Ajker Patrika

বাইরে যাওয়া যাচ্ছে না কমেছে আয়-রোজগার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২২, ১৩: ৪১
Thumbnail image

‘গরমের কারণে ভ্যানের কোনো যাত্রী নাই। বাজার যদি যান, পুরা বাজার ফাঁকা। কোনো লোকজন দেখা যায় না। প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় একনা করি বাজার যাই। যে জায়গায় ঈদের আগে কামাই হতো ৩০০ থাকি ৪০০ টাকা সে জায়গায় এখন ৫০ টাকা কামাই করতে হাঁসফাঁস করা লাগে।’

রংপুরের গঙ্গাচড়ার কোলকোন্দ ইউনিয়নের ভাই ভাই মোড়ে কথাগুলো বলছিলেন ভ্যানচালক পরিমল চন্দ্র রায়।

চলমান দাবদাহে দেশের উত্তরাঞ্চলে পরিমলের মতো খেটে খাওয়া মানুষজন চরম বিপাকে পড়েছেন। তাঁদের অনেকে কাজে বের হতে পারছেন না। আর বের হওয়া গেলেও রোদের তাপে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না।

বড়বিল ইউনিয়নের চওড়াপাড়া গ্রামের আইসক্রিম বিক্রেতা খলিল মিয়া বলেন, ‘ঈদের পর থাকি গরমের কারণে এক দিনও আইসক্রিমের গাড়ি নিয়া বাহির হং নাই। বাড়িত বসি আছি গরমের কারণে। রোদের তেজ দেখলে কলিজা শুকি যায়। এভাবে থাকলে তো ব্যবসাপাতি বাদ দিয়া না খেয়া মরা লাগবে।’

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতেও গত কয়েক দিনের তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত তাপে পাকা সড়কের পিচ গলে যাচ্ছে। গরম থেকে একটু স্বস্তি পেতে অনেককেই গাছপালার নিচে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

উপজেলার খয়েরবাড়ী বাজারে কথা হয় ভ্যানচালক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড গরমের কারণে ভ্যান চালানো যাচ্ছে না। আবার লোকজনও বের হচ্ছেন কম। ফলে খুব একটা যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। এতে তাঁর মতো অনেকেরই আয়-রোজগার কমে গেছে বলে জানান তিনি।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, এ সময় যতটা রোদের মধ্যে কম যাওয়া যায় ততই ভালো। আর রোদে গেলেও ছাতা ব্যবহার করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। আর ঘেমে গেলে ঘাম যাতে গায়ে শুকিয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রেখে ঘাম মুছে ফেলতে হবে। ঘাম শরীরে বসে গেলেই সমস্যা হবে।

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বিপাকে পড়েছেন কৃষকশ্রমিকেরা। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা আগের থেকে অনেক কমে গেছে।

যারা কাজ করছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে মাঠে কাজ করতে গেলে বেশিক্ষণ টিকে থাকা যাচ্ছে না। তাই খেটে খাওয়া মানুষের অনেকে কাজে আসছেন না।

সদর ইউনিয়নের কেশবা গুচ্ছগ্রাম এলাকায় আমনের মাঠে কাজ করতে আসা কৃষিশ্রমিক ফুলমতি বলেন, ‘পেটে খাই তাই পিঠে সয়। তাই এ রোদোত কামোত এসেছি।’

প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে অনেকেই একাধিকবার পুকুরে গোসল করছেন। তবে রংপুরের সিভিল সার্জন শামীম আহাম্মেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের পরামর্শ থাকবে পুকুরের পানিতে কেউ যাতে অতিরিক্ত গোসল না করেন। সেই সঙ্গে এই রোদে কেউ যাতে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাসার বাইরে বের না হন।’

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, চলমান দাবদাহ ২০ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত