Ajker Patrika

বাঁশের সাঁকোয় পারাপার, দুর্ভোগ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২২, ১৪: ৪৫
বাঁশের সাঁকোয় পারাপার, দুর্ভোগ

নাটোরের গুরুদাসপুরের মশিন্দা ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে নন্দকুজার শাখা নদী গোমতী। এ নদীর ওপর আজও নির্মিত হয়নি কোনো সেতু। তাই গুরুদাসপুর ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার অন্তত ১২ গ্রামের মানুষকে বাঁশের সাঁকোর ওপর নির্ভর করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এখানে দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হলে ফসল আনা-নেওয়াসহ রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নিতে তাঁদের ভোগান্তি কমে আসবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের শিকারপাড়া সরকারি আলিয়া মডেল মাদ্রাসার পাশ দিয়ে গোমতী নদীর ওপর ইজারার ভিত্তিতে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। সেই সাঁকোতে নদী পারাপার করছে সাধারণ মানুষ। পাকা সেতু না থাকায় বর্ষা মৌসুমে নৌকায় এবং শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোতে প্রতিনিয়ত গুরুদাসপুর ও তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল, সগুনা, কাটাবাড়ি, কামারশন, মাকরশন, মশিন্দা, রাণীগ্রাম, হাসমারী, খুবজিপুর, শিকারপুর, সাহাপুর, বামনকোলাসহ অন্তত ১২টি গ্রামের মানুষকে পারাপার করতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুরুদাসপুরের শিকারপুর বাজারে সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। হাটে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষ সাঁকো পার হতে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। হাটের পাশেই রয়েছে মহসিন আলী কলেজ, শিকারপাড়া সরকারি আলিয়া মডেল মাদ্রাসা, শিকারপুর কৃষি কারিগরি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করতে হয়। এ ছাড়া যান চলাচলের ব্যবস্থা না থাকায় অসুস্থদের নিয়ে নদী পারাপার করতে দুর্ভোগের শিকার হাতে হয় তাঁদের। অনেক সময় ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের ভ্যানে করে পারাপার করতে হয়। এ ছাড়া কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য পরিবহনেও দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে বাজারে আসা মানুষদের।

ওই বাঁশের সাঁকোর ইজারাদার এরশাদ আলী বলেন, প্রতি বছর নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন তিনি। তাই প্রতিবার সাঁকোটি পারাপারের সময় জনপ্রতি পাঁচ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। বর্ষায় নৌকায় এবং শুকনো মৌসুমে সেই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করেন স্থানীয়রা। এ ছাড়া বর্ষাকালে নৌকাডুবি, শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে।

গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা গ্রামের কৃষক আলাল উদ্দিন বলেন, নদীর উত্তর পার অর্থাৎ তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশির ভাগ কৃষিজমির মালিক গুরুদাসপুর উপজেলার মানুষের। ফসল আনা তাঁদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে। এখানে একটি সেতু হলে এই এলাকার মানুষের সবচেয়ে বেশি উপকার হবে। কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া করতে কম সময় লাগবে। এ ছাড়া তাঁদের ফসল পরিবহনের বাড়তি খরচ করতে হবে না।

রাণীগ্রামের কৃষক হারুন সরদার বলেন, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সগুনা গ্রামে তাঁর ১৫ বিঘা জমি আছে। সেখানে বোরো ধানের চাষ করেছেন তিনি। এই একটি মাত্র নদীর ওপর দিয়ে তাঁদের চলাচল করতে হয়। নদীর ওপর পাকা সেতু থাকলে তাঁদের ধান আনতে সহজ ও খরচ কম হবে। সেতু না থাকায় অতিরিক্ত খরচ হয়।

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. মিলন মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাস্তা ও জায়গা নিয়ে সেতু নির্মাণ করতে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া একটু দীর্ঘ হতে পারে। বর্তমানে সেতুর প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে দেওয়া আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত