Ajker Patrika

নির্মমতার মধ্যেই উড়তে শুরু করে বিজয় কেতন

এ আর চন্দন, ঢাকা
নির্মমতার মধ্যেই উড়তে শুরু করে বিজয় কেতন

আবার ফিরে এল বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ৪ লাখের বেশি মা-বোনের বুকচাপা আর্তনাদের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার স্বাক্ষর এই মাস প্রতিবছর দেশব্যাপী উদ্‌যাপন করা হয় নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।

১৯৭১ সালে ডিসেম্বরের শুরু থেকেই দেশের নানা প্রান্তে উড়তে শুরু করেছিল বিজয় নিশান। ১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় দিনাজপুরের ময়দান দিঘির কাছে পুটিমারীতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর ওপর সম্মিলিতভাবে আক্রমণ চালায় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনী। তাতে মুক্তিবাহিনীর ৫ জন এবং ভারতীয় বাহিনীর ৫৫ জন হতাহত হন। এরপর যৌথবাহিনী ময়দান দিঘি দখল করে নেয়। সেদিন বিকেলে যৌথবাহিনী বোদা থানার কাছে পৌঁছে হানাদার বাহিনীর মূল আস্তানা আক্রমণ করলে প্রচণ্ড যুদ্ধ বাধে। সন্ধ্যায়ই মুক্ত হয় বোদা থানা।

সিলেটের শমশেরনগরে শেষ রাতের দিকে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা চালালে হানাদার বাহিনী ওই এলাকা থেকে পালাতে শুরু করে। পরে মুক্তিবাহিনী টেংরাটিলা ও দুয়ারাবাজার মুক্ত ঘোষণা করে।

একাত্তরের ডিসেম্বরে মুক্তিবাহিনীর অগ্রযাত্রা শুরু হলেও থামেনি হানাদার বাহিনীর বর্বরতা। ওই দিন নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গেরিলা তৎপরতা বাড়ায় পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তার নির্দেশে সামরিক বাহিনীর লোকেরা পুনরায় গ্রামবাসীদের হত্যা এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো বর্বর অভিযান শুরু করেছে। গেরিলা সন্দেহে জিঞ্জিরার কতজন যুবককে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে হত্যা করেছে, তার সঠিক হিসাব নেই। বুড়িগঙ্গার অপর পারের এই গ্রামে সামরিক বাহিনীর লোকেরা অন্তত ৮৭ জনকে হত্যা করেছে।...নারী এবং শিশুরাও ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি।’

স্বাধীনতাযুদ্ধের শেষ লগ্নের এই দিনে ঘোড়াশালের পাশে শীতলক্ষ্যা তীরে ন্যাশনাল জুট মিলের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও স্বজনদের আরেকটি নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী নাট্যকর্মী ম. জিল্লুর রহমান। তাঁর ভাষ্যমতে, সেদিন বেলা ১১টার দিকে হানাদার বাহিনীর ১৩০-১৪০ জনের একটি দল জুট মিলে ঢুকে পড়ে। তারা মিলের সব কর্মচারীকে বন্দুকের মুখে কোয়ার্টার থেকে বের করে শীতলক্ষ্যা তীরে লাইন করে দাঁড় করায়। সেখানে নিহত হয়েছিলেন জিল্লুরের ছোট ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান মিজুও। রশীদ হায়দার সম্পাদিত ‘১৯৭১: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা’ গ্রন্থে জিল্লুরের বর্ণনা: ‘রাইফেল কিংবা স্টেনগানের গুলির শব্দে সচকিত হলাম। দেখলাম ঘন ঘাসের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়লো মিজু। উঠবার চেষ্টা করতেই আরো গুলি এসে বিঁধলো ওর শরীরে, আবারো পড়ে গেল। আর ঐ সঙ্গেই শুরু হলো দানবীয় এক সন্ত্রাস।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত