Ajker Patrika

দেশের স্বার্থে কাজের শপথ নিলেন তাঁরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১২: ১২
Thumbnail image

দিনাজপুর সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ। পিতা হায়দার আলী পেশায় রিকশাচালক। জন্মের পর থেকে শুনে এসেছেন ঘুষ ছাড়া পুলিশে চাকরি হয় না। নেহাতই যদি হয় এ আশাতেই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। শেষে কোনো টাকা ছাড়াই পুলিশের চাকরি পাওয়ায় খুশি তিনি। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দেশের জন্য কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নাহিদ।

চাকরি পেয়েছেন মাতৃহীনা বর্ষা রানি রায়। বাড়িতে রান্না-রান্নার কাজ শেষ করে চলে আসেন বীরগঞ্জে। প্রাইভেট ও কলেজের ক্লাস শেষে বাড়িতে ফিরতে ফিরতে বিকেল। আবার খাওয়া দাওয়া শেষে বসে যান রাতের রান্নায়। পেশায় কৃষক বাবা খুব বেশি সাহায্য করতে পারেন না কোনো কাজেই। বর্ষার কাছে পুলিশের ওই চাকরিটা যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়ার মতোই। দিনাজপুর সদরের কাউগাঁওয়ে নানির বাড়িতে থেকে বড় হয়েছেন রাকিবুল। তিনিও এবার বিনা টাকায় পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন।

গতকাল শনিবার সকালে দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন নির্বাচিতরা।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, ১৩ হাজারেরও বেশি আবেদনকারীর মধ্যে সকল প্রকার যাচাই বাছাই ও পরীক্ষা শেষে নির্বাচিত হয়েছেন ৬২ জন। এঁদের মধ্যে নয়জন নারী ও ৫৩ জন পুরুষ। গত শুক্রবার মৌখিক পরীক্ষা শেষে রাত ১১টার দিকে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত ৬২ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিপিএম, পিপিএম (বার) জানান, শারীরিক যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছতার মাধ্যমে কনস্টেবল নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে।

এ সময় চাকরিপ্রাপ্তরা জানান, তাঁরা সবাই কোনো ঘুষ ছাড়াই মেধায় চাকরি পেয়েছেন। দেশের জন্য নিবেদিত হয়ে পুলিশ বিভাগের সম্মান ধরে রেখে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তাঁরা।

মেধায় চাকুরী পাওয়া বর্ষা রাণী রায়ের পিতা শ্যামল রানী রায় জানান, আমি একজন কৃষক মানুষ। আমার মেয়ে এভাবে সরকারী চাকরী পাবে এটা আমি কল্পনাও করিনি। আমি এজন্য সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত