Ajker Patrika

সেতুর কাজ ৯০ শতাংশ শেষ, সড়ক শুরুই হয়নি

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
সেতুর কাজ ৯০ শতাংশ শেষ, সড়ক শুরুই হয়নি

কুষ্টিয়ার কুমারখালী শহর ও যদুবয়রার লালন বাজারকে সংযুক্ত করতে গড়াই নদের ওপর ৬৫০ মিটার পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। মোট ১৩টি ডেস্ক স্লিপারের মধ্যে বর্তমানে ১০ নম্বর স্লিপার ঢালাইয়ের কাজ চলছে। তবে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হয়নি এখনো।

এতে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, সেতু ও সড়ক একসঙ্গে হওয়ার কথা; কিন্তু সেতুর কাজ শেষের পথে অথচ সড়কের কাজ শুরু হলো না আজও। সড়ক নির্মাণ না হলে সেতু কাজে আসবে না। ভোগান্তি থেকেই যাবে। তবে উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন, ‘সেতু নির্মাণকাজ শেষ হলেই সড়কের কাজ শুরু করা হবে। চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর সেতুটি উন্মুক্ত করা হবে আনুষ্ঠানিকভাবে।’

এলাকাবাসী জানান, প্রায় ছয় লাখ মানুষের বসবাস এই উপজেলায়। পদ্মা ও গড়াই দ্বারা ত্রিবিভক্ত এই উপজেলায় রয়েছে একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন। পদ্মা নদীর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে রয়েছে একটিমাত্র ইউনিয়ন চর সাদিপুর। এখানে প্রায় ২২ হাজার মানুষের বসবাস।

আর গড়াই নদের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব-পশ্চিমাঞ্চলে রয়েছে পাঁচটি ইউনিয়ন; কিন্তু গড়াই নদের ওপর সেতু না থাকায় দুই পারের মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেক দেরিতে হলেও গড়াই নদের ওপর  সেতু নির্মিত হচ্ছে। এতে ভোগান্তি ও সময় কম লাগবে। পাওয়া যাবে দ্রুত সেবা।

উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গড়াই নদের ওপর চুক্তিমূল্য প্রায় ৮৯ কোটি ৯১ লাখ ৩৫ হাজার ৫৯১ টাকা ব্যয়ে ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের পিসি গার্ডার ব্রিজ (সেতু) নির্মাণের কাজ চলছে। সেতু নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হলেন নেশনটেক কমিউনিকেশন লিমিটেড ও রানা বিল্ডার্স লিমিটেড (যৌথভাবে)।

২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল সেতুর কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি। ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর কাজের নির্ধারিত সময় শেষ হয়। এরপর কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। সেতুর কাজ প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। জমির জটিলতায় সংযোগ সড়কের কাজ শুরু হয়নি।

কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘আমরা সারা বছরই বিভিন্ন সবজি জাতীয় ফসল বিক্রির জন্য নদী পার হয়ে পৌরবাজারে যাই। সাধারণত বাইসাইকেল ও ভ্যানে এসব সবজি নেওয়া হয়। বর্ষা মৌসুমে ভরা নদীতে নৌকায় ওঠানামা খুব কষ্ট হয়। সেতু থাকলে এত কষ্ট হতো না।’

পান্টি বাজারের ব্যবসায়ী মানিক হোসেন বলেন, ‘নৌকা পারাপারের সময় সবাই সেতুর দিকে তাকিয়ে থাকে। সেতুর কাজ প্রায় শেষ, কিন্তু রাস্তার কাজ এখনো শুরু হয়নি। সে জন্য সেতু হলেও রাস্তার অভাবে চলাচল বন্ধ থাকবে হয়তো।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার প্রকৌশল আশিক আলী বলেন, ‘সেতুর কাজ প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। প্রায় ৫৫০ মিটার সংযোগ সড়ক হবে; কিন্তু সড়ক নির্মাণের স্থানটি এখনো আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। সে জন্য সড়কের কাজ শুরু হয়নি। জায়গা নির্ধারিত হলে দেড়-দুই মাসেই সড়ক নির্মাণ সম্ভব হবে।’

উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবদুর রহিম বলেন, সেতুর কাজ প্রায় শেষ। সড়ক নির্মাণের স্থানে জনগণের বসতি রয়েছে। জমি অধিগ্রহণ 
কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। অচিরেই সড়কের কাজ শুরু হবে।

চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর সেতুটি উদ্বোধন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত