Ajker Patrika

বইয়ের দাম নিয়ে চিন্তায় প্রকাশক

শরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
বইয়ের দাম নিয়ে চিন্তায় প্রকাশক

বাংলাবাজারে গতকাল বুধবার একটি প্রকাশনা সংস্থার দপ্তরে ঢুকে একজন লেখক জানালেন, তাঁর একটি পাণ্ডুলিপি আছে। বইটি প্রকাশ করা যাবে কি না জানতে চান তিনি। প্রকাশক বিনয়ের সঙ্গে জানালেন, এখন আর পাণ্ডুলিপি নেওয়ার সময় নেই। লেখক চলে গেলেন অন্য প্রকাশনীর দিকে। অমর একুশে বইমেলা সামনে রেখে বাংলাবাজারে প্রকাশনা সংস্থাগুলো এখন শেষ দিকের কাজে ব্যস্ত। কোনো কোনো প্রকাশনীতে নতুন বই ছাপা হয়ে আসছে। কোথাও চলছে সম্পাদনার কাজ। 

জনতা প্রকাশনীর কর্মী হৃদয় জানালেন, শিশুতোষ, রাজনৈতিক প্রবন্ধ, উপন্যাস, কবিতা মিলিয়ে ৩০ থেকে ৪০টি নতুন বই আসছে। পাশেই মুক্তপ্রকাশ প্রকাশনী। এর স্বত্বাধিকারী সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবারের বইমেলা নানা দিক থেকে প্রভাবিত হতে পারে। যেমন এবার কাগজের দাম গত দুই বছরের তুলনায় বেশি। সুতরাং ইচ্ছা করলেই আমরা বইয়ের দাম কমাতে পারি না। সব মিলিয়ে এবার একটু চাপ হবে বিক্রিতে।’

বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রয় ও প্রকাশক সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পালের মতে, নির্বাচনের পর রাজনৈতিক অবস্থা কী হয়, তা নিয়ে একটা সংশয় ছিল। সেই সংশয় কেটে গেলেও প্রস্তুতিতে একটু দেরি হয়ে গেছে। তবে অর্থনৈতিক কারণে পাঠকের বই কেনার ইচ্ছা কতটুকু থাকবে, তা নিয়ে সন্দিহান এই প্রকাশক। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক মন্দার একটা প্রভাব এবারের বইমেলায় থাকবে। 

বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মো. ফরিদ আহমেদ ডিসেম্বর থেকেই বইয়ের দাম নিয়ে নানা পোস্ট দিয়ে আসছেন ফেসবুকে। তাঁর মতে, কমিশন দেওয়া নয়, বইয়ের দাম ৩০ শতাংশ কমিয়ে ভালো বই প্রকাশ করলে পাঠক আগ্রহী হবে। 

প্রযুক্তির উন্নয়নে মানুষের পড়ার ধরনেও পরিবর্তন আসছে। বিশ্বজুড়েই ইবুক, ইপাব-এ বই পড়ছে মানুষ। বাপুসের সহসভাপতি শ্যামল পাল মনে করেন, বাংলাদেশে এখনো সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কাগজের বইয়ের গন্ধ আজীবন থেকে যাবে। অনলাইনে পড়ে মানুষ। তবে এর প্রভাব কম। তবে ফরিদ আহমেদ মনে করেন, ইবুকের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ভবিষ্যতে এটা নিয়ে ভাবা যেতে পারে। 

অনুপম প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মিলন কান্তি নাথ মনে করেন, পুরো সৃজনশীল প্রকাশনা শিল্প নিয়ে আসলে কেউ ভাবছে না। 

কয়েকজন প্রকাশক জানান, বাজারের এই ঊর্ধ্বগতির সময়ে পাঠক বই কেনায় কতটুকু আগ্রহী হবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে। 

বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, এবারও ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী মেলা হবে। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বসবে মেলা। ২৩ জানুয়ারি লটারির মাধ্যমে স্টল বরাদ্দ হবে। তারপরই প্রকাশকেরা নানা নকশার স্টল বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত