হত্যা মামলার আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা

যশোর সদরে হত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার আসামি আফজাল হোসেনকে (২৮) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার রাত ৮টার দিকে শহরের নাজির শংকরপুর চাতালের মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। তাঁকে যশোর সদর হাসপাতালে নেওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, নিহত আফজাল হোসেন তাঁর ছয় দিন বয়সী শিশুর জন্য দুধ কিনতে বেরিয়ে বাড়ি ফেরার পথে খুন হন।

আফজাল হোসেন শহরের নাজির শংকরপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর বাবার নাম সোলাইমান হোসেনের ছেলে। মাস দুই আগে আফজাল হোসেন কারাগার থেকে জামিনে বের হন। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অন্তত ৮টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আফজালের বাবা সোলাইমান হোসেন জানান, শহরের নাজির শংকরপুর চাতালের মোড়ে তাঁর একটি চায়ের দোকান রয়েছে। আফজাল রোববার তাঁর দোকানে ছিলেন। রাত ৮টার দিকে তাঁর ছয় দিনের পুত্র সন্তানের জন্য দুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। চাতালের মোড়ের পুকুর পাড়ে পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা তাঁকে কুপিয়ে জখম করেন। এ সময় দুইটি বোমার শব্দ শোনা যায়। পরে লোকজন আফজালকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগে নাজির শংকরপুর কোল্ড স্টোরেজ মোড়ের সুজন ওরফে ট্যারা সুজনের সঙ্গে আফজালের বিরোধ হয়। আফজালের হাতে মারধরের শিকার হন সুজন। সেই প্রতিশোধ নিতে সুজন ও তাঁর পক্ষের লোকজন আফজালকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। সুজনের বিরুদ্ধেও থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। মাস দুই আগে আফজাল হোসেন একটি মামলায় জেল থেকে জামিনে বের হন। এর পর ট্যারা সুজনের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয় আফজালের।

রমজান নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঘটনার সময় তিনি নাজির শংকরপুর জিরো পয়েন্টে ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনটি ইজিবাইকে করে ১৪-১৫ জন জিরো পয়েন্ট থেকে একটি দক্ষিণ দিকে চাতালের মোড়ের পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আফজাল পৌঁছানো মাত্রই তাঁকে পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মারেন। এ সময় চিৎকার শুনে তিনিসহ অন্যান্যরা এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা পরপর দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে তাঁরা চলে গেলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে রিকশায় করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার সময় ট্যারা সুজনকে দৌড়ে পালাতে দেখেছে ওই এলাকার লোকজন।

যশোর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহান বলেন, ‘আফজালের মাথা ও ঘাড়ের পেছনে ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নাজির শংকরপুর চাতালের মোড়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় আফজাল নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। হত্যাকারীদের আটকে পুলিশি অভিযান চলছে। আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় অন্তত আটটি মামলা রয়েছে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) বেলাল হোসাইন বলেন, ‘নাজির শংকরপুর চাতালের মোড়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় আফজাল হোসেন নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। পুলিশ হত্যার কারণ ও হত্যাকারীদের আটকে অভিযান চালাচ্ছে।’