Ajker Patrika

মাছের আঁশ ফেলনা নয়, যাচ্ছে বিদেশে

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) 
মাছের আঁশ ফেলনা নয়, যাচ্ছে বিদেশে

দেশের মানুষের অন্যতম প্রধান খাবার মাছ। এখন বাজারে মাছ কেনার পর দোকানিরাই আঁশ পরিষ্কার করে দিয়ে থাকেন। সেই আঁশ সাধারণত ফেলে দেওয়া হলেও দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে তা থেকে মিলছে বাড়তি আয়। রপ্তানি করা হচ্ছে বিদেশে।

মাছ ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার থেকে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই মণ ভেজা আঁশ সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।

ফুলবাড়ী পৌর মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, তাঁরা আগে মাছ কাটার পর আঁশগুলো ফেলে দিতেন। এখন তা জমা করে রাখছেন। উপজেলায় বর্তমানে মাছের ফেলে দেওয়া আঁশ সংগ্রহ ও কেনাবেচার কাজ করছেন ৫০ জনের মতো ব্যবসায়ী। এ ব্যক্তিরা হাটবাজার থেকে আঁশ সংগ্রহ করেন। এরপর সেগুলো বাড়িতে নিয়ে রোদে শুকিয়ে বস্তাজাত করে রাখেন। পরবর্তী সময়ে রাজশাহী, সৈয়দপুর ও নওগাঁ থেকে ক্রেতারা এসে সেগুলো নিয়ে যান। পরে ঢাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা সেগুলো সংগ্রহ করে দেশের বাইরে রপ্তানি করেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাজার থেকে সংগ্রহ করা মাছের আঁশ দিয়ে উন্নতমানের প্রসাধনী, ফুড সাপ্লিমেন্ট, ক্যাপসুলের ক্যাপসহ জরুরিসামগ্রী তৈরি করা হয়।
আঁশ সংগ্রহকারী ব্যবসায়ী সোমবারু মিয়া, রেজাউল ইসলাম ও মোজাফ্ফর হোসেন জানান, চার থেকে পাঁচ মণ আঁশ জমা হলে পাইকারেরা বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যান। প্রতি কেজি প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে করোনা মহামারির আগে এগুলো ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দরপতনের কারণেই এর দাম এখন কম।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, সরাসরি রপ্তানির সুযোগ না থাকায় তাঁরা কাঙ্ক্ষিত লাভ করতে পারছেন না। ভবিষ্যতে যদি সরাসরি রপ্তানির সুযোগ পান, তবে আশানুরূপ লাভবান হবেন এবং ব্যবসার পরিধির সম্প্রসারণ ঘটবে বলে তাঁরা আশাবাদী।

পৌরবাজারের পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার জানান, স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীদের আঁশগুলো ফেলে না দিয়ে যত্নসহকারে জমিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। আগে সৈয়দপুর, নওগাঁ, রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে পাইকারেরা এসে এগুলো নিয়ে যেতেন। কিন্তু এখন স্থানীয়ভাবেই তা সংগ্রহের ব্যবসায় অর্ধশত ব্যক্তি যুক্ত হয়েছেন। এটি তাঁরা সরাসরি বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে লাভ অনেক বেশি হবে। এতে সরকারি সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন।

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার জানান, মাছের আঁশ সংগ্রহ ও বিক্রির বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে আঁশ বেচে যদি আয় হয় এটি একটি ভালো দিক। বিষয়টি ভালোভাবে জেনে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত