Ajker Patrika

ভালো ফলনেও মলিন মুখ

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
আপডেট : ১১ মে ২০২২, ১৬: ৫২
ভালো ফলনেও মলিন মুখ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে শ্রমিকের সংকটে মাঠ থেকে ঘরে ধান তুলতে পারছেন না কৃষকেরা। এতে ধানের ভালো ফলন হলেও তাঁদের মুখে হাসি নেই।

বৈরী আবহাওয়ায় অধিকাংশ জমির পাকা ধান মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। নিচু এলাকায় পাকা ধান পানিতে ডুবে গেছে। আকাশে মেঘ দেখলেই শঙ্কিত হয়ে পড়েন কৃষকেরা। তাঁরা জানান, এ অঞ্চলের কৃষিশ্রমিকেরা দক্ষিণাঞ্চলে ধান কাটতে গেছেন। তা ছাড়া উত্তরা ইপিজেড হওয়ার পর অনেক কৃষিশ্রমিক সেখানে কাজ করেন। তাই ন্যায্য মজুরি দিয়েও সময়মতো শ্রমিক পাওয়া যায় না।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় কৃষকের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৭ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। ব্রি-ধান ৮১, ব্রি-ধান ৮৪, ব্রি-ধান ৮৮, ব্রি-ধান ৮৯, ব্রি-ধান ২৮, জিরাশাইলসহ হাইব্রিড জাতের বেশ কিছু ধানের আবাদ করেছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া ২ হেক্টর প্রদর্শনী প্লটের জমিতে প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু ধান-১০০’।

গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার খাতামধুপুর, বোতলাগাড়ী, কামারপুকুর, বাঙ্গালীপুর ও কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পাকা ধান মাঠে পড়ে আছে। শ্রমিকের অভাবে এসব ধান ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক। তাঁরা এদিক-ওদিক ঘুরছেন শ্রমিকের খোঁজে। অনেক কৃষক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করছেন।

উপজেলার কামারপুকুর গ্রামের অসুরখাই গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এক বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াইয়ের জন্য সাড়ে তিন মণ ধানের মজুরিতে শ্রমিকদের সঙ্গে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী তিন বিঘা জমির ধান কেটে কাজ ছেড়ে দিয়েছেন শ্রমিকেরা। দফায় দফায় বৃষ্টিতে জমিতে থাকা ধান নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকেরা আর কাজে আসছেন না।

আব্দুল হান্নান আরও বলেন, আশপাশের এলাকায় শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে দিয়েছেন কৃষকেরা। এতে চুক্তিবদ্ধ অনেক কৃষক চরম বেকায়দায় পড়েছেন। চুক্তিবদ্ধ কৃষকের কাজ না করে অন্যত্র বেশি মজুরিতে কাজ করছেন শ্রমিকেরা।

একই গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, এবারে তিনি ৮ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। সব জমির ধান কাটার উপযুক্ত সময় চলে যাচ্ছে। বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে জমির পাকা ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। কিন্তু শ্রমিক না পাওয়ায় ধান কাটা ও মাড়াই করা সম্ভব হচ্ছে না। একবেলা কাজের জন্য একজন শ্রমিককে ৬০০ টাকা মজুরি দেওয়ার পরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে আর কয়েক দিন পার হলে পাকা ধান জমিতেই নষ্ট হয়ে যাবে। একই এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, গত বছরে প্রতি বিঘা জমিতে ধান কাটা ও মাড়াই বাবদ খরচ হয়েছে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা। কিন্তু এবার খাবার দিয়ে একবেলা কাজের জন্য একজন শ্রমিক মজুরি দাবি করছেন ৬০০ টাকা। এতে প্রতি বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াই করে ঘরে তুলতে খরচ হবে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা। এর পরও ফসল কেটে সময়মতো ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহীনা বেগম বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের হাওর এলাকায় আগে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়। এ সময় এ অঞ্চলের কৃষিশ্রমিকেরা অন্য এলাকায় কাজ করতে যান। তাঁরা ফিরে এলে কয়েক দিনের মধ্যে এ সংকট আর থাকবে না। তবে এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষকেরা কিছুটা চিন্তিত।

কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, এই সময় জমিতে পানি জমে থাকলেও ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

সখীপুরে সন্তানদের সামনেই ছুরিকাঘাতে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী পলাতক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত