Ajker Patrika

১৯৭০-র ঘূর্ণিঝড়ের স্মৃতি মনে করে বুক কাঁপে মানুষের

ভোলা ও পটুয়াখালী প্রতিনিধি
Thumbnail image

১৯৭০ সালের এই দিনে অর্থাৎ ১২ নভেম্বর উপকূলবাসীর জীবনে নেমে এসেছিল মহাদুর্যোগ। প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড করে দেয় ভোলা, পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় জেলাগুলোকে। উপকূলীয় এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। তখনকার পাকিস্তান সরকারের হিসাবে মৃতের সংখ্যা পাঁচ লাখ হলেও বিশ্বের গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রের ধারণা সংখ্যাটি দশ লাখ। ঘূর্ণিঝড়ের সেই স্মৃতি এখনো বুক কাঁপন ধরিয়ে দেয় উপকূলের প্রবীণ মানুষদের।

জলোচ্ছ্বাসে স্রোতের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল বহু মানুষ ও গবাদিপশু। পুরো উপকূল যেন বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছিল। জলোচ্ছ্বাসের পর দেড় মাস পর্যন্ত স্বজন হারানোদের কান্নায় উপকূলের আকাশ-বাতাস ভারী হয়েছিল। ভোলা ছাড়াও পাশের বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বাগেরহাট, খুলনাসহ ১৮টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে।

উপকূলীয় জেলাগুলোর মধ্যে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ভোলায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল মনপুরা উপজেলায়। এদিকে সেই সময় তথ্যপ্রযুক্তিব্যবস্থা উন্নত না থাকায় উপকূলের বহু মানুষ ঝড়ের পূর্বাভাস পাননি।

এ সময় জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল ১০ থেকে ১৪ ফুট উচ্চতায়। কেউ গাছের ডালে, কেউ আবার উঁচু ছাদে আশ্রয় নিয়ে কোনোমতে প্রাণে রক্ষা পেলেও তিন-চার দিন পর্যন্ত তাঁদের অভুক্ত কাটাতে হয়েছিল। দুঃসহ সেই স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী উপকূলবাসীরা জানিয়েছেন, ওই সময় ভোলার এক-তৃতীয়াংশ জনপদ লন্ডভন্ড হয়ে যায়।

সত্তরের সেই ভয়াল স্মৃতির বর্ণনা করতে গিয়ে ওই সময়ের প্রত্যক্ষদর্শী প্রবীণ সাংবাদিক মো. আবু তাহের (৮৮) জানান, তখন ছিল রোজার মাস। সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। দুপুরের পর থেকে আস্তে আস্তে বাতাস বইতে শুরু করে। বিকেলের দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। সন্ধ্যায় বাতাসের বেগ বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর বাতাস ও বৃষ্টির প্রচণ্ডতা বেড়ে যায়। রাতে মেঘনা-তেঁতুলিয়া ও বঙ্গোপসাগরের জলোচ্ছ্বাসের পানি ১৪ ফুট উঁচু বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গোটা জেলা তলিয়ে যায়। এ সময় শহরের সদর রোডে এক বুক (তিন-চার ফুট) পানি ওঠে।

পরদিন ১৩ নভেম্বর ভোরে পানি যখন নামতে শুরু করে, তখন প্রচণ্ড বেগে জলোচ্ছ্বাসের স্রোতে বেশ কয়েকটি মাছ ধরার ট্রলার ও লঞ্চ শহরে ঢুকে পড়ে। পানিতে ভেসে যাচ্ছিল অগণিত মানুষের লাশ। বিভিন্ন গাছের মাথায় ঝুলতে দেখা গেছে মানুষ ও পশুর মৃতদেহ। চারদিকে শুধু লাশ আর লাশ।

এদিকে ভয়াল ১২ নভেম্বরের সেই দুঃসহ স্মৃতি স্মরণ করে ভোলা সদর, মনপুরা, লালমোহন ও চরফ্যাশনসহ বিভিন্ন জায়গায় স্মরণসভা ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে ১২ নভেম্বরকে ‘উপকূল দিবস’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে বিভিন্ন সংগঠন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত