Ajker Patrika

তিন কিলোমিটার সড়ক জুড়ে খানাখন্দ, দুর্ভোগ

নওগাঁ ও রাণীনগর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ১৮
Thumbnail image

নওগাঁর রাণীনগরে গহেলাপুর থেকে কাটরাশইন হাটখলা পর্যন্ত গ্রামীণ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের। মাত্র তিন কিলোমিটার সড়কটি এখন এই অঞ্চলের মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, বড়গাছা ইউনিয়ন হচ্ছে ধানসহ অন্যান্য কৃষি পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ। এই ইউনিয়নের একটিমাত্র জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ রাস্তা এটি। বর্তমানে সড়কটি বেহাল হাওয়ার কারণে থমকে আছে এই অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতি। তবু দৃষ্টি নেই কর্তৃপক্ষের।

জানা গেছে, নব্বই দশকে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা করতে গহেলাপুর বাজার থেকে কাটরাশইন হাটখোলায় যাওয়ার জন্য তিন কিলোমিটার এই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। সেসময় রাস্তাটির গহেলাপুর থেকে এক কিলোমিটার পর্যন্ত পাকা করা হয়। আর অবশিষ্ট রাস্তায় ইট বিছানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে বছরের পর বছর রাস্তাটি সংস্কার কিংবা মেরামত না করা হয়নি। এতে শুকনো মৌসুমেও চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে এই অঞ্চলের কৃষকেরা তাঁদের কৃষি পণ্যসহ পরিবহন করতে পারছেন না।

সম্প্রতি সড়কটি ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার কাটরাশইন, উমরপুর, পোঁওয়াতাপাড়াসহ অন্তত ৮ থেকে ১০টি গ্রামের হাজারো মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। অথচ রাস্তার বেশ কিছু অংশে ইট উঠে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। যেখান দিয়ে পায়ে হেঁটে পার হওয়াই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া পাঁচবাড়িয়া এলাকায় কালভার্ট ভেঙে পড়ায় রাস্তার দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সড়কটির কারণে কৃষকেরা বাধ্য হয়েই ধানসহ অন্য কৃষি পণ্য কম মূল্যে ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি করছেন। এতে করে তাঁরা বছরের পর বছর ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শুকনো বা বর্ষা মৌসুমে এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পায়ে হেঁটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। যার কারণে এই অঞ্চলের মানুষদের অর্থনীতির চাকা থমকে আছে।

গহেলাপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, প্রতিদিন কর্মস্থলে যেতে তাঁকে এই সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। ভ্যান বা অটোরিকশা না পেলে পায়ে হেঁটেই যেতে হয়। রাস্তা এতটাই খারাপ যে অটোরিকশা বা ভ্যানে উঠলে ঝাঁকুনিতে কোমর ব্যথা হয়ে যায়।

কাটরাশইন গ্রামের মিলন হোসেন বলেন, দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে শহরের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও তাঁরা এই সুবিধা থেকে অনেক দূরে আছেন। এই অঞ্চলের মানুষেরা এখনো চরমভাবে অবহেলিত।

ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা মন্টু মিয়া বলেন, গ্রামীণ এই সড়কটি দ্রুত আধুনিকায়ন করে এই অঞ্চলের কৃষকসহ হাজারো মানুষের ভাগ্যের চাকা সচল করতে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

বড়গাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, ‘বর্তমানে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলে দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে এটা সত্যি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর এই রাস্তাটি মেরামত করার বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করব। বরাদ্দ পেলে মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে দ্রুত সংস্কার বা মেরামত করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত