Ajker Patrika

দোকান বন্ধ হলেও রাতভর চলে ডিজিটাল সাইনবোর্ড

নাজিম উদ্দিন ইমন, কেরানীগঞ্জ (ঢাকা)
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২২, ১৩: ০৬
দোকান বন্ধ হলেও রাতভর চলে ডিজিটাল সাইনবোর্ড

সারা দেশের মতো ঢাকার কেরানীগঞ্জেও বেড়েছে লোডশেডিং। জানা গেছে, উপজেলায় গড় বিদ্যুতের চাহিদা ১৫৫-১৫৬ মেগাওয়াট। চলমান সংকটের কারণে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২৬ শতাংশ লোডশেডিং হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, জনসচেতনা বাড়লে এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হলে কেরানীগেঞ্জে বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসবে, ফলে লোডশেডিংও কম হবে। তা ছাড়া অপ্রয়োজনে বিদ্যুৎ ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যুৎ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, জ্বালানি তেলের লোকসান কমাতে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে গড়ে প্রায় ১ হাজার মেগাওয়াট। সে কারণে পর্যায়ক্রমে সারা দেশে বেড়েছে লোডশেডিং। গ্যাস-সংকট থাকায় মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার মেগাওয়াট।

কেরানীগঞ্জের বাসিন্দাদের দাবি, কেরানীগঞ্জে বেশির ভাগ শপিং মল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ হয়ে গেলেও রাস্তার মোড়ে এবং বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লাগানো বৈদ্যুতিক সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড ও ডিজিটাল বোর্ডগুলো জ্বলে সারা রাত। এতে বিদ্যুতের ব্যাপক অপচয় হয়। তা ছাড়া কেরানীগঞ্জজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশা। এসব অটোরিকশা চার্জিং স্টেশন বা গ্যারেজেও চুরি হয় বিদ্যুৎ। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে সাইনবোর্ড এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার গ্যারেজ বন্ধ করে দিলে কোনো লোডশেডিং থাকবে না বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কেরানীগঞ্জের প্রতিটি ব্যস্ততম এলাকায় রয়েছে ডিজিটাল সাইনবোর্ড। এ ছাড়া ছোট-বড় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের সামনেই লাগিয়ে রাখা হয়েছে ডিজিটাল বৈদ্যুতিক সাইনবোর্ড, যা সারা রাত জ্বলে। এ ছাড়া উপজেলার গার্মেন্ট পল্লি এলাকায় বিভিন্ন ভবনের ওপরে রয়েছে বিশাল আকৃতির একাধিক ডিজিটাল সাইনবোর্ড। উপজেলার বৃহত্তম শপিং মল লায়ন শপার্স ওয়ার্ল্ড ও আনোয়ার সিটি ম্যাজিক আইল্যান্ডে সারা দিন চলতে থাকে বিশাল আকৃতির বৈদ্যুতিক এলইডি বিলবোর্ড। এসব বিলবোর্ডে সারা দিনই চলতে থাকে বিজ্ঞাপন।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস-৪) জেনারেল ম্যানেজার আবুল বাসার আজাদ বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা ১৫৫-১৫৬ মেগাওয়াট। গতকাল (বুধবার) আমরা চাহিদার তুলনায় ৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পেয়েছি, আমাদের গড় লোডশেডিং ২৬ শতাংশ। ৩০-৩৫ শতাংশ লোডশেডিং হিসেবে শিডিউল দিয়েছিলাম। প্রথম দিকে লোডশেডিং বেশি হলেও এখন অনেকটা কমেছে, ফলে শাটডাউনও কম।’

আবুল বাসার আজাদ আরও বলেন, ‘আমাদের এলাকাভিত্তিক মনিটরিং টিম রয়েছে, যারা রাত ৮টার পর এলাকায় টহল দেয়। চুরি করে গ্যারেজে বিদ্যুৎ ব্যবহার সম্ভব নয়।’

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে হবে। আর এ কাজে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। জরুরি সেবা ছাড়া বাকি সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জা বন্ধ রাখতে আমাদের নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত