Ajker Patrika

নাজিরপুরে খেয়াঘাটে রাস্তা নেই, ভরসা কাঠের সাঁকো

আরিফুল হক তারেক, মুলাদী
আপডেট : ১২ মে ২০২২, ১২: ২৭
নাজিরপুরে খেয়াঘাটে রাস্তা নেই, ভরসা কাঠের সাঁকো

মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বাজার ও নৌ থানা সংলগ্ন আড়িয়াল খাঁ নদের খেয়াঘাট থেকে মূল সড়ক পর্যন্ত রাস্তা নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা কাঠ দিয়ে সাঁকো বানিয়ে চলাচল করছেন। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষকে। তাঁরা দ্রুত খেয়াঘাট পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের নৌ-থানা সংলগ্ন আড়িয়াল খাঁ নদীর খেয়াঘাট একটি ব্যস্ততম এলাকা। এই খেয়াঘাট দিয়ে ইউনিয়নের চরনাজিরপুর, চিলমারী, বানীমর্দন, বেয়ালিয়া, সফিপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ নাজিরপুর বাজার ও ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াত করেন। এসব এলাকার শিক্ষার্থীরা খেয়াঘাট পার হয়ে নাজিরপুর ইউনাইটেড কলেজ, নাজিরপুর স্কুলে যাওয়া আসা করে।

নাজিরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মুলাদী উপজেলা সদরে আসতেও এই খেয়া পার হতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ এই খেয়াঘাটের নদীর পাড় থেকে মূল সড়ক পর্যন্ত কোনো সংযোগ সড়ক নেই। পরে ইজারাদার স্থানীয়দের সহযোগিতায় মূল সড়ক থেকে নদী পাড় পর্যন্ত কাঠ-বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে দেন।

সাঁকোটি পুরোনো হয়ে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কয়েক স্থানে কাঠ ভেঙে যাওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে কাঠে শেওলা জমে পিচ্ছিল হয়ে গেলে যাতায়াতের আরও বেশি শঙ্কা দেখা দেয়। বিশেষ করে মোটরসাইকেল যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন বেশি। মোটরসাইকেল পারাপারের সময় কাঠের সেতুতে পিছলে পড়ার উপক্রম হয়।

চরকালেখান আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. মোশারফ হোসেন বলেন, খেয়াঘাটে একসময় ড্রাম ও লোহার পাটাতন দিয়ে ভাসমান সেতু করা হয়েছিল। এতে চলাচল অনেক সহজ ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেই ড্রাম ও পাটাতনগুলো খুলে গেলে আর সংস্কার করা হয়নি। বর্তমানে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সেতু তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। নদীর পানি বেড়ে গেছে সেতুটি নিমজ্জিত হয়ে পড়ে এবং চলাচলে অসুবিধা হয়। খেয়াঘাট পর্যন্ত পাকা সড়ক করা হলে লেগুনা চলাচল করতে পারবে এবং দুর্ভোগ নিরসন হবে।

মোটরসাইকেল চালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নাজিরপুর বাজার ও নৌ থানা সংলগ্ন খেয়াঘাটটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন এই খেয়া দিয়ে কয়েক হাজার যাত্রী পার হন। কিন্তু নদীর পার থেকে সড়ক না থাকায় কাঠে দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ট্রলারে মোটরসাইকেল পার হতে অনেক কষ্ট হয়। কাঠের সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল ঠেলে ট্রলারে ওঠাতে হয়।

নাজিরপুর ইউনাইটেড কলেজের শিক্ষার্থী রাহিমা আক্তার জানান, খেয়াঘাটে সড়ক না থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। খেয়া পারাপারে ট্রলারে ওঠার জন্য কাঠের সেতুটি বর্ষায় শেওলা জমে পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এতে যাত্রীদের পড়ে যাওয়ার ভয় থাকেন।

নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাদল খান জানান, সড়ক নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়ার মধ্যে অর্থ ইউনিয়ন পরিষদে নেই। তবে নদীর পাড় থেকে মূল সড়ক পর্যন্ত পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. তানজিলুর রহমান বলেন, সড়ক নির্মাণের চাহিদা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত