Ajker Patrika

ডিলারদের অনিয়ম থামছে না

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
ডিলারদের অনিয়ম থামছে না

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে জরিমানা ও কারাদণ্ড করেও থামানো যাচ্ছে না ডিলারদের অনিয়ম। দোকানে দোকানে ঘুরে সার পাচ্ছেন না কৃষকেরা। ডিলাররা বলছেন, চাহিদা অনুয়ায়ী সার বরাদ্দ না পাওয়ায় সংকট তৈরি হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বালিয়াডাঙ্গী বাজার, ডাঙ্গী বাজার ও কালমেঘ বাজারে ডিলারদের উত্তোলন করে আনা সারের বিক্রি কার্যক্রম তদারকি করতে আসেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) যোবায়ের হোসেনসহ উপজেলা কৃষি বিভাগ ও উপজেলা কৃষক লীগের নেতারা। এ সময় সার বিক্রির অনিয়মের অভিযোগে বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের সারের ডিলার মেসার্স আব্দুস সালাম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আব্দুস সালামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ইউএনও বলেন, ‘সার বিক্রিতে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় আব্দুস সালামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরবর্তী সময় অনিয়ম পাওয়া গেলে অনুমতিপত্র বাতিল করে দেওয়া হবে।’

গত সপ্তাহে সারের সংকট নিরসনে বাজারে অভিযান পরিচালনা করে লাহিড়ী বাজারের সার ব্যবসায়ী মেসার্স ইউকেফেন্ডস ট্রেডার্সের মালিক তৌফিকুর রহমান উজ্জলকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনুকূল বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী অজিত কুমার রায়কে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ইউএনও।

এদিকে আগস্ট মাসে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক শেখ সাদী বালিয়াডাঙ্গী বাজারে ২ বার অভিযান পরিচালনা করে ৪ ব্যবসায়ীকে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

ডিলারদের অভিযোগ, চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না পাওয়ায় বাজার অস্থিতিশীল ও সার সংকট তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের গুদাম থেকে সার তুলে দোকান পর্যন্ত নিয়ে আসতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হচ্ছে। বারবার বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলার পরেও বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকা লোকজন ডিলারদের জরিমানা করছেন।

এদিকে তিনজন ডিলারের দোকানে ঘুরে সার না পাননি উপজেলা কালমেঘ এলাকার কৃষক আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, সার দেওয়া শুরু হতে না-হতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তিনজন ডিলারের দোকানে সিরিয়াল দিয়েও সার পাইনি। দু-এক দিনের মধ্যে খেতে সার দিতে না পারলে ধানের ফলন অর্ধেকের কম হবে।

উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মজিবর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিলাররা ইতিপূর্বে বরাদ্দ পাওয়া সার কৃষকদের কাছে বিক্রি করলে এ সংকট তৈরি হতো না। মৌসুমের সময় সারের চাহিদা একটু বেশি থাকে। অনেক ডিলারের গুদাম নেই, তাঁরা সার উত্তোলন করার পর অতিরিক্ত টাকায় খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন। এসব বন্ধ না হওয়ার কারণে কৃষকেরা সারের সংকটে পড়েন। এসব অনিয়ম দ্রুত বন্ধ করতে হবে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, ‘ডিলারদের গুদাম কিংবা দোকানে উত্তোলন করা সার আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই সার কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। ১৫ দিন ধরে এ কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলছে। তবে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ একটু কম।’

ইউএনও যোবায়ের হোসেন বলেন, ‘সারের সংকট দূর করতে উপজেলা প্রশাসন দিন-রাত পরিশ্রম করছে। অসাধু ডিলারদের জেল-জরিমানা ও অনুমতিপত্র বাতিল করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আশা করছি এ সংকট দূর হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত