Ajker Patrika

ফের বাড়ছে তিস্তার পানি দুশ্চিন্তায় হাজারো মানুষ

নীলফামারী ও ডিমলা প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ জুন ২০২২, ১৫: ১৩
Thumbnail image

নীলফামারীর ডিমলায় পাহাড়ি ঢলে ফের বাড়ছে তিস্তার পানি। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার; যা বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ৩১ সেন্টিমিটারে দাঁড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।

এদিকে তিস্তার পানিতে উপজেলার নদীর তীরবর্তী ৬ ইউনিয়নের ১৫টি চরে পানিবন্দী প্রায় ১০ হাজার পরিবার। এ ছাড়া ফসলি জমি, গবাদিপশুসহ ঘরবাড়ির দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পানিবন্দী পরিবারগুলো।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টির কারণে ওপার থেকে ঘোলা পানি আসছে। এখনো জরুরি অবস্থা জারি করা হয়নি। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পানি আরও বৃদ্ধি পাবে এবং সন্ধ্যার পর থেকে পানি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে জেলার ডিমলা, জলঢাকা ও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা নদী অববাহিকার চর গ্রামসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার কিছামত ছাতনাই, ঝাড় শিঙ্গেশ্বর, চর খড়িবাড়ি, পূর্ব খড়িবাড়ি, পশ্চিম খড়িবাড়ি, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, বাইশপুকুর, ঝুনাগাছ চাঁপানীর ছাতুনামা, কেল্লাপাড়া ও ভেন্ডাবাড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের কালীগঞ্জ জিরো পয়েন্ট বেড়িবাঁধে পানি বাঁধ ছুঁই ছুঁই করছে। তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে পানিবন্দী পরিবারগুলো নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। প্রায় ১০টি চর প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী অনেক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বেড়িবাঁধে। পানি বাড়ার ফলে ওই সব এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট।

কিছামত চরের বাসিন্দা আরিফ হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তিস্তার পানি হু হু করে বাড়ছে। চরের মানুষের চোখে ঘুম নেই। বসতভিটে, গবাদিপশু ও ফসলের খেত নিয়ে দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। এর আগে তিস্তার গ্রাসে আটবার তাঁর বাড়ি ভেঙেছে বলে জানান তিনি। শুধু আরিফ নন, ওই এলাকার মজিদ, ইব্রাহিম, আয়নালসহ অনেকেই জানান নির্ঘুম রাত কাটানোর অভিজ্ঞতার কথা।

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধে আশ্রয় নেওয়া সুমি আক্তার বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। পানির শো শো শব্দে ঘুম ভেঙে জেগে দেখি ঘরের মেঝেতে কোমর পানি, আঙিনায় বুক বরাবর। ছয় মাস বয়সী শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে কোনো রকমে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। অল্পের জন্য বেঁচে গেছি। সেই ভয়ে এখনো ঘুমাতে পারছি না।’

উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য বদিউজ্জামান বলেন, ‘ইতিমধ্যে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গত বন্যায় আমার ভিটেমাটি-বাড়িঘর বিলীন হয়েছে তিস্তার করাল গ্রাসে। পানি যতই বৃদ্ধি পাচ্ছে, ততই আমার বুকের কাঁপুনি বাড়ছে।’

টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, ‘উজানের ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে আমার ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দী ছিল। এখনো ১৫০টি পরিবার পানিবন্দী আছে। তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। মাইকিং করে চরাঞ্চলের মানুষজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

রাজধানীর প্রেসক্লাব এলাকায় লিফলেট বিতরণ করল আ.লীগ

‘মধ্যমপন্থী’ দল গড়ছেন অভ্যুত্থানের নেতারা, আলোচনায় ইলিশ প্রতীক

লিবিয়ার সৈকতে ২০ জনের গলিত লাশ, সবাই বাংলাদেশি বলে ধারণা

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, বিচার চাইল বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত