Ajker Patrika

ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের স্থায়ী মেরামত বর্ষার পর

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২২, ১০: ২৫
ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের স্থায়ী  মেরামত বর্ষার পর

বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে আর দৃশ্যমান হচ্ছে সড়ক-মহাসড়কের ক্ষত। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ফেনী ও কুড়িগ্রামের মোট ৪১টি সড়ক-মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বেহাল হয়ে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। পানি নেমে যাওয়ার পরও অনেক সড়কে হেঁটে যাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ড্রোনের সাহায্যে সার্ভে করে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হবে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের (সওজ) কর্মকর্তারা। তবে স্থায়ী মেরামতকাজ শুরু হবে বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পরপরই।

সওজ সূত্রে জানা গেছে, সওজ অধিদপ্তর গত বৃহস্পতিবার দুটি পরিদর্শন কমিটি গঠন করেছে। একটি টিম যাবে সিলেটে, আরেকটি যাবে সুনামগঞ্জে। টিমের সদস্যরা গিয়ে দেখবেন পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের অবস্থা কেমন। মেরামতকাজ কতটুকু করতে হবে। কবে নাগাদ কাজ করা যাবে। কোন প্রক্রিয়ায় কাজ করা হবে। কত টাকা লাগবে। এরপর কমিটি এসব বিষয়ে সুপারিশ দেবে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়কেরও একটি মনিটরিং টিম আছে। এর সদস্যরা সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করবেন।

জানতে চাইলে সওজ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনেক সড়ক থেকে এখনো পানি নেমে যায়নি। পুরোপুরি পানি নেমে যাওয়ার পর আমরা দেখব কী ধরনের মেরামত লাগবে। সে অনুযায়ী কাজ করা হবে। প্রাথমিক অবস্থায় যেগুলোর পানি নেমে গেছে এবং কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। তবে স্থায়ী মেরামতকাজ শুরু হবে বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পর।’

সওজ অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের বন্যায় সওজ অধিদপ্তরের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ফেনী ও কুড়িগ্রামের মোট ৪১টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৭২ দশমিক ২১ কিলোমিটার। এর মধ্যে একটি জাতীয় মহাসড়ক, সাতটি আঞ্চলিক মহাসড়ক, ৩৩টি জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এসব সড়ক-মহাসড়কে ইট, বালু, খোয়া, বালুভর্তি সিনথেটিক ব্যাগ, জিও ব্যাগ ফেলে আপাতত যান চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। এটি রুটিন মেরামত।

সওজ অধিদপ্তরের মেইনটেন্যান্স সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জিকরুল হাসান বলেন, ‘সড়কে পানি ওঠার পর বোঝা যায় না কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে হাঁটা যায় না। ফলে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলো দেখার জন্য ড্রোনের মাধ্যমে সার্ভে করা হবে। ড্রোন দিয়ে দেখে একটা সঠিক অ্যাসেসমেন্ট করে দেখব কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এবং কী ধরনের কাজ করতে হবে। তারপর সড়কের স্থায়ী মেরামত শুরু করব।’

এদিকে ড্রোনের পাশাপাশি সরাসরি সার্ভেও করা হবে। এর জন্য প্রয়োজনে জনবল আউটসোর্সিং করতে হলে তা-ও করবে সওজ।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ‘বন্যায় যেসব সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো মেরামত শুরুর জন্য আমরা দ্রুতই প্রোগ্রাম হাতে নিচ্ছি। মাঠ পর্যায়ের রিপোর্ট পেলে কাজ শুরু হবে।’

এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, আগামী আগস্ট মাসে ভারী বৃষ্টির আভাস রয়েছে। তাই এই সময়ে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ভারতের মেঘলায়ে কী পরিমাণ বৃষ্টি হবে, সেটার ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশে আরেক দফা বন্যাটা কেমন হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত