Ajker Patrika

বড় পরিকল্পনায় বঞ্চিত ওয়ার্ডের বাসিন্দারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২১, ১২: ৪৮
বড় পরিকল্পনায় বঞ্চিত ওয়ার্ডের বাসিন্দারা

দেশের শহর-নগরের বড় বড় পরিকল্পনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওয়ার্ডভিত্তিক নাগরিক পরিষেবাগুলো উপেক্ষিত থাকছে। এতে নাগরিকেরা প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ওয়ার্ড হচ্ছে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার প্রশাসনিক ইউনিট। তাই ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা করলে এর সুফল সরাসরি নাগরিকেরা পেয়ে থাকেন।

গতকাল সোমবার বিশ্ব নগর-পরিকল্পনা দিবস উপলক্ষে ‘ওয়ার্ডকেন্দ্রিক নগর-পরিকল্পনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে নগর পরিকল্পনাবিদেরা এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, শহর ও নগরে নাগরিক সেবা বাড়াতে দেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশন ইতিমধ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের শহর পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক একক হচ্ছে ওয়ার্ড। সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশকনিধন, স্কুল, খেলার মাঠ, পার্কসহ অন্যান্য সুবিধা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বাস্তবায়ন করা গেলে এর ইতিবাচক প্রভাব পুরো শহরেই পড়বে। তবে আয়তন ও জনসংখ্যাভেদে ওয়ার্ডের পার্থক্য রয়েছে। এ জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনা আয়তন ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে করতে হবে।

বিআইপির চট্টগ্রাম শাখার সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ এ টি এম শাহজাহান বলেন, ১৬৮ বর্গকিলোমিটারের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ৪১টি ওয়ার্ড রয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ হওয়ায় নাগরিকদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শহরের অনেক ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা, যত্রতত্র বিদ্যুতের খুঁটি। এখানে কেউ একটু অসতর্কভাবে হাঁটলেই বিপদ।

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার বিকল্প নেই জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম বলেন, উত্তর সিটির সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা করা হয়েছে। শিগগিরই তা বাস্তবায়ন শুরু হবে।

তবে বিআইপির সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ দাবি করেন, সিটি করপোরেশনের বড় পরিকল্পনা কখনো ওয়ার্ডভিত্তিক পরিকল্পনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। তিনি বলেন, ওয়ার্ডের পরিকল্পনা ও সেবাসমূহ কাউন্সিলরের অফিসে ডিসপ্লে (প্রদর্শন) করতে হবে। তাতে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবে, তার ওয়ার্ডে কী কী নাগরিক সেবা দেওয়া হয়।

ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন বিআইপির যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ রাসেল কবির, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ বনি আহসান, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক এজেন্সি ইউএনএইচসিআর, কক্সবাজার-এর ন্যাশনাল সেটেলমেন্ট প্ল্যানিং অফিসার মো. সুলতান মাহমুদ, রংপুর সিটি করপোরেশনের শহর পরিকল্পনাবিদ নজরুল ইসলাম, পটুয়াখালী পৌরসভার শহর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইয়াসমিন, সিলেট সিটি করপোরেশনের শহর পরিকল্পনাবিদ তানভীর রহমান মোল্লা প্রমুখ।

ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসি ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খ. ম. মামুন রশিদ শুভ্র আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মেগা প্রকল্পগুলোয় ওয়ার্ডকে সমন্বয় করতে হবে। যেমন, মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভার হয়েছে, সেখানে আমাদের এলাকার মানুষ কীভাবে উঠবে বা নামবে সেটা রাখা হয়নি। যার কারণে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এখানে ড্রেনেরও সমস্যা আছে।’

মডেল ওয়ার্ড গড়তে ওয়ার্ডভিত্তিক পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ডিএনসিসি ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জনগণের কাছে কাউন্সিলরদের জবাবদিহি করতে হয়। ওয়ার্ডভিত্তিক সুষম উন্নয়নের জন্য ওয়ার্ডকেন্দ্রিক পরিকল্পনা দরকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত