Ajker Patrika

‘সুস্থ হয়ে আমার স্বামী কি হাঁটতে পারবে’

মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
‘সুস্থ হয়ে আমার স্বামী কি হাঁটতে পারবে’

বাঁ পায়ের হাঁটুতে লোহার খাঁচা লাগানো। পায়ের পাতা পর্যন্ত ব্যান্ডেজ। ঘরে খাটের ওপর খাঁচা লাগানো পা সোজা রেখে শুয়ে আছেন আরিফুল ইসলাম। পাশে ঘুমিয়ে পড়েছে তিন মাস বয়সী সন্তান আরাফ হোসেন। গত রোববার পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার নতুন শ্রীনগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য। 

বুকে কষ্ট চেপে আরিফুলের স্ত্রী মারুফা আক্তারের ছোট্ট প্রশ্ন, ‘সুস্থ হয়ে আমার স্বামী কি হাঁটতে পারবে?’

আরিফুল নতুন শ্রীনগর গ্রামের মো. হারুন অর রশিদের ছেলে। পাঁচ বছর আগে ঢাকায় যান আরিফুল। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় আতর, টুপি বিক্রি করতেন। তাঁর আয়েই চলত আট সদস্যের পরিবার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে ১৮ জুলাই ১০ নম্বর গোলচত্বরে ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে নামেন। কারফিউর মধ্যে ৪ আগস্ট বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভবনের ছাদ থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ কর্মী ও পুলিশ। মুহূর্তেই এক শিশুসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ শিশুটিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে চারটি গুলি লাগে আরিফুলের বাঁ পায়ে। আন্দোলনকারী ছাত্ররা তাঁকে পাশের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আগারগাঁওয়ের অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু) ভর্তি করান। এক মাসের বেশি সময় সেখানে চিকিৎসা চলে। গত শনিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি যান আরিফুল। 

আরিফুল বলেন, ‘দুই বছর আগে আমি বিয়ে করি। তিন মাসের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। আমার আয়ে চলত পরিবার। আন্দোলন চলাকালে কারফিউর মধ্যে ৪ আগস্ট মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় গুলিবিদ্ধ এক শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে চারটি গুলি লাগে বাঁ পায়ে। আন্দোলনকারী ছাত্ররা হাসপাতালে নেন। সেদিন হাসপাতালে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়, যা দিতে হয় আমার পরিবারকে। এর পরের চিকিৎসার ব্যয় ছাত্ররাই দিয়েছেন।’ 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরিফুলের মা শামীমা বেগম বলেন, ‘ছেলেটা আমার পঙ্গু হয়ে গেছে। কীভাবে আমাদের সংসার চলবে?’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত