Ajker Patrika

এক যুগেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বেদেপল্লিতে

শেরপুর প্রতিনিধি
এক যুগেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বেদেপল্লিতে

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ডেফলাই গ্রামে এক যুগ আগে জমি কিনে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে ১০০ বেদে পরিবার। অথচ দীর্ঘদিনেও বেদেপল্লিতে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া।

বেদেপল্লির বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোটার হওয়া সত্ত্বেও নেই রাস্তা, সেতু ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অবহেলিত জীবনযাপনের পাশাপাশি অস্তিত্বের সংকটের শঙ্কা এখন তাঁদের।

এদিকে স্থানীয় প্রশাসন বলছে, বেদেপল্লি পরিদর্শন করে তাঁদের জীবনমানের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় ও বেদেপল্লির বাসিন্দারা জানান, ২০১০ সালে ডেফলাই গ্রামে প্রথমে প্রায় ১০০ পরিবার নিজেদের টাকায় জমি কিনে বসবাস শুরু করে। তখন থেকে ওই জায়গা বেদেপল্লি হিসেবে পরিচিতি পায়।

পর্যায়ক্রমে ঢাকার সাভার, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক বেদে এ পল্লিতে এসে জমি কিনে বসবাস শুরু করেন। বর্তমানে ১১৪টি পরিবারের ছয় শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু সদস্য বসবাস করছেন। তাঁদের মধ্যে ভোটার রয়েছেন ৪০০ জন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেদেপল্লিতে প্রবেশের কোনো রাস্তা নেই। পল্লির মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া পাহাড়ি ঝোরার ওপর একটি কাঠের সেতু থাকলেও তা নড়বড়ে।

পল্লির অনেক বাসিন্দা জমি কিনলেও ঘর তোলার সামর্থ্য না থাকায় জরাজীর্ণ ঝুপড়িতে থাকেন।

বেদেপল্লির বাসিন্দা মো. জামাল মিয়া বলেন, আধুনিক যুগে মানুষ ঝাড়ফুঁক আর তাবিজ-কবচে বিশ্বাস করে না। শিঙা লাগানো, সাপের খেলা দেখানো এবং সাপ ধরে এখন আর জীবন চালানো যাচ্ছে না।

বেদে মাইনুল হক জানান, এখানকার অনেক বয়স্ক ও বিধবাও ভাতা থেকে বঞ্চিত। আর্থিক সংকটের কারণে এ পল্লির শিশু-কিশোরেরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য সরকারের সহযোগিতা চান তিনি।

বেদেপল্লির সর্দার মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘এখানে ৪০০ ভোটার রয়েছেন। এখানকার বাসিন্দাদের যাতায়াত, শিক্ষাসহ নানা অসুবিধা রয়েছে। এগুলো সমাধানের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।’

নলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুকুনুজ্জামান বলেন, বেদেপল্লির সমস্যাগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আল মাসুদ বলেন, বেদেপল্লির সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরবর্তীকালে তাদের ভাতা, ঘর ও রাস্তাঘাটের বিষয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত