Ajker Patrika

তিন ফসলি জমি হচ্ছে ডোবা

মো. জহিরুল হক বাবু, বুড়িচং
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১১: ২২
তিন ফসলি জমি হচ্ছে ডোবা

বুড়িচংয়ে অবৈধভাবে খননযন্ত্র (ড্রেজার) বসিয়ে ফসলি জমির মাটি তোলা হচ্ছে। এতে একসময়ের তিন ফসলি জমিগুলো ডোবায় পরিণত হচ্ছে। ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ। এ ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে মাটি তোলায় পাশের জমিতেও ভাঙন দেখা দিচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের আবিদপুর পশ্চিমপাড়া মদিনা মসজিদসংলগ্ন বড় পুস্কনি এলাকায় দেখা গেছে, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার ফলে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এক স্থানে গভীর গর্ত করায় চারপাশের মাটি ভেঙে পড়ছে।

ড্রেজারের মাধ্যমে কাটা মাটি মাইলের পর মাইল পাইপ সংযোগ দিয়ে অন্য এলাকার পুকুর কিংবা অন্য ফসলি জমি ভরাটের কাজ চলছে। এতে এক সময়ের তিন ফসলের জমি পরিত্যক্ত ডোবায় পরিণত হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, প্রশাসনের লোকজন আসার আগেই কীভাবে যেন, অভিযুক্তরা টের পেয়ে যান। ফলে যন্ত্রপাতি বন্ধ করে পালিয়ে যান। পরক্ষণে প্রশাসনের লোকজন চলে গেলে তাঁরা আবারও মাটি কাটার কাজ শুরু করেন। পুলিশ চাইলে ড্রেজার ব্যবসায়ীদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করতে পারে। কিন্তু ড্রেজার ব্যবসায়ী ও পুলিশের মধ্যে চোর-পুলিশ খেলাটা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করছে।

একই অবস্থা উপজেলার ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নের লাটুয়ার বাজারের পশ্চিম পাশের জমিগুলোতে। ওই এলাকাতেও ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করা হচ্ছে। জমির মালিকেরা নগদ টাকার লোভে এবং কেউ কেউ বাধ্য হয়ে মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে জমি দিচ্ছেন।

এ ছাড়া মিথলমা গ্রামের নাগীনী জলাশয় থেকে, মোকাম ইউনিয়নের বারাইর দিঘি, কাকিয়ারচর, শিকারপুর এলাকার বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে অবাধে ড্রেজারের সাহায্যে মাটি কাটা হচ্ছে।

এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না অবৈধ এসব ড্রেজার। এ বিষয়ে মোকাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আলী বলেন, শুধু শিকারপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য একটি পুকুর থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। বাকি স্থানের ড্রেজারের বিষয়ে আমি অবগত নই। যেহেতু বিষটি শুনলাম, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হালিমা খাতুন বলেন, অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের জেল, জরিমানাও করা হয়েছে।

ইউএনও আরও বলেন, এক শ্রেণির অসাধু লোক প্রশাসনের ওপর নজরদারি করে এ কাজ করে যাচ্ছে। অভিযানের খবর দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের কাছে পৌঁছে যায়। ফলে প্রশাসন পৌঁছানোর আগেই তাঁরা পালিয়ে যান। তাই এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেন স্থানীয়ভাবে তাঁরা অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত