Ajker Patrika

ড্রাগন ফলে ভাগ্যবদল

কাউছার আলম, পটিয়া (চট্টগ্রাম) 
ড্রাগন ফলে ভাগ্যবদল

পটিয়ার পাহাড়ে বাড়ছে ড্রাগন ফলের চাষ। অল্প সময়ে বেশি লাভজনক হওয়ায় অনেকেই অন্যান্য চাষাবাদ ছেড়ে বিদেশি এই ফল চাষে ঝুঁকছেন। পটিয়ার হাইদগাঁও ইউনিয়নের পূর্ব হাইদগাঁওয়ের পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা হয়েছে ২০ হাজার ড্রাগনগাছের একটি বাগান। এ টি আর অ্যাগ্রো ফার্মের মালিকানাধীন এ বাগানে এরই মধ্যে চার হাজার গাছে ফল এসেছে। সেই ফল বিক্রি করে চলতি বছর প্রায় তিন লাখ টাকা আয় হয়েছে। আগামী বছর আরও কয়েক হাজার গাছে ফল আসবে বলে আশা করছেন ফার্মটির মালিক আলহাজ নুরুল আলম মাস্টার।  

এ টি আর অ্যাগ্রো ফার্মের মালিকানাধীন এ বাগানের আয়তন ৩০ একর। এখানে চাষ করা হয়েছে থাই জাতের লাল ও হলুদ রঙের ড্রাগন ফলের ২০ হাজার চারা। এ ছাড়া বাগানটিতে আছে রাম্বুটান, থাই মাল্টা, বারোমাসি কাটিমন আম, থাই পেয়ারা, আম্রপালি আম, চিম্বুক জাতের আনারস, রেড লেডি পেঁপে, কাজুবাদাম, সরিফা, লেবু, কলাসহ অন্যান্য সাথি ফসল। ১৫ বছর আগে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি চাষ দিয়ে শুরু হয়েছিল এই ফার্মের যাত্রা। কিন্তু তা লাভজনক না হওয়ায় খামারটির মালিক নুরুল আলম মাস্টার শুরু করেছেন ড্রাগনসহ সাথি ফসলের চাষ।

নুরুল আলম মাস্টার বলেন, ‘এক যুগের বেশি সময় ধরে এটি ছিল মুরগির খামার। কয়েক বছর ধরে মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। মূলত লোকসানের কারণে খামারটি বন্ধ করে দিয়েছি।’ মুরগির খামার বন্ধের পর নুরুল আলম কৃষিনির্ভর ব্যতিক্রমী কিছু করার চিন্তা করেন। সেই চিন্তার সূত্র ধরে পটিয়ার পাহাড়ি ঢালে দুই বছর আগে ৩০ একর জায়গায় গড়ে তোলেন ড্রাগন ফলসহ বিভিন্ন জাতের দেশি-বিদেশি ফলের বাগান।

সেই বাগানে দুই বছর আগে চার হাজার ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করা হয়েছিল। সেগুলো বড় হয়ে এখন ফল দিচ্ছে। ড্রাগন ফল চাষে এ সাফল্য পেয়ে আরও উৎসাহিত হয়ে বাগান সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেন নুরুল আলম মাস্টার। এক বছর আগে বাগানে রোপণ করেন আরও ১২ হাজার ড্রাগনগাছ। তাতে ফল আসবে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে। এ ছাড়া বাগানটির পরামর্শক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রূপায়ণ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে আরও চার হাজার চারা রোপণ করে সেগুলো পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগানটির শ্রমিকেরা। রূপায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘বিদেশি ফল হিসেবে প্রথমে আশানুরূপ ফলন পাওয়া নিয়ে সন্দিহান ছিলাম। কিন্তু এখন চার হাজার গাছ থেকে ড্রাগন ফল পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রি করে লাভ হচ্ছে লাখ লাখ টাকাও।’

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রূপায়ণ চৌধুরী জানান, বিদেশি ফল হলেও পটিয়া এলাকার পাহাড়ি জলবায়ু ড্রাগন চাষের জন্য উপযোগী। এ ক্ষেত্রে নুরুল আলম মাস্টারের সফলতা প্রভাবিত করেছে স্থানীয় কৃষকদের। পোকামাকড়ের আক্রমণ কম এবং সেচ কম লাগায় পটিয়ার পাহাড়ি এলাকায় ড্রাগন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকেরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঠিকভাবে ড্রাগন চাষ করতে পারলে পটিয়া অঞ্চলের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক হাওয়া লাগতে পারে। এ ক্ষেত্রে শুধু নুরুল আলম মাস্টার নয়, ইতিবাচক বদল আসতে পারে পটিয়া অঞ্চলের সামগ্রিক কৃষি অর্থনীতিতে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত