অবস্থায় সরকারের সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।
দুই মার্কিন রাজনীতিক আগামী নির্বাচন নিয়ে প্রায় অচলাবস্থার মতো পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে কোনো ফর্মুলা দিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে মোমেন ‘না’ বলেন। তিনি মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের বলেন, সরকার সংবিধানের ভিত্তিতে নির্বাচন করবে। সরকার মনে করে, এতে সবার অংশগ্রহণ করা উচিত।
কংগ্রেসম্যানরা নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতা এড়ানোর প্রসঙ্গটিও আলোচনায় আনেন। এ প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, তিনি তাঁদের জানিয়েছেন, শুধু নির্বাচন কমিশন ও সরকার চাইলেই এটা নিশ্চিত করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাকাঠামোর অনেকের মতো এই দুই কংগ্রেসম্যানও মনে করেন, বাংলাদেশ চীনের খপ্পরে পড়ে গেছে। কোনো রাখঢাক না রেখে তাঁরা বিষয়টি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তুলেছেন। মন্ত্রী বলেন, তাঁকে কংগ্রেস সদস্যরা চীন থেকে বিপুল ঋণ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তোমরা চীনের ভেতরে চলে যাচ্ছ।’
মোমেন জানান, দুই কংগ্রেসম্যান বিভিন্ন মানুষের কাছে শুনেছেন, বাংলাদেশ ‘চীনের খপ্পরে’ পড়ে গেছে। আর এটি একটি ভয়ংকর জায়গা, যেখানে অশান্তি চলছে। পুলিশ যখন-তখন লোক ধরে ফেলছে এবং মেরে ফেলছে।
এ বিষয়ে মোমেন কংগ্রেসম্যানদের জানান, বাংলাদেশের মোট ঋণের মাত্র ১ শতাংশের মতো চীন থেকে নেওয়া, যা কোনো বড় বিষয় নয় বলে সরকার মনে করে।
তিন দলের সঙ্গে বৈঠক
চার দিনের সফরে দুই কংগ্রেসম্যান শনিবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান। তাঁরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের গুলশানের বাসভবনে আলাদা বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
বৈঠকে কংগ্রেসম্যানরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে ব্যাখ্যা করেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কেন বাংলাদেশের অবস্থা ও অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সারা পৃথিবীতে যেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কমে যাচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেন গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে, সেটা চায় আমেরিকা।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান, নাহিম রাজ্জাক এবং তামান্না নুসরাত (বুবলী)। কংগ্রেসম্যান এড কেইস আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলকে বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীর কাছে অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আইনের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হয়েছে। আর সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো বিধান রাখা সম্ভব নয়। জাতীয় সংসদের সামনের অধিবেশনে আরেকটা আইন আসবে। তাতে নির্বাচনকালীন সময়ে বিশৃঙ্খলা করা হলে শাস্তির বিধান রাখা হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করা হয়।
বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। তিনি জানান, মার্কিন প্রতিনিধিদের তাঁরা বলেছেন, দেশে এক ব্যক্তির শাসন চলছে। এই অবস্থায় বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। একই সঙ্গে দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলেও উল্লেখ করে।
জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদলে ছিলেন তিন সংসদ সদস্য শেরিফা কাদের, রানা মোহাম্মদ সোহেল ও নাজমা আকতার। রানা মোহাম্মদ সোহেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, কংগ্রেস সদস্যরা বলেছেন, বাংলাদেশে এমন নির্বাচন হওয়া উচিত, যেন বহির্বিশ্ব বলতে পারে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে।
পরিবেশ বুঝতে নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক
মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যান এড কেস ও রিচার্ড ম্যাককরমিক গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। গুলশানে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসভবনে এ বৈঠকে তাঁরা প্রধানত সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ করেন।
বৈঠকে অনেকের মধ্যে ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দুই কংগ্রেসম্যান মূলত বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বুঝতে চেয়েছেন, নির্বাচন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার কোনো সুযোগ আছে কি না। তবে দুই মার্কিন রাজনীতিক নিজেরা কোনো মন্তব্য করেননি।
মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল ১৯-এর আঞ্চলিক পরিচালক ফারুক ফয়সালও ছিলেন বৈঠকে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হলে কী করা দরকার, সে বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। নির্বাচন প্রসঙ্গ তার মধ্যে একটি। তাঁরা জানতে চেয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আগে ছিল কি না?
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন কংগ্রেসম্যানদের জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আগে ছিল। এখন তা সংবিধানে নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, কংগ্রেসম্যানদের এমন প্রশ্নে কয়েকজন জানান, সেটা রাজনৈতিক দলগুলো ভালো বলতে পারবে।
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, বিআইপিএসএস প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ন ম মুনিরুজ্জামান, নারীনেত্রী শিরিন হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান, অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানসহ অন্যরা এ বৈঠকে অংশ নেন।
ছাড় সরকারকেই দিতে হবে
গত শনিবার বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের উল্লেখ করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি অংশ বলছে, দুই রাজনৈতিক পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে তাদের মধ্যে সংলাপের সম্ভাবনাও তেমন দেখা যাচ্ছে না।
কাদের বলেছেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। মন চাইলে নির্বাচনে আসবেন, না হয় যা মন চায় তা করেন।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুঃখজনক ব্যাপার হলো, তেমন কোনো বিষয়ই নেই, যা নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনার টেবিলে বসতে পারে। এই অবস্থায় সংলাপের কোনো সুযোগ দেখি না।’
চলমান সংকট নিরসনে এখনো আলোচনাকেই গুরুত্ব দেওয়া দরকার বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। আর এ ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগী হওয়া দরকার বলে মনে করেন তাঁরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আলোচনার উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকেই আগে আসা দরকার। তাদেরই ছাড় দিতে হবে। তা না হলে দুই দলকে আলোচনায় বসানো সম্ভব নয়। আর এই আলোচনা না হলে বিরোধী দল রাজপথে সমাধান খুঁজবে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের চাওয়া পূরণ না হলে ভিসা নীতি ঘোষণার পর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আশঙ্কার কথাও বলছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
১৪ আগস্ট ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের চাওয়া পূরণ না হলে ভিসা নীতি ঘোষণার পর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আশঙ্কার কথাও বলছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
১৪ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের চাওয়া পূরণ না হলে ভিসা নীতি ঘোষণার পর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আশঙ্কার কথাও বলছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
১৪ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের চাওয়া পূরণ না হলে ভিসা নীতি ঘোষণার পর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আশঙ্কার কথাও বলছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
১৪ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫