Ajker Patrika

মশায় অতিষ্ঠ নগরবাসী

খান রফিক, বরিশাল
মশায় অতিষ্ঠ নগরবাসী

মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বরিশাল নগরবাসী। সিটি করপোরেশন ধারাবাহিকভাবে মশকনিধন কর্মসূচি চালালেও তা কাজে আসছে না।

এদিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব চিন্তায় ফেলেছে তাঁদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গৃহস্থালির ময়লা-আবর্জনা নালায় ফেলার কারণে সেখানে পানি জমে মশার উৎপত্তি হচ্ছে। জনগণ সচেতন না হলে ওষুধ ছিটিয়েও মশক নিধন করা যাবে না।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হুমায়ুন শাহিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আস্তে আস্তে বাড়ছে। এজন্য সচেতনতা খুব জরুরি। তিনি জানান, বরিশাল বিভাগে এ পর্যন্ত ৪০৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৩৫২ জন। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫১ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে মারা গেছে চারজন। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি আছে ২০ জন ডেঙ্গু রোগী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।

নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়ানগর এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন। তিনি বলেন, তাঁর বাসার সামনে ডোবায় মশার আড্ডাখানা। মশার যন্ত্রণায় মশারিই এখন তাঁদের জন্য নিরাপদ। একই অভিযোগ নগরীর গোরস্তান রোড, কলেজ রোড, নিউ সার্কুলার রোড, মনসুর কোয়ার্টার, কালুশাহ সড়ক, পশ্চিম কাউনিয়া, মেডিকেলের পেছনে, রুপাতলি হাউজিং এলাকার একাধিক বাসিন্দার।

সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের পরিদর্শক আবুল কালাম রানা জানান, তাঁরা দৈনিক দুটি করে ওয়ার্ডে মশার ওষুধ ছিটাচ্ছেন। তাঁদের সরঞ্জামের মধ্যে আছে ১৫টি হ্যান্ড স্প্রে এবং ২০টি ফগার মেশিন।

শেবাচিম হাসপাতালের তথ্যমতে, ভর্তি থাকা ২০ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নগরী ও বরিশাল জেলার। সেখানকার একাধিক রোগীর স্বজন জানান, মানসম্মত চিকিৎসা হচ্ছে না।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, মশার কামড়ে মশাবাহিত রোগ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, চর্মজাতীয় রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বাচ্চাদের এবং বয়স্কদের এজন্য সতর্কতার সঙ্গে মশারির মধ্যে রাখা দরকার। তা ছাড়া বাসাবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে নিজেদেরই সচেতন হতে হবে।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ডা. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘কয়েক দিন আগে টানা বৃষ্টির কারণে ওষুধ ছিটানো হয়নি। যে কারণে মশা বেড়েছে। নতুন করে আমরা ঝটিকা অভিযান শুরু করছি। স্প্রে ও ফগিং মেশিন দিয়ে মশা নিধন করছি। খাল ও নালা পরিষ্কারও চলছে।’ তিনি বলেন, এডিস মশার লার্ভা যে নগরে নেই এমন কোনো পরীক্ষা করা হয়নি। হাসপাতালে যারা ভর্তি রয়েছে তার অধিকাংশই নগরীর বাইরের—জানান রবিউল ইসলাম।

বরিশাল সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সদস্যসচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, মশার মূল ঘাঁটি খালগুলো খনন ও পরিষ্কার জরুরি। গত বৃহস্পতিবারও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নদী দিবসের সভায় সাতটি খাল ডিসেম্বরের মধ্যে খননের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আশা করি, এ কার্যক্রম দ্রুত দৃশ্যমান হবে।

এ বিষয়ে বিসিসির প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলেন, মশক নিধনে সিটি করপোরেশন নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘মশা উৎপাদনের কারখানা আমাদের বাসাবাড়ি। জনগণ সচেতন না হলে আর কত ওষুধ ছিটাবে বিসিসি। মশার বিচরণক্ষেত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত