Ajker Patrika

গর্তে আটকে যায় যানবাহন

মো. ইউনুস আলী, ধনবাড়ী
আপডেট : ২৬ মে ২০২২, ১১: ৫৪
Thumbnail image

ধনবাড়ী পৌর শহরের চৌরাস্তা-কয়ড়া-কেরামজানি সড়ক দেবে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই গর্তে পানি জমে যায়। বেহাল সড়কটির গর্তে আটকে যাচ্ছে যানবাহন। এ অবস্থায় গর্তের সামনে এলেই উল্টে যাওয়ার ভয়ে যানবাহন থেকে নেমে যাচ্ছেন যাত্রীরা। গর্ত পার হয়ে আবার গাড়িতে উঠতে হয় তাঁদের।

এভাবে গন্তব্যে পৌঁছাতে একাধিকবার যানবাহন থেকে যাত্রী ও চালকদের নেমে পড়তে হচ্ছে। এতে করে দুর্ভোগের পাশাপাশি গন্তব্যে পৌঁছাতে বাড়তি সময় নষ্ট হচ্ছে।

অন্যদিকে বৃষ্টি হলে সড়কের গর্তে পানি ও কাদা জমে সেই দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায় যাত্রীদের। অনেক সময় গর্ত থেকে গাড়ি টেনে তুলতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রী ও যানবাহনচালকদের। সংস্কারের অভাবে বেহাল একমাত্র সড়কটিতে এমন দুর্ভোগ উপজেলার চার ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে না আসায় ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশ বর্ধিত ও সংস্কারে ২ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ ছিল। স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটির কাজ পায়।

তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের কিছুদিন পরই আড়াই কিলোমিটার জুড়ে দেখা দেয় ফাটল। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় বেহাল সড়কটি। এ কারণে তাঁরা সড়কটি সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, পৌর শহরের চৌরাস্তা হয়ে কয়ড়া রোড দিয়ে সড়কটি উপজেলার শেষ সীমানা বলিভদ্র ইউনিয়নে চলে গেছে। পাশেই গোপালপুর উপজেলা। এখানে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ২০১ গম্বুজের (ঝাওয়াল) মসজিদ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ছোট-বড় যানবাহনগুলো এ সড়কে চলাচল করে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে গর্তে পানি ও কাদা জমে গেছে। বিশেষ করে খারাপ অবস্থা দেখা গেছে শফিকুল ইসলামের রাইস মিল পর্যন্ত।

বিশেষ করে সড়কের চার-পাঁচটি জায়গা মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভ্যান, রিকশা ও অটোরিকশাগুলোকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। যাত্রী ও পণ্য নামিয়ে পার হচ্ছেন তাঁরা। ভারী ও জরুরি সেবার গাড়িও গর্তের কারণে আটকে রয়েছে। দেখা দিচ্ছে যানজট। সময়মতো পৌঁছাতে পারছেন না উপজেলার শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও শ্রমজীবীরা।

সড়কের ভ্যানচালক শহীদ মিয়া বলেন, ‘দিনে তো যেমন-তেমন, রাতে যানবাহন চালানো অনেক কষ্ট। গর্তে বৃষ্টির পানি থাকলেও বোঝা যায় না। গাড়িগুলো উল্টে যাত্রীরা আহত হন। 
অটোরিকশাচালক নাসির উদ্দিন বলেন, এভাবে সড়কে গাড়ি চালানো জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভাঙা সড়কের কারণে আগের মতো যাত্রী পাওয়া যায় না।

স্কুলশিক্ষার্থী রুমা আক্তার ও কলেজশিক্ষার্থী তন্ময় আহমেদ জানান, চৌরাস্তা মোড় থেকে শফিকুলের রাইস মিল পর্যন্ত সড়কের বাজে অবস্থা। সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া যাচ্ছে না। গর্তে গাড়ি উল্টে যায়। যাত্রীরা আতঙ্কে থাকে। ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তাঁরা।

কর্মজীবী অবু রায়হান বলেন, যারা সড়কের কাজ করছে, কাজের মান সম্পর্কে তাঁরাই ভালো জানেন। কয়েক বছরে সড়ক নষ্ট হয়ে যাবে, এটা ভাবাই যায় না। গাড়ি উল্টে যাওয়ার ভয়ে গর্তের পাশে গাড়ি এলে যাত্রীরা নেমে পার হয়। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আরও ভোগান্তিতে পড়বে মানুষ।

এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বলেন, ‘সড়কটি পুনরায় সংস্কারের সময় খুবই নিম্নমানের কাজ হয়েছে। সড়কটি এখন বেহাল। অনেক জায়গায় দেবে উঁচু-নিচু হয়ে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। বিষয়টি মেয়রকে জানিয়েছি।’

পৌর মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজ্জান বকল বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছি। এলজিইডির কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী জয়নাল আবেদীন সাগর বলেন, ‘মেয়রকে বিষয়টি আমি জানিয়েছি। দুর্ভোগ এড়াতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত