Ajker Patrika

৮ বছরেও বকেয়া মেলেনি

শামিমুজ্জামান, খুলনা
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ০৬
৮ বছরেও বকেয়া মেলেনি

বন্ধের প্রায় ৮ বছরেও বকেয়া বেতন-ভাতা বুঝে পাননি খুলনার বেসরকারি এ্যাজাক্স জুট মিলের শ্রমিকেরা। দীর্ঘ সময়ে পাওনা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এই মিলের ৬ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী।

খুলনার শিরোমণিতে বেসরকারি এ্যাজাক্স জুট মিল ২০১৩ সালে বন্ধ হয়ে যায়। লোকসানের অজুহাতে এটি বন্ধ ঘোষণা করেন মালিক কাওসার জামান বাবলা। ওই সময় মিলে কর্মরত শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা এক মাসের মধ্যে পরিশোধের ঘোষণা দেয় মালিকপক্ষ। কিন্তু আজ সাড়ে সাত বছরের বেশি সময় পরও এই টাকা পরিশোধ করা হয়নি।

এদিকে ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর কাওসার জামান বাবলা মিলটি বিক্রি করেন শিল্পপতি মান্নান তালুকদারের কাছে। মান্নান তালুকদার কেনার পর ১ হাজার ৩৫০ জন শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করেন।

তারপরও গত সাড়ে সাত বছরে বকেয়া পাওনা পাননি মিলের বাকি ৬১০ জন শ্রমিক-কর্মচারী। এদিকে বকেয়া পাওনার দাবিতে খুলনা বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে কাওসার জামান বাবলা এবং ১৩ জন শ্রমিক মান্নান তালুকদারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন।

সেই মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সম্প্রতি দুদকের মামলায় মান্নান তালুকদার কারাগারে রয়েছেন। এখন শ্রমিকদের বকেয়া পাওয়ার বিষয়টি রয়েছে অনিশ্চয়তার মধ্যে। বকেয়ার আশায় শ্রমিকেরা বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা পাননি। অপরদিকে পাওনা না পেয়ে শ্রমিকেরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে মিলের কর্মচারী মো. হায়দার আলী বলেন, ‘সাত বছর ধরে অপেক্ষায় আছি কবে বকেয়া পাব। কিন্তু এখনো পাইনি, শুধুই আশ্বাস মিলেছে। অপরদিকে মিলের সাবেক সিবিএ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহেদ মুরাদ বলেন, বন্ধের সময় ঘোষণা ছিল, এক মাসের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ হবে, কিন্তু সাড়ে সাত বছরেও তা হয়নি।

মিলের শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘বকেয়ার জন্য আমরা রাজপথে আন্দোলন করেছি বহুবার। মিছিল, মিটিং, সমাবেশ, রাজপথ অবরোধ—কোনো কিছুতেই বকেয়া পাওয়া যায়নি। আবারও রাজপথে আন্দোলন করা হবে। সেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

অপরদিকে ব্যক্তিমালিকানাধীন পাট সুতা বস্ত্রকল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম রসুল খান বলেন, মিলের বর্তমানে সব মিলিয়ে শ্রমিকদের পাওনা রয়েছে ১৫ কোটি টাকা। এই টাকার জন্য শ্রমিকেরা দিনের পর দিন আন্দোলন-সংগ্রাম করছেন। বকেয়া পাওনা না পেয়ে শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিনি শ্রমিকদের দাবি আদায়ে রাজপথে আরও লাগাতার কর্মসূচি দেওয়ার কথা বলেন।

অপরদিকে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, শ্রমিকেরা যাতে তাঁদের পাওনা বুঝে পান, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগও করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত