Ajker Patrika

নামাজ শেষে ফেরা হলো না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১৮: ৩৮
নামাজ শেষে ফেরা হলো না

দিনাজপুরের গম গবেষণা ইনস্টিটিউটে প্রায় ১৫ বছর কাজ করেছেন আনোয়ার শহীদ। সংস্থার মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে প্রায় ১২ বছর আগে অবসরে যান তিনি। সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল গাজীপুরের জয়দেবপুরে। বিয়ে করেছিলেন ১৯৮২ সালে। কিন্তু সংসার টেকেনি। এরপর আর বিয়েও করেননি। স্ত্রী-সন্তানহীন একাকী জীবন কাটিয়েছেন। অবসরের পর রাজধানীর কল্যাণপুরে ছোটবোনের বাসায় থাকতেন। বই-পত্রিকা পড়েই কাটত সময়। চেনাজানা মহলে পরোপকারী হিসেবে পরিচিতি ছিল তাঁর। এমন নির্বিরোধী একজন মানুষ এভাবে খুন হতে পারেন, তা এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না আনোয়ার শহীদের স্বজনেরা। কেন তাঁকে খুন করা হয়েছে, সে ব্যাপারেও কোনো ধারণা নেই তাঁদের।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্যামলীর হলি লেন গলিতে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক যুবকের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন ৭২ বছর বয়সী শহীদ। সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত সাড়ে ১১টায় তিনি মারা যান। ঘটনাস্থলের পাশের একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছে শহীদের ওপর হামলার ঘটনার চিত্র। কিন্তু এখনো হামলাকারী যুবককে শনাক্ত করা যায়নি।

গতকাল এ নিয়ে কথা হয় আনোয়ার শহীদের বোনের মেয়ে মুতমা ইন্না নাহিদের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে তিনি জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তাঁর মামা নামাজ পড়তে বাসা থেকে বের হন। যাওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, দিনাজপুর থেকে জাকির এসেছে দেখা করতে। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে হানিফ কাউন্টারে যাবেন বলে জানিয়েছিলেন শহীদ। এরপর আর বাসায় ফেরা হয়নি তাঁর।

কে এই জাকির? জানতে চাইলে মুতমা বলেন, জাকিরের বিষয়ে বিস্তারিত জানি না। মামা সর্বশেষ যেখানে চাকরি করেছেন, সেখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির। প্রায়ই তিনি মামার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। অনেক দিন আগে একবার বাসায়ও এসেছিলেন। তিনি ঢাকায় এলে মামার সঙ্গে দেখা করতেন।

আনোয়ার শহীদ হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে আদাবর থানায় মামলা করেছেন তাঁর ছোটবোন ফোরদৌস সুলতানা। মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আদাবর থানার ওসি (তদন্ত) সেলিম হোসেন বলেন, তদন্ত চলছে। আশা করছি, তিন-চার দিনের মধ্যে ঘাতক গ্রেপ্তার হবে। যে জাকিরের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শহীদ খুন হয়েছেন, সেই জাকির সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, জড়িত থাকলে জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হবে। সিসিটিভি ফুটেজে যে যুবককে দেখা গেছে, তাঁকে শনাক্ত করা গেছে কি না এমন প্রশ্নে জবাবে সেলিম হোসেন বলেন, ফুটেজ আমরা পাইনি। শুনেছি র‍্যাব পেয়েছে। তারাও এ নিয়ে কাজ করছে।

দাফন সম্পন্ন: গতকাল শনিবার সকালে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে আনোয়ার শহীদকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত