Ajker Patrika

ঝলমলে রোদে কৃষকের স্বস্তি ধান শুকাতে ব্যস্ততা

মিঠাপুকুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ মে ২০২২, ১৬: ৪৯
Thumbnail image

মিঠাপুকুরে কাঁচা ধান শুকানোর চিন্তায় দিশেহারা কৃষকের মুখে স্বস্তির হাসি ফুটিয়েছে ঝলমলে রোদ। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রখর রোদ পেয়ে যে যেখানে পেরেছেন, ধান শুকিয়ে গোলায় তোলার চেষ্টা করেছেন।

রংপুর-ঢাকা মহাসড়কসহ আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘুরে শত শত কৃষককে ধান ও গো-খাদ্য হিসেবে পরিচিত খড় শুকানোর কাজ করতে দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে বাড়ির নারীরাও হাত লাগিয়েছিলেন।

উপজেলা সদরের গড়েরমাথা এলাকায় মহাসড়কে ধান শুকিয়ে বস্তায় ভরছিলেন কয়েকজন। সেখানে কথা হয় কৃষক নরেন চন্দ্রের সঙ্গে। তিনি তাঁর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ধান শুকাচ্ছিলেন।

নরেন জানান, তিনি ২৫ শতক জমিতে ধান চাষ করেছেন। এ ধান থেকেই তাঁর ছয় মাসের খাদ্য আসে। অবিরাম বৃষ্টিতে তা শুকাতে পারছিলেন না। এখন রোদে শুকিয়ে নিতে পারায় খুশি হয়েছেন।

আঞ্চলিক মহাসড়কে খড় শুকাচ্ছিলেন বিশু উড়াও। তিনি জানান, রোদ পেয়ে চিন্তা কমেছে। ধানের পর খড় শুকিয়ে নিলেই আর কোনো সমস্যা হবে না।

বিশুর পাশে দুজন নারীকে মাথায় ছাতা দিয়ে ধান শুকাতে দেখা যায়। তাঁদের একজন জানান, ধান সিদ্ধ করলেও বৃষ্টির কারণে শুকানো যাচ্ছিল না। এখন রোদ পেলেও জায়গার অভাবে বাধ্য হয়ে সড়কে শুকাচ্ছেন।

গড়েরমাথা থেকে মধ্যপাড়া পাথর খনি পর্যন্ত এই আঞ্চলিক মহাসড়কে গতকাল ধান ও খড় শুকানোর উৎসব ছিল। প্রখর সূর্যের তাপে কষ্ট হলেও ধান শুকাতে পারায় কৃষক পরিবারের সদস্যদের মুখে ক্লান্তির বদলে হাসি দেখা গেছে।

এভাবে সড়ক ও মহাসড়কে ধান ও খড় শুকানোয় সমস্যা হলেও সবাই মানিয়ে নিয়েছেন। খাদ্য সংরক্ষণে সবার সহযোগিতা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাবলু মিয়া। তিনি ধান শুকানোর এ সময়ে সব চালককে সাবধানে যানবাহন চালানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মোতাবেক, বোরা মৌসুমে ৩০ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ করা হয়েছে। আসন্ন বর্ষায় যাতে চাষ ব্যাহত না হয় এ জন্য আউশ ধান চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়েছে। এমনকি সরকারি অর্থায়নে চাষিদের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইফুল আবেদীন জানান, এ রকম রোদ তিন থেকে চার দিন থাকলেই ধান কাটা ও মাড়াই শেষ পর্যায়ে চলে আসবে।

এদিকে, একাধিক কৃষক জানান যে ধান কাটা, মাড়াই ও বস্তায় ভরার যন্ত্রের (হারভেস্টার) চাহিদা বেড়েছে, কিন্তু সংখ্যায় কম থাকায় শ্রমিকের ওপরই ভরসা করতে হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আবেদীন জানান, প্রতি বছর দুই থেকে তিনটি করে হারভেস্টার ভর্তুকি দামে সরবরাহ করা হচ্ছে। আগামী বছর এই সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত