Ajker Patrika

পৌর সড়কে ডোবার চেহারা

সাইফুল আলম তুহিন, ত্রিশাল
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২১, ২৩: ১৫
Thumbnail image

ত্রিশাল পৌর শহরের মূল সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে বিকল্প পথে বেশি দূরত্ব পেরিয়ে যাতায়াত করছে অনেক যানবাহন। বছরের পর বছর তৈরি হওয়া গর্তে সড়ক এমন বেহাল। অথচ উপজেলায় পৌর শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এই সড়ক দিয়ে অসংখ্য ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে। পায়ে হেঁটে চলাচলকারীর সংখ্যাও অনেক। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির এমন বেহাল দশায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এবং খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কের পৌর অংশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কের দেড় কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় এক কিলোমিটারে তৈরি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ।

এর মধ্যে কয়েকটি স্থান যেন ছোট ডোবায় পরিণত হয়েছে। সেখানে প্রায়ই ছোট যানবাহন উল্টে আহত হচ্ছেন যাত্রী ও চলাচলকারীরা। ফলে ঝুঁকি এড়াতে বিকল্প পথে প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে পৌর শহরে প্রবেশ করছে ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কের অনেক যানবাহন।

ওই সড়ক দিয়ে বাইসাইকেলে নিয়মিত যাতায়াত করা শিক্ষার্থী ইমরান হেসেন বলেন, ‘আমরা কয়েক বছর ধরে কষ্ট ভোগ করছি। এখন রাস্তার ধারে গোডাউনগুলো থাকায় বায়ুদূষণ চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। খাদ্য কণা মিশ্রিত ধূলিকণা চোখে গিয়ে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সঙ্গে উদ্ভট গন্ধ তো রয়েছেই।’ তিনি দ্রুত নালা ব্যবস্থাসহ রাস্তাটি মেরামতের দাবি জানান।

সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের প্রায় সব জায়গায়ই ছোট-বড় খানাখন্দ রয়েছে। তবে পৌরসভার চরপাড়া অংশের চড়ইতলা মসজিদের নিকটে ও থানার সামনে হতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গর্ত রয়েছে। বৃষ্টি হলেই গর্তগুলোতে হাঁটুসমান পানি জমে থাকছে।

এদিকে পৌর গরু হাঁটা থেকে পোড়াবাড়ী রোডের বেশ কিছু অংশে সড়কের ধারে গড়ে উঠেছে অসংখ্য খাদ্যের গোডাউন ও বিক্রয় কেন্দ্র। এসব গোডাউন ও বিক্রয়কেন্দ্রগুলোয় নিয়মিত খৈল, কোড়া, ভুসি, আটা, ময়দা, মিটবন, ভুট্টা, শুঁটকিসহ নানা ধরনের পণ্য মজুত ও ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। এসব সামগ্রী যানবাহনে ওঠা-নামা করতে গিয়ে রাস্তায় পড়ছে। এতে রাস্তায় জমছে এসব পণ্য মিশ্রিত কাদামাটি। এতে শুকনো মৌসুমে হচ্ছে বায়ুদূষণ। আর বর্ষা মৌসুমে থাকছে কর্দমাক্ত।

পথচারী সুমন বলেন, ‘রাস্তার পাশে কোনো নালা ব্যবস্থা নাই। কোথাও কোথাও থাকলেও সেটি পানি নিষ্কাশনে যথেষ্ট কার্যকরী নয়। পানি জমে থাকায় খানাখন্দগুলো বড় হচ্ছে। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কে হাঁটতে গেলেও কাদাপানি মাতে হয়। এটা আমাদের জন্য যথেষ্ট লজ্জার।’

অটোরিকশাচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে এই এক কিলোমিটারের খানাখন্দের জন্য অনেক কষ্ট পোহাতে হয়। সব সময় ভয়ে থাকি কখন গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হই।’

অপর চালক শিমুল বলেন, ‘আমি দুর্ঘটনার ভয়ে দেড় কিলোমিটার ঘুরে যায়। আমাদের দুঃখ, দুর্দশা দেখার কেউ নেই।’

সড়কের এমন বেহাল দশার বিষয়ে পৌর প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, দুই বছর আগে টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় কাজ করা সম্ভব হইনি। বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দল ত্রিশাল পৌরসভার মূল সড়ক পরিদর্শন করে গেছেন। বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় কিছুদিনের মধ্যেই কাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

ত্রিশাল পৌরসভার প্যানেল মেয়র রাশিদুল হাসান বিপ্লব বলেন, ‘সড়কটি বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করে গেছেন। আগামী জানুয়ারিতে টেন্ডার হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত