Ajker Patrika

সড়কে নিম্নমানের ইট খোয়া বালু ব্যবহারের অভিযোগ

এম. কে. দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৫৫
সড়কে নিম্নমানের ইট খোয়া বালু ব্যবহারের অভিযোগ

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চরপুটিমারী ইউনিয়নের ডিগ্রীরচর মফিজিয়া মাদ্রাসা হতে চর বাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন পাকা সড়কে ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তারা নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে ভালোমানের সামগ্রী ব্যবহারে সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানান।

উপজেলা এলজিইডির কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আমফান প্রকল্পের আওতায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাকা সড়ক নির্মাণে ২ কোটি ৪০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৭ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে সড়কটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। গত বছরের ২৯ আগস্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফারহান এন্টারপ্রাইজ কাজ শুরু করে। নীতিমালা অনুযায়ী চলতি বছরের ১৯ জুলাই কাজ শেষ করার কথা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কার্যাদেশের নীতিমালার তোয়াক্কা না করে সড়ক নির্মাণে ব্যবহার করতেছেন নিম্নমানের ইট, বালু ও খোয়া। যার ফলে সংশ্লিষ্টদের পকেট ভারি হলেও সড়কটি স্থায়িত্ব হবে না বলে ধারণা স্থানীয়দের।

সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কে বিছানো হয়েছে নিম্নমানের ইট, খোয়া ও বালু। এ ছাড়া ঠিকাদারের লোকজন সড়কের দুপাশে যেসব ইট, খোয়া ও বালু মজুদ করে রেখেছে, তা সবগুলোই নিম্নমানের।

স্থানীয় ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী জানান, পুরো সড়কটি ২ ও ৩ নম্বর ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নিম্নমানের কাজ করায় সড়কটিকে নির্মাণের ১-২ বছরও টেকসই করবে না।

টাবুরচর এলাকার ইয়াকুব মিয়া, শজিজল, হেলাল উদ্দিনসহ অনেকেই বলেন, ‘ঠিকাদারের লোকজন সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট, খোয়া ও বালু ব্যবহার করলেও দেখেও না দেখার ভান করে যাচ্ছে এলজিইডির কর্মকর্তারা।

চার নংচর গ্রামের মনিরুজ্জামান শাহিন মাস্টার, গোলাফ হোসেন, হাইবর, বেলাল মিয়াসহ অনেকেই বলেন, সড়ক নির্মাণে দ্বায়িত্বরত এলজিইডি অফিসের লোকদের আমরা একাধিকবার বলেও কোনো ফল পাচ্ছি না। তারা ঠিকাদারের লোকজনের ইচ্ছামাফিক নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করাচ্ছে।

চার নংচর বাজারের ব্যবসায়ী আকমল, হেলাল, রবিজল জানান, ‘নিম্নমানের ইট, খোয়া এবং বালু দিয়ে সড়কের কাজ করা হচ্ছে। আমরা নিম্নমানের সামগ্রী সরাতে বারবার বললেও ঠিকাদারের লোকজন শুনছে না। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণের বিষয়ে যোগাযোগ করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফারহান এন্টারপ্রাইজর স্বত্বাধিকারী ফারহান আহম্মেদ বলেন, ‘নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করার কোনো ইচ্ছে আমাদের নেই। ইট ক্রয় করার সময় তো আমরা এক নম্বর ইটই ক্রয় করি। দেওয়ার সময় ভাটা মালিকেরা কৌশলে দুই একটা ইট নিম্নমানের ঢুকে দেয়। এই আর কি? তারপরও যদি নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দেখতে পাই, তা সরিয়ে ফেলবো।’

এ বিষয়ে জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সায়েদুজ্জামান সাদেক বলেন, ‘নির্মাণাধীন সড়কটি দেখভাল করছে ইসলামপুর উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়। দায়িত্বরত ব্যক্তি যদি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করে, সেটা বড়ই দুঃখজনক। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা অন্যায়। আমি খোঁজখবর নিয়ে কার্যাদেশ অনুযায়ী সড়ক নির্মাণের পদক্ষেপ নেব।’

নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারে সড়ক নির্মাণের বিষয়ে ইসলামপুর এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ না থাকায় তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত