Ajker Patrika

নদীতে ধরা পড়ছে ইলিশ

সাইফুল ইসলাম, চরফ্যাশন (ভোলা)
আপডেট : ১০ জুন ২০২২, ১২: ০৪
নদীতে ধরা পড়ছে ইলিশ

জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে ইলিশ। ভোলার চরফ্যাশনের মৎস্যঘাটগুলো জেলে ও পাইকারদের হাঁকডাকে এখন সরগরম। আড়তগুলোতে দিন-রাত চলছে কর্মযজ্ঞ।

জানা যায়, চরফ্যাশনের বড় মৎস্যঘাটগুলো হলো সামরাজ, বেতুয়া, নতুন স্লুইসগেট, খেজুরগাছিয়া, ঢালচর, বকসীঘাট, ঘোষেরহাট, চরকচ্ছপিয়া ও কুকরিমুকরি। আর চরফ্যাশন উপজেলায় জেলে রয়েছেন প্রায় ৯০ হাজার। উপজেলার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৪ হাজার ২৮১। অনিবন্ধিত জেলে রয়েছেন প্রায় ৪৬ হাজার। এসব জেলে নদী ও সাগরে মাছ শিকার করেন। এঁদের মধ্যে বেশির ভাগ জেলে সামরাজ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বিক্রি করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চরফ্যাশন উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার।

কয়েকটি মৎস্যঘাট ঘুরে দেখা গেছে, কেউ ট্রলার থেকে ঝুড়িতে করে মাছ নিয়ে আসছেন। কেউ আবার পাইকার ডাকছেন, কেউ মাছ কিনে মোকামে যাচ্ছেন। কাকডাকা ভোর থেকে শুরু হয়ে দিনভর কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয় এসব ঘাটে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি বেচাকেনা হয় ইলিশ। এখানে ইলিশের পাশাপাশি কাউয়া, ঢেলা, লইট্টা, পোয়া, জাবা কই, মেইদ, ট্যাংরা, রূপচাঁদাসহ প্রায় ২৫ প্রজাতির মাছ বিক্রি হয়। সাগরের ইলিশের থেকে নদীর ইলিশের দাম তুলনামূলক বেশি।

বড় আকারের ইলিশের হালি ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা, মাঝারি ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা এবং একটু ছোট ইলিশ ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সামরাজ ঘাটের জেলে মিলন মাঝি (৫৬), ফারুক মাঝি (৪৫) বলেন, ‘নদীতে এখন ইলিশ আগের চেয়ে বেশি ধরা পড়ছে। আগের ধারদেনা কিছুটা শোধ হচ্ছে। ইলিশ আরও একটু বেশি পাইলে ভালো হইতো।’

ঢালচর মৎস্যঘাটের বিসমিল্লাহ ফিশের মালিক আব্দুস সালাম হাওলাদার জানান, গত মৌসুম শেষে জেলেদের হাতে তাঁর প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ কোটি টাকার দাদন বকেয়া ছিল। নদীতে ইলিশ ধরা পড়লেও সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই এই মৌসুমে দাদন কিছুটা পরিশোধ করতে পারবেন জেলেরা।

সামরাজ মৎস্যঘাটের আড়তদার মো. জসিম জানান, বৈশাখের মাঝামাঝি মৌসুম শুরু হয় এবং শেষ হয় আশ্বিনের শেষ দিকে। সাধারণত ৩০ আশ্বিনকে মৌসুমের শেষ দিন ধরে হিসাব-নিকাশ করা হয়ে থাকে। নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। প্রতি যাত্রায় আশানুরূপ মাছ পেলে লাভ থেকে আস্তে আস্তে জেলে, মাঝি ও ট্রলারের মালিক মহাজনের দাদন পরিশোধ করতে পারবেন।

চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলেন, বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদীতে লবণাক্ততা কমেছে। এতে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন সব প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক যেকোনো প্রজাতির মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এবার চরফ্যাশন উপজেলায় ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৭ হাজার মেট্রিক টন। আশা কারা যায় ইলিশ উৎপাদনের এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। উপজেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৪ হাজার ২৮১। অনিবন্ধিত জেলে রয়েছেন প্রায় ৪৬ হাজার। নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে ১৭ হাজার ৫৬১ জন জেলেকে প্রথম ধাপে ৫৬ কেজি করে ভিজিএফের চাল দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত