Ajker Patrika

ব্রহ্মপুত্রের শাখা মরা খাল চরে ফসল চাষ

হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৪১
ব্রহ্মপুত্রের শাখা মরা খাল চরে ফসল চাষ

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের সিদলা ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের শাখানদী মরা খালে পরিণত হয়েছে। পলি পড়ে ক্রমে ভরাট হয়ে গেছে এই নদীর তলদেশ। তাই একসময়ের প্রবল খরস্রোতা নদী এখন শুকিয়ে গেছে। নদীর বুকে জেগে উঠছে চর। স্থানীয় কৃষকেরা সেই চরেই ফলাচ্ছেন ফসল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দ্রুত খনন করে নদীটি বাঁচানো হোক। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, এই মুহূর্তে এ অঞ্চলে নদী খননের কোনো পরিকল্পনা নেই।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের চর বিশ্বনাথপুর ও সাহেবের চর গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখানদী। পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে এ নদীর তলদেশ। ভরাট হয়ে যাওয়া নদীর তলদেশে এখন চাষ হচ্ছে বোরো ধান, গম, ভুট্টাসহ নানা রকম ফসল। নদীর বুকেই চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন নদীপারের মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় এই নদীতে পর্যাপ্ত পানিপ্রবাহ ছিল, তা দিয়ে চলত আশপাশের জমির চাষাবাদ। এই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন জেলেরা। দীর্ঘদিন খনন না করায়, নদীর তলদেশে পলি পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জেগে উঠেছে বিশাল চর।

অথচ প্রবল খরস্রোতা এই নদী আশপাশের মানুষের কাছে ছিল মূর্তিমান আতঙ্ক। কিন্তু বর্তমানে বর্ষাকালেও নদীর ভয়াল রূপ চোখ পড়ে না। দিন দিন মরে নদীটি এখন পরিণত হয়েছে আবাদি জমিতে।

স্থানীয় কৃষক কাশেম বলেন, ‘আমাদের জমি নদীর ভাঙনে তলিয়ে যায়। নদীতে চর পড়ায় আমরা পৈতৃক সম্পত্তি ফিরে পেয়েছি। সেই জমিতে চাষাবাদ করছি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, নদী প্রাকৃতিক সম্পদ। নদী মরে গেলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। নদীতে পানি না থাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে জেলেদের জীবিকা। কৃষকেরা এখন চাষাবাদ করলেও দ্রুত পরিবেশের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে। দ্রুত খনন করে নদীটি বাঁচানো হোক।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরুল কায়েস বলেন, নদীতে পানি না থাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। নদীতে পানি থাকলে ওই নদীর পানি দিয়ে নানা ধরনের ফসলের জমিতে সেচ দিয়ে ফসল উৎপাদন করা সহজ হতো। কিন্তু নদীতে পানি না থাকায় নদীর বুকেই এখন চাষাবাদ হচ্ছে।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া পারভেজ বলেন, ‘নদ-নদী ও খাল-বিলের অবৈধ বালু উত্তোলন ও দখলদার উচ্ছেদে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা চাই।’

কিশোরগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ খননের কাজ করছে। এই মুহূর্তে এ অঞ্চলে আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত