Ajker Patrika

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং হারাগাছ হাসপাতাল

মিজানুর রহমান, কাউনিয়া
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, ১৬: ১৭
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং হারাগাছ হাসপাতাল

কাউনিয়ায় হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং হারাগাছ হাসপাতালে এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অর্ধশতাধিক রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই শিশু।

হাসপাতালের তথ্য অনুসারে, প্রতিদিন বমি ও পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত হয়ে জরুরি বিভাগে ১৫ থেকে ২০ জন নতুন রোগী আসছে। এর মধ্যে ওয়ার্ডে পাঁচ থেকে সাতজন ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালে নির্ধারিত ডায়রিয়া ওয়ার্ড না থাকায় অন্য রোগীদের সঙ্গে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা।

চিকিৎসকেরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেই ডায়রিয়া রোগী হঠাৎ করে বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।

গতকাল শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই বছরের শিশু রিফাত বাবুকে ভর্তি করা হয়। শিশুটির মা শিরিন আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাতলা পায়খানা আর বমি হচ্ছিল রিফাতের। সন্ধ্যায় শরীর বেশ দুর্বল হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক ভর্তি করাতে বলেন।

শিরিন বলেন, হাসপাতাল থেকে শুধু স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। বাকি ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।

সাব্দী গ্ৰামের আছমা খাতুন জানান, দুই দিন আগে তাঁর আড়াই বছরের ছেলের হঠাৎ করে পাতলা পায়খানা শুরু হয়। স্যালাইন খাওয়ানোর পরও কোনো উন্নতি হয়নি। অবশেষ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

আছমা বলেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা কোনো ওয়ার্ড না থাকায় বিভিন্ন সংক্রমণ নিয়ে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে সাধারণ শয্যায় শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় তাঁদের সঙ্গে। রোগীর স্বজনেরা বলেন, হাসপাতালে স্যালাইন ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না। সব ওষুধই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে তাঁদের।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, সাত দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হারাগাছ হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৪১ শিশু ভর্তি হয়েছে। তবে পাঁচ দিনে আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৩৪ জন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সাহিদ সাব্বির আহমেদ বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। পাতলা পায়খানা ও বমিতে আক্রান্ত শিশুদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড না থাকায় অন্য রোগীদের সঙ্গে ডায়রিয়ার রোগী শিশুদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

ডায়রিয়া থেকে প্রতিকারের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মীর হোসেন বলেন, শিশুর প্রথমবার পাতলা পায়খানা হলেই তাকে স্যালাইন খেতে দিতে হবে, চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এই ভাইরাস একজনের শরীর থেকে আরেকজনের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হবে। ডায়রিয়া হলে শিশুর স্বাভাবিক খাবার বন্ধ করা যাবে না। এটি করলে শিশু আরও বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ঝুঁকি বেড়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত