অনিরাপদ ক্যাম্পাসে আতঙ্ক

সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২২, ১৪: ৫৩
Thumbnail image

ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর ডিগ্রি কলেজে গত বুধবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় অধ্যক্ষের কক্ষের দরজা ভাঙচুর করে কয়েকজন ছাত্র একজনকে ছুরিকাঘাত করেন।

কলেজের শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, কিছুদিন পরপরই এ ধরনের ঘটনায় কলেজ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কয়েক দিন আগেও কলেজের বাংলা বিভাগের এক শিক্ষকের সঙ্গে কয়েকজন ছাত্র অশোভন আচরণ করেন। কিন্তু এই বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। এ সব ঘটনায় ক্যাম্পাস অনিরাপদ হয়ে ওঠায় কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিক্ষক-কর্মচারীরাও আতঙ্কিত থাকেন।

কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কলেজে বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের কমিটি নেই। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতা পরিচয়ধারী বেশ কিছু নেতা রয়েছেন। তাঁরা আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে প্রায়ই নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। তবে কলেজে কোনো ছাত্র সংগঠনের নেতা আছে কি না তা জানা নেই কর্তৃপক্ষের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, কথা-কাটাকাটি, সংঘর্ষ, এমনকি শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা নিত্যদিনের ব্যাপার। এসব কারণে বর্তমানে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কলেজে আসতে প্রচণ্ড ভয় পাচ্ছি। এ ধরনের প্রায় সব বিষয়ই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাই অতিসত্বর কলেজ ক্যাম্পাসকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা প্রয়োজন। এতে অন্তত যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটায় তারা সতর্ক হবে। তা না হলে এ রকম একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

কলেজের হিসাবরক্ষক কামাল উদ্দিন বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই এর সমাধান দ্রুত প্রয়োজন।’

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি তাজপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির জের ধরে ছুরিকাঘাতে দুই শিক্ষার্থী আহত হন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী পরিচয়দানকারী আব্দুল মতিন (২১) সম্প্রতি কলেজ থেকে কৌশলে ছাড়পত্র নিয়ে, সিলেট সরকারি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সংঘর্ষে আহত আরেক ছাত্র চতুর্থ বর্ষের উজ্জ্বল মিয়া (২৪)।

এদিকে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন এবং দোষীদের চিহ্নিত করার জন্য কলেজের সহকারী অধ্যাপক আশুতোষ রঞ্জন দাসকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যরা হলেন প্রভাষক আবুল খায়ের, আমিনুল ইসলাম, শাহীন আলম ও আশরাফ আলী। গত বৃহস্পতিবার কলেজ স্টাফ কাউন্সিলের সভায় এই তদন্ত কমিটি গঠন হয়।

কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের পরিচালনায় সভায় ক্লাসের সুষ্ঠু পরিবেশ, শিক্ষক ও কর্মচারীদের যথাযথ নিরাপত্তার পরিবেশ ফিরে না আসা পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রকাশসহ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

এ ব্যাপারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মনু মিয়া বলেন, ‘কলেজ স্টাফ কাউন্সিলের সভায় আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনসহ থানায় লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত