Ajker Patrika

কষ্টের সুফল পেলেন স্মৃতি তবু দুশ্চিন্তায় মা-বাবা

মো. আতাউর রহমান, জয়পুরহাট
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৪২
Thumbnail image

দিনমজুর বাবার পরিবারে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন স্মৃতি পারভীন। তবে আর্থিক অনটনের কারণে তাঁর চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

স্মৃতি জয়পুরহাট সদর উপজেলার হরিপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আলাউদ্দীনের মেয়ে। তিনি এবার হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁকে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ভর্তি হতে হবে।

স্মৃতির এই সাফল্যে তাঁর মা-বাবা খুশি হলেও রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। কারণ, তাঁদের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। বাবা আলাউদ্দীন দিনমজুরি করে মেয়ের পড়াশোনাসহ সংসারের অন্যান্য খরচ চালান। মা-বাবা জানতে পেরেছেন, মেডিকেলে পড়তে ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হয়। এই খরচের কথা ভেবে তাঁরা এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন।

স্মৃতি পারভীন হরিপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে এসএসসি এবং জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে ২০২১ সালে এইচএসসি পাস করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি জিপিএ-৫ পান।

স্মৃতি বলেন, ‘লেখাপড়া করতে গিয়ে প্রতিদিন অনেক কষ্ট করেছি। টিফিন খাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। বাড়ি থেকে ভাত খেয়ে কলেজে গেছি। আবার কলেজ থেকে ফিরে এসে ভাত খেয়েছি। ক্ষুধায় অনেক দিন পেটের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠত। কিন্তু সেই কষ্ট নীরবে সহ্য করেছি। এভাবেই লেখাপড়া করেছি। যার সুফল আমি পেয়েছি। মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। এ জন্য বাবা-মা যেমন আনন্দিত, তেমনি তাঁরা চিন্তিত। পড়ার খরচ চালানো নিয়ে তাঁদের হতাশাগ্রস্ত মুখ দেখে আমিও কষ্ট পাচ্ছি।’

বাবা আলাউদ্দীন বলেন, ‘চিন্তা একটাই। সেটা হলো দিনমজুরের কাজ আর সামান্য ১৩ শতক জায়গা বিক্রি করে মেয়েটিকে পড়ালেখা করাতে পারব তো? বারবার এ কথা ভেবে হতাশ হচ্ছি।’

হরিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘স্কুলজীবনে স্মৃতির পড়ালেখার সব খরচ ফ্রি করে দিয়েছিলাম। তার শিক্ষক হিসেবে আমরা গর্বিত। আমাদের প্রত্যাশা, দেশের হৃদয়বান মানুষ স্মৃতির চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নপূরণে তার পাশে দাঁড়াবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত