Ajker Patrika

দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি

জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি

শৈশব থেকেই দেশবন্ধুর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ। হাটখোলার ইত্তেফাক অফিসটা তো তখন ছিল আমাদের ঘরবাড়ি। ‌দিনরাতের বেশির ভাগ সময় ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেনের কাটত এই অফিসে। আর আমরা যখন তাঁর সঙ্গে অফিসে যেতাম, তখন সবচেয়ে লোভনীয় বিষয় ছিল খাওয়াদাওয়া। দেশবন্ধুর পরোটা-ভাজি আর হালুয়া তখন থেকেই আমাদের মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল।

পাকিস্তান আমলে ইত্তেফাকের পিয়ন বশির মামা কিংবা আনসার মামার কাঁধে চড়ে দেশবন্ধুতে যাওয়ার দৃশ্য এখনো স্মৃতিতে ভাসে।তারপর কেটে গেছে কতগুলো বছর। ৫০ পেরিয়েছে দেশবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎকারের। দোকানটা এই দীর্ঘ সময়ে খুব একটা পরিবর্তিত হয়েছে, এ কথা বলা যাবে না। তেমনি রেস্তোরাঁর পরোটা আর ভাজিও রয়েছে আগের মতন। না দোকান, না দোকানের খাবার, কোনোটাই পরিবর্তিত হয়নি! দোকানটা আরেকটু ঝকঝকে-তকতকে হলে ভালো হতো। কিন্তু খাবার যা আছে, সেটা যেন পরিবর্তিত হয়ে না যায়!

সে যা-ই হোক, এখনো যখন মতিঝিল কিংবা প্রেসক্লাব অঞ্চলে যাওয়া হয়, তখন কী এক অদ্ভুত মায়ার টানে কারও ইন্দ্রজালে ধরা পড়ে যেন চলে আসি দেশবন্ধুর সামনে। উদ্দেশ্য সেই একটাই—পরোটা আর সবজি ভাজি। এর সবজিটার জুড়ি মেলা ভার। পাঁচফোড়ন দেওয়া তাজা সবজির স্বাদ গরম পরোটা যেন খানিক বাড়িয়েই দেয়। তিন আঙুলে পরোটা ছিঁড়ে তাতে কায়দা করে একটুখানি সবজি নিয়ে মুখে দিলে জিবে দারুণ এক আনন্দ হয়।

বলে রাখা ভালো, শুধু পরোটা-ভাজিই নয়, সে দোকানে নানা ধরনের মিষ্টি আছে, ভাত-মাছ-তরকারিও রয়েছে। কিন্তু দিনরাত সব সময় গরম-গরম পরোটা এসে ভরে দিচ্ছে ঝুড়িটা আর বছরের পর বছর নিজের একই চেহারা বজায় রাখা ভাজিটা মানুষের মন হরণ করে নিচ্ছে, এটাই বুঝি দেশবন্ধুর পরিচিতি। পরোটা-ভাজির দামটাও বলে রাখা ভালো। পরোটা ১০ টাকা করে আর ভাজি ২৫ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত