মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম
দিগন্তজোড়া সরষে ফুল আর মায়াবী সবুজে ঘেরা বংশী নদী। যত দূর চোখ যায় শুধু হলুদে রাঙানো জমিন। সরিষা ফুলের ঘ্রাণে মন করবে আনচান। শান্ত বংশী নদীর রূপে হবেন মুগ্ধ। পুরো অগ্রহায়ণ, পৌষ আর মাঘ মাসের অর্ধেকজুড়ে দেশের অনেক জায়গার মাঠ এমন হলুদবর্ণ ধারণ করে।
তবে বংশীপারের এ অঞ্চল যেন একটু অন্য রকম আবেশের, ভিন্ন রকম সৌন্দর্যের। এখানকার জমি যেন সরষের জন্যই সৃষ্টি।
চার বন্ধু হুট করেই গিয়েছিলাম ঢাকার ধামরাই উপজেলার ফোর্ড নগরের রূপনগর গ্রামে। সাভার উপজেলার নামা বাজার এলাকা থেকে বংশী নদীর ওপর নতুন বানানো ফোর্ড নগর সেতু পার হয়ে চলে যাই সুনসান নিরিবিলি পিচঢালা সরু পথ ধরে আরও সামনে। পড়ন্ত বিকেলে পাখির কুহু কুহু ডাক, সবজিখেত, জমির পর জমিতে সরষে ফুলের ঘ্রাণ শুঁকতে শুঁকতে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যেতে থাকি। একসময় মনে হয় যেন হলুদের রাজ্যে পথ ভুল করে এসে পড়েছি।
হলুদের রাজ্যে দেখা হলো মধু সংগ্রহের দৃশ্য। জানা গেল, একটি রানি মৌমাছি প্রায় ৫০ হাজার মৌমাছির নেতৃত্ব দিয়ে থাকে।
বেশ কয়েক প্রকার সরিষার মধ্যে বাংলাদেশের চাষিরা সিতি, মাঘী ও চৈতালি উল্লেখযোগ্য এই তিন জাতের সরিষার চাষ করেন বেশি। সরিষার খেত দেখতে দেখতে চলে যাই কাজিয়াল কণ্ডু গ্রামে। ব্রিজের ওপর থেকে দেখা বংশী নদীর সৌন্দর্য বিমোহিত করার মতো। নদীপারের কুয়াশা এক অন্য রকম ভালো লাগা জানান দেয়। শান্ত-নিরিবিলি কাজিয়াল কণ্ডু গ্রামের বুক চিরে নতুন বানানো ইট-সুরকি বিছানো সড়ক চলে গেছে ধামরাই শহরের দিকে। এই পথের দুপাশে সৃজন করা হয়েছে বনায়ন। চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশ। সড়কের পাশেই বিশাল বিল। জেলেরা মাছ ধরছেন। আপন মনে আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে পরিযায়ী পাখির ঝাঁক।
সেসব মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে দেখতেই ছুটি আড়ালিয়া গ্রামের দিকে। পড়ন্ত বিকেলে গ্রামের পিচঢালা সরু পথে মোটরবাইকে চড়ে বেড়ানোর মজাই আলাদা। বাইকার আর সাইক্লিস্টদের রাইডের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা এই পথগুলো। অল্প সময়ের মধ্যেই পৌঁছে যাই আড়ালিয়া। এ পাশটায় ধলেশ্বরী সরু খালের মতো হয়ে গেছে। তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখনো অপরূপ। সবুজ ফসলের খেত, বাঁশবাগানে নানান পাখির কিচিরমিচির, গ্রামের মানুষের অনুসন্ধানী জিজ্ঞাসা।
পুরো একটা বিকেল নানান পাখির কলতান শুনে, নজরকাড়া সরষে ফুলে ঘেরা গ্রামগুলোয় ঘুরে বেড়াই। সূর্যাস্ত শেষে গরম-গরম ডালপুরি আর গরুর খাঁটি দুধের চা- সব মিলিয়ে এক অসাধারণ সময় উড়ে যায় কখন, টেরই পাই না। বংশী নদীর সৌন্দর্যও কম যায় না। চাইলেই ডিঙি নৌকায় চড়ে বংশীর বুকে ভেসে বেড়ানো যায়। সব মিলিয়ে মাত্র কয়েক ঘণ্টার বেড়ানো হতে পারে জীবনের অন্যতম সেরা সময়। জীবন-মন রাঙাতে আপনিও চলে যান রবিশস্যের সরষেখেতে। ইচ্ছে করলে বাড়ির সবাইকে নিয়েও ঘুরে আসতে পারেন।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার বঙ্গবাজার, মতিঝিল, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী এবং সদরঘাট থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাস সার্ভিস রয়েছে সাভার বাজার স্ট্যান্ড যাওয়ার জন্য। সেখান থেকে অটোরিকশা বা রিকশায় ফোর্ড নগর। স্থানীয় বাসিন্দার ফোর্ড নগরকে ফুট নগর নামে বেশি চেনেন। ঢাকা থেকে সাভার জনপ্রতি ৩৫ থেকে ৭০ টাকা বাস ভাড়া। সাভার স্ট্যান্ড থেকে নামা বাজার পর্যন্ত ৫ থেকে ২০ টাকা। আবার সরাসরি চলে যাওয়া যায় বড় কুশিয়ারা, ভাড়া ৫০ টাকা।
সতর্কতা
সরিষা খুবই নাজুক উদ্ভিদ। তাই সরিষাখেতে না গিয়ে দূর থেকে বা রাস্তা থেকে দেখুন।
লেখক: চিফ অর্গানাইজার, দে-ছুট ভ্রমণ সংঘ
দিগন্তজোড়া সরষে ফুল আর মায়াবী সবুজে ঘেরা বংশী নদী। যত দূর চোখ যায় শুধু হলুদে রাঙানো জমিন। সরিষা ফুলের ঘ্রাণে মন করবে আনচান। শান্ত বংশী নদীর রূপে হবেন মুগ্ধ। পুরো অগ্রহায়ণ, পৌষ আর মাঘ মাসের অর্ধেকজুড়ে দেশের অনেক জায়গার মাঠ এমন হলুদবর্ণ ধারণ করে।
তবে বংশীপারের এ অঞ্চল যেন একটু অন্য রকম আবেশের, ভিন্ন রকম সৌন্দর্যের। এখানকার জমি যেন সরষের জন্যই সৃষ্টি।
চার বন্ধু হুট করেই গিয়েছিলাম ঢাকার ধামরাই উপজেলার ফোর্ড নগরের রূপনগর গ্রামে। সাভার উপজেলার নামা বাজার এলাকা থেকে বংশী নদীর ওপর নতুন বানানো ফোর্ড নগর সেতু পার হয়ে চলে যাই সুনসান নিরিবিলি পিচঢালা সরু পথ ধরে আরও সামনে। পড়ন্ত বিকেলে পাখির কুহু কুহু ডাক, সবজিখেত, জমির পর জমিতে সরষে ফুলের ঘ্রাণ শুঁকতে শুঁকতে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যেতে থাকি। একসময় মনে হয় যেন হলুদের রাজ্যে পথ ভুল করে এসে পড়েছি।
হলুদের রাজ্যে দেখা হলো মধু সংগ্রহের দৃশ্য। জানা গেল, একটি রানি মৌমাছি প্রায় ৫০ হাজার মৌমাছির নেতৃত্ব দিয়ে থাকে।
বেশ কয়েক প্রকার সরিষার মধ্যে বাংলাদেশের চাষিরা সিতি, মাঘী ও চৈতালি উল্লেখযোগ্য এই তিন জাতের সরিষার চাষ করেন বেশি। সরিষার খেত দেখতে দেখতে চলে যাই কাজিয়াল কণ্ডু গ্রামে। ব্রিজের ওপর থেকে দেখা বংশী নদীর সৌন্দর্য বিমোহিত করার মতো। নদীপারের কুয়াশা এক অন্য রকম ভালো লাগা জানান দেয়। শান্ত-নিরিবিলি কাজিয়াল কণ্ডু গ্রামের বুক চিরে নতুন বানানো ইট-সুরকি বিছানো সড়ক চলে গেছে ধামরাই শহরের দিকে। এই পথের দুপাশে সৃজন করা হয়েছে বনায়ন। চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশ। সড়কের পাশেই বিশাল বিল। জেলেরা মাছ ধরছেন। আপন মনে আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে পরিযায়ী পাখির ঝাঁক।
সেসব মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে দেখতেই ছুটি আড়ালিয়া গ্রামের দিকে। পড়ন্ত বিকেলে গ্রামের পিচঢালা সরু পথে মোটরবাইকে চড়ে বেড়ানোর মজাই আলাদা। বাইকার আর সাইক্লিস্টদের রাইডের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা এই পথগুলো। অল্প সময়ের মধ্যেই পৌঁছে যাই আড়ালিয়া। এ পাশটায় ধলেশ্বরী সরু খালের মতো হয়ে গেছে। তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখনো অপরূপ। সবুজ ফসলের খেত, বাঁশবাগানে নানান পাখির কিচিরমিচির, গ্রামের মানুষের অনুসন্ধানী জিজ্ঞাসা।
পুরো একটা বিকেল নানান পাখির কলতান শুনে, নজরকাড়া সরষে ফুলে ঘেরা গ্রামগুলোয় ঘুরে বেড়াই। সূর্যাস্ত শেষে গরম-গরম ডালপুরি আর গরুর খাঁটি দুধের চা- সব মিলিয়ে এক অসাধারণ সময় উড়ে যায় কখন, টেরই পাই না। বংশী নদীর সৌন্দর্যও কম যায় না। চাইলেই ডিঙি নৌকায় চড়ে বংশীর বুকে ভেসে বেড়ানো যায়। সব মিলিয়ে মাত্র কয়েক ঘণ্টার বেড়ানো হতে পারে জীবনের অন্যতম সেরা সময়। জীবন-মন রাঙাতে আপনিও চলে যান রবিশস্যের সরষেখেতে। ইচ্ছে করলে বাড়ির সবাইকে নিয়েও ঘুরে আসতে পারেন।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার বঙ্গবাজার, মতিঝিল, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী এবং সদরঘাট থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাস সার্ভিস রয়েছে সাভার বাজার স্ট্যান্ড যাওয়ার জন্য। সেখান থেকে অটোরিকশা বা রিকশায় ফোর্ড নগর। স্থানীয় বাসিন্দার ফোর্ড নগরকে ফুট নগর নামে বেশি চেনেন। ঢাকা থেকে সাভার জনপ্রতি ৩৫ থেকে ৭০ টাকা বাস ভাড়া। সাভার স্ট্যান্ড থেকে নামা বাজার পর্যন্ত ৫ থেকে ২০ টাকা। আবার সরাসরি চলে যাওয়া যায় বড় কুশিয়ারা, ভাড়া ৫০ টাকা।
সতর্কতা
সরিষা খুবই নাজুক উদ্ভিদ। তাই সরিষাখেতে না গিয়ে দূর থেকে বা রাস্তা থেকে দেখুন।
লেখক: চিফ অর্গানাইজার, দে-ছুট ভ্রমণ সংঘ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
১ দিন আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪