Ajker Patrika

বাজার বন্ধ, সড়ক অবরোধ

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
Thumbnail image

বরগুনার তালতলীতে ঐতিহ্যবাহী ছোটবগী বাজারের ব্যবসায়ীরা সাপ্তাহিক বাজার, দোকানপাট ও পায়রা নদীতে খেয়া চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন তাঁরা। এতে সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষ করে জেলা শহরে যাওয়া-আসা এবং সাপ্তাহিক বাজার করতে বড় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাঁদের।

জানা যায়, ছোটবগী বাজারে বাঁধের ওপরের ১৪৭টি অবৈধ দোকান গত বৃহস্পতিবার গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের অভিযানে। নোটিশ ছাড়াই দোকানগুলো প্রশাসন গুঁড়িয়ে দিয়েছে দাবি করে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ছোটবগী বাজারে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করা হয়। একই দিন বিকেলে পুনর্বাসনের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। পুনর্বাসন দেওয়া না পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নোটিশ না দিয়ে প্রশাসন ১৪৭ ঘর ভেঙে ফেলেছে। প্রতিষ্ঠানের মালামাল সরাতে দেয়নি। এ ঘটনার প্রতিবাদে  গতকাল ব্যবসায়ীরা হাট বসতে দেননি।

পায়রা নদীতে খেয়া চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে রাখা হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।

উল্লেখ্য গতকাল সকালে বরগুনা ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন ভেকু মেশিন দিয়ে ১৪৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

বরগুনা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) মো. মনিরুজ্জামান জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণ করা জমির অবৈধ ঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে ব্যবসায়ীসহ সহস্রাধিক মানুষ বাজারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। সমাবেশে ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন। বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন সিকদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন চুন্নু, ছোটবগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বিশ্বাস, ইউপি সদস্য মো. রুহুল আমিন প্রমুখ।

যাত্রী মো. সুমন মিয়া, শাহ আলম ও জালাল বলেন, ‘জরুরি কাজে বরগুনা যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু ছোটবগীর পায়রা নদীর খেয়া বন্ধ থাকায় যেতে পারছি না।’

অটোরিকশাচালক মো. আলম মিয়া, কৃষক শহীদুল ও ইসমাইল হাওলাদার বলেন, ‘সড়কে অবরোধ ও সাপ্তাহিক হাট না বসায় বাজারসদাই করতে পারিনি।’

ছোটবগী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, নোটিশ ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে দেওয়ায় ব্যবসায়ীদের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে।

যতদিন পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন দেওয়া না হবে, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

ছোটবগী বাজার ইজারাদার মজিবুর রহমান বিশ্বাস বলেন, ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্তে সাপ্তাহিক বাজার বসানো হয়নি। স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য এই বাজার আর কখনই তেমন জমবে না। যদি পুনর্বাসন করা হয় তাহলে কিছুটা সম্ভব।

তালতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সাপ্তাহিক হাট বসেনি, দোকানপাট ও খেয়া চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।’

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সরকারের সাধ্যের মধ্যে রেখে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত