Ajker Patrika

অভিযোগ-বিতর্কেই বছর পার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯: ৩৫
অভিযোগ-বিতর্কেই বছর পার

দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন মহলে বছরজুড়ে সমালোচনা ছিল। বিরোধী শিবিরগুলোর অভিযোগ পাত্তা দেয়নি সরকার। কিন্তু গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তা।

বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের অভিযোগের উদ্ধৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, র‍্যাব এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম এবং নির্যাতনের জন্য দায়ী। আর র‍্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের তথ্য বলছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে র‍্যাবের সঙ্গে এক হাজার ২৩টি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৩১০ জন।

২০২০ সালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে সার্বিক কোনো উন্নতি হয়নি বলে গত জুলাইয়ে বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যে। দেশটির ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতিতে মূল উদ্বেগের জায়গায় হিসেবে দেখানো হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা, সরকারের করোনা মোকাবিলার কৌশল নিয়ে সমালোচনা নিয়ন্ত্রণ এবং অব্যাহত নারী ও শিশু নির্যাতনকে।

বেসামরিক নাগরিক, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর দমন, নিপীড়ন ও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক মহাপরিচালক (বর্তমানে আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ এই বাহিনীর সাতজনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের দাবি, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এদিকে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেননি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। তবে বর্তমান কমিশনের দুই বছরের কার্যক্রম তুলে ধরে গত ১৯ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ হিসেবে পারিবারিক, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়কে দায়ী করেছেন তিনি। নাছিমা বেগমের মতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন অভিযানে যায়, তখন কমিশনের গাইডলাইন অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এটা অনুসরণ করলে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

তবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি বলে মনে করছেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দেশের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু মৌলিক অধিকারের প্রশ্নে দেশ এখনো পিছিয়ে আছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতাও যথেষ্ট সংকুচিত। এখনো কিছু কিছু অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার রাষ্ট্রের দয়ার ওপর নির্ভরশীল, যা অধিকারে রূপান্তরিত হয়নি। ৫০ বছরের এগুলো অধিকারের জায়গায় রূপান্তরিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই জায়গায় আমরা যেতে পারিনি।’

র‍্যাব কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় আনন্দিত হওয়া কিংবা উদ্বেগের কিছু নেই উল্লেখ করে অধ্যাপক মিজানুর আরও বলেন, ‘তারাই (যুক্তরাষ্ট্র) অস্ত্র বিক্রি করে এই বাহিনীকে সমরাস্ত্রে সজ্জিত করেছে। যখন চাপ সৃষ্টির প্রয়োজন হয় তখন নানা রকম টালবাহানা করে। এটা তারা করতে পারে কারণ তারা শক্তিশালী রাষ্ট্র। মিয়ানমার লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে দেশ থেকে বের করে দিলেও সেটা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত