এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক-সংক্রান্ত দুই মামলার একটিতে ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ওই মামলার ডেথ রেফারেন্স বা মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন-সংক্রান্ত নথি হাইকোর্টে আসে ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। এখনো শুরু হয়নি শুনানি। রমনার বটমূলে বোমা হামলার এক মামলায়ও আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৪ সালের ২৬ জুন নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে। এই মামলার শুনানিও শুরু হয়নি।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের ৫৪২টি মামলা শুনানির অপেক্ষায় ছিল। ২০১১ থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নিম্ন আদালত থেকে মামলা এসেছে আরও ১ হাজার ৫০১টি। এই সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছে ১ হাজার ১৩৮টি। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানির অপেক্ষায় ছিল ৯০৫টি মামলা। বেশির ভাগ মামলায় একাধিক আসামি থাকায় কয়েক হাজার আসামি এখন কনডেম সেলে। বর্তমানে ২০১৭ সালের ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানি চলছে।
বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টের অনুমোদন নিতে হয়। হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখতে কিংবা খালাসও দিতে পারেন। সংক্ষুব্ধ পক্ষ আপিল বিভাগে যেতে পারে। এরপর রায় পর্যালোচনার আবেদন এবং সবশেষে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনার সুযোগ থাকে।
কারাবিধি অনুযায়ী, বিচারিক আদালতে রায় হওয়ার পর থেকেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা হয়। তবে আপিল বিভাগ সাজা নিশ্চিত করার আগেই আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বিপক্ষে অনেক আইনজ্ঞ। মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগে কনডেম সেলে রাখার বিধানের সংশোধন চান তাঁরা।
অবশ্য এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দায়রা আদালত কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিলে জেল কোড ফলো করতে হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের কনডেম সেলে রাখার একটি বিশেষ কারণ আছে। তাই আপিল শেষ হওয়ার আগে কাউকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না, এ ধরনের অ্যাপ্রোচ ঠিক না।’
কনডেম সেলে রাখা অমানবিক
সংবিধান বিশেষজ্ঞ শাহদীন মালিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক দশক আগে বিচারিক আদালতে এত বেশি মৃত্যুদণ্ড হতো না। মানবিকতার বিচারে যে দেশ যত পিছিয়ে যায়, সে দেশে মৃত্যুদণ্ড তত বাড়ে। উচ্চ আদালতে অনেক মৃত্যুদণ্ড বাতিল হয়, পরিবর্তন হয়। তাই শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে এমন কঠোর সাজা দেওয়া অযৌক্তিক। তদন্ত কর্মকর্তা, প্রসিকিউশন, বিচারিক আদালতসহ সবাইকে আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আপিলে এত মানুষ ছাড়া পাচ্ছে, দণ্ড পরিবর্তন হচ্ছে, তাহলে এত দিন কনডেম সেলে যে নিষ্ঠুর শাস্তির মুখোমুখি হতে হলো, তা সংবিধান পরিপন্থী। কনডেম সেলে রাখা অমানবিক। এই ব্যবস্থা হয়েছে সংবিধানের আগে, ব্রিটিশ আমলে। সংবিধানের আলোকে এটি বদলানো দরকার। চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে কাউকে কনডেম সেলে রাখা উচিত নয়।’
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘বারবার বলে আসছি, কনডেম সেলে রাখা অমানবিক। কনডেম সেলে রাখার ধারণাটা একদম কলোনিয়াল, পৃথিবীর আর কোথাও এমনটি নেই।’ তিনি বলেন, ‘জেল কোড তো সংবিধানের ওপরে নয়। সংবিধানে বলা আছে, কারও সঙ্গেই অমানবিক বা নির্যাতনমূলক আচরণ করা যাবে না। তাই কনডেম সেলে রাখার বিধান উঠিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড-সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।’
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগেই কনডেম সেলে রাখা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত বছরের ৫ এপ্রিল রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। রিট আবেদনকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘অবকাশ শেষ হয়েছে, এখন রুল শুনানির উদ্যোগ নেব।’
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কনডেম সেলে রাখা হয় আইন অনুযায়ী। বিধানটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কনডেম সেলেই রাখতে হবে।’
পুরোনো মামলা নিষ্পত্তিতে জোর
জানা গেছে, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দায়িত্ব নেওয়ার পর পুরোনো মামলা নিষ্পত্তিতে গুরুত্ব দেন। সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর অবকাশে ৯টি বিশেষ বেঞ্চে নিষ্পত্তি হয় ২৯টি ডেথ রেফারেন্স মামলা। মার্চের অবকাশকালীন ১১টি বিশেষ বেঞ্চে ৩২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়।
আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০২২ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তি হয়েছে। প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে সব ধরনের মামলা নিষ্পত্তিতে জোর দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক-সংক্রান্ত দুই মামলার একটিতে ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ওই মামলার ডেথ রেফারেন্স বা মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন-সংক্রান্ত নথি হাইকোর্টে আসে ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। এখনো শুরু হয়নি শুনানি। রমনার বটমূলে বোমা হামলার এক মামলায়ও আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৪ সালের ২৬ জুন নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে। এই মামলার শুনানিও শুরু হয়নি।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের ৫৪২টি মামলা শুনানির অপেক্ষায় ছিল। ২০১১ থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নিম্ন আদালত থেকে মামলা এসেছে আরও ১ হাজার ৫০১টি। এই সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছে ১ হাজার ১৩৮টি। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানির অপেক্ষায় ছিল ৯০৫টি মামলা। বেশির ভাগ মামলায় একাধিক আসামি থাকায় কয়েক হাজার আসামি এখন কনডেম সেলে। বর্তমানে ২০১৭ সালের ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানি চলছে।
বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টের অনুমোদন নিতে হয়। হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখতে কিংবা খালাসও দিতে পারেন। সংক্ষুব্ধ পক্ষ আপিল বিভাগে যেতে পারে। এরপর রায় পর্যালোচনার আবেদন এবং সবশেষে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনার সুযোগ থাকে।
কারাবিধি অনুযায়ী, বিচারিক আদালতে রায় হওয়ার পর থেকেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা হয়। তবে আপিল বিভাগ সাজা নিশ্চিত করার আগেই আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বিপক্ষে অনেক আইনজ্ঞ। মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগে কনডেম সেলে রাখার বিধানের সংশোধন চান তাঁরা।
অবশ্য এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দায়রা আদালত কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিলে জেল কোড ফলো করতে হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের কনডেম সেলে রাখার একটি বিশেষ কারণ আছে। তাই আপিল শেষ হওয়ার আগে কাউকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না, এ ধরনের অ্যাপ্রোচ ঠিক না।’
কনডেম সেলে রাখা অমানবিক
সংবিধান বিশেষজ্ঞ শাহদীন মালিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক দশক আগে বিচারিক আদালতে এত বেশি মৃত্যুদণ্ড হতো না। মানবিকতার বিচারে যে দেশ যত পিছিয়ে যায়, সে দেশে মৃত্যুদণ্ড তত বাড়ে। উচ্চ আদালতে অনেক মৃত্যুদণ্ড বাতিল হয়, পরিবর্তন হয়। তাই শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে এমন কঠোর সাজা দেওয়া অযৌক্তিক। তদন্ত কর্মকর্তা, প্রসিকিউশন, বিচারিক আদালতসহ সবাইকে আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আপিলে এত মানুষ ছাড়া পাচ্ছে, দণ্ড পরিবর্তন হচ্ছে, তাহলে এত দিন কনডেম সেলে যে নিষ্ঠুর শাস্তির মুখোমুখি হতে হলো, তা সংবিধান পরিপন্থী। কনডেম সেলে রাখা অমানবিক। এই ব্যবস্থা হয়েছে সংবিধানের আগে, ব্রিটিশ আমলে। সংবিধানের আলোকে এটি বদলানো দরকার। চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে কাউকে কনডেম সেলে রাখা উচিত নয়।’
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘বারবার বলে আসছি, কনডেম সেলে রাখা অমানবিক। কনডেম সেলে রাখার ধারণাটা একদম কলোনিয়াল, পৃথিবীর আর কোথাও এমনটি নেই।’ তিনি বলেন, ‘জেল কোড তো সংবিধানের ওপরে নয়। সংবিধানে বলা আছে, কারও সঙ্গেই অমানবিক বা নির্যাতনমূলক আচরণ করা যাবে না। তাই কনডেম সেলে রাখার বিধান উঠিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড-সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।’
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগেই কনডেম সেলে রাখা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত বছরের ৫ এপ্রিল রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। রিট আবেদনকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘অবকাশ শেষ হয়েছে, এখন রুল শুনানির উদ্যোগ নেব।’
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কনডেম সেলে রাখা হয় আইন অনুযায়ী। বিধানটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কনডেম সেলেই রাখতে হবে।’
পুরোনো মামলা নিষ্পত্তিতে জোর
জানা গেছে, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দায়িত্ব নেওয়ার পর পুরোনো মামলা নিষ্পত্তিতে গুরুত্ব দেন। সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর অবকাশে ৯টি বিশেষ বেঞ্চে নিষ্পত্তি হয় ২৯টি ডেথ রেফারেন্স মামলা। মার্চের অবকাশকালীন ১১টি বিশেষ বেঞ্চে ৩২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়।
আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০২২ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তি হয়েছে। প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে সব ধরনের মামলা নিষ্পত্তিতে জোর দেওয়া হয়েছে।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪