শাইখ সিরাজ

বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও খাদ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে কৃষির অপরিহার্যতা অপরিবর্তিত রয়েছে। জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩-১৪ শতাংশ হলেও সাম্প্রতিক শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, শ্রমশক্তির ৪৪ শতাংশ এখনো কৃষিতে নিয়োজিত, মানে কৃষি এখনো বিনিয়োগের বড় ক্ষেত্র।
এই সময়ে এসে আমরা আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার কোন স্তরে রয়েছি, যে ক্ষুধাকে জয় করার জন্য আমরা জীবন বাজি রেখে স্বাধীন হয়েছি...এই ৫২ বছরে আমরা তার কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি? খাদ্যনিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের আগামী পরিকল্পনাটাই বা কী? মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা কণ্ঠে তুলেছি স্বাধীনতা দুর্বার ইচ্ছার গান—
বাংলার প্রতি ঘর ভরে দিতে চাই মোরা অন্নে
আমাদের রক্তে টগবগ দুলছে মুক্তির রিক্ত তারুণ্যে
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষুধামুক্তির। একটি আত্মনির্ভরশীল জাতিতে পরিণত হওয়া। মূলত স্বাধীনতার সংগ্রাম ছিল কৃষকের...শ্রমিকের...সাধারণ মানুষের। পরাধীনতার শিকল ছিঁড়ে যে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনা হয়েছে...এই বিজয় অর্জিত হয়েছে তাদের রক্তের দামে। দুবেলা দুমুঠো ভাতের নিশ্চয়তা চেয়েই আমাদের সংগ্রাম আজও চলমান।
১৯৭১ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি (৭৫ মিলিয়ন, ইউএনএফপিএ, ২০২০)। সেই সময় খাদ্যঘাটতি ছিল ২৫-৩০ লাখ টন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কৃষির ওপর ব্যাপক গুরুত্বারোপ করা হয়। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করাই ছিল স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য। তাই স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে আমাদের স্লোগান হয়ে ওঠে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কৃষিকে ঘিরেই ছিল সে সময়কার উন্নয়নচিন্তা। কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাও ছিল।
পরে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলে তৈরি পোশাক খাত চলে এলেও কৃষি সব সময়ই শক্তিশালী খুঁটি হিসেবে কাজ করেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের ৩৪ দশমিক ৫ কোটি মানুষ তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছে। বিশ্বের যখন এই পরিস্থিতি, তখন খাদ্যনিরাপত্তার দিকে জোর দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। খাদ্যনিরাপত্তার সবচেয়ে বড় বাধা জলবায়ু পরিবর্তন। একে কীভাবে মোকাবিলা করে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেই পরিকল্পনা করতে হবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বীজের গজানো, পরাগায়ন, ফুল ও ফল ধরা, পরিপক্ব হতে সুনির্দিষ্ট তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ও সূর্যের আলো দরকার। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দীর্ঘ সময় খরা থাকছে। অথবা অসময়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, হচ্ছে বন্যা। শীতকাল কম হচ্ছে বা বেশি হচ্ছে। এভাবে ফসল ফলানোর জন্য উপাদানগুলো পরিবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু বীজ বপন ও চারা রোপণের সময় পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। ফলে শস্য উৎপাদনে নানামুখী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কৃষকেরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ুর কারণে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে। আর এ কারণে গম, ছোলা, মসুর, মুগ ডালসহ কিছু কিছু ফসলের উৎপাদন কমে গেছে।
বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ। এ পর্যন্ত লবণাক্ততা, খরা, প্লাবনসহিষ্ণু এবং জিঙ্কসমৃদ্ধ ১৩৪টি উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে আমাদের রয়েছে লবণ, খরা, বন্যাসহিষ্ণু ধানের জাত। তবে সময় এসেছে এই জাতগুলোর সহনশীল ক্ষমতা আবার পরীক্ষা করার। প্রয়োজনে নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে। আমাদের বিজ্ঞানী এবং নীতিনির্ধারকদের সময় জয় করে চলতে হবে। যেকোনো বিপদের আগাম দিকটাও মাথায় রেখে এসব প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে যেতে হবে।
যেমন কার্তিকে যে মঙ্গা হতো দেশের উত্তরাঞ্চলে, সেই মঙ্গাকে প্রতিহত করা গেছে একাধিক স্বল্পমেয়াদি (শর্ট ডিউরেশন ভ্যারাইটি) ধানের জাত দিয়ে। ব্রি ধান ৩৩, ৩৯ এবং বিনা ধান ৭, এগুলো আগাম জাতের স্বল্পমেয়াদি ধান; যা কার্তিক আসার আগেই কৃষক ঘরে তুলতে পারেন। নতুন জাতের এই ধান দিয়ে মঙ্গাকে জয় করেছে স্থানীয় কৃষক। এই সফলতা দেখিয়েছেন আমাদের ধান বিজ্ঞানীরা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, হাওরাঞ্চলের জন্য স্বল্পমেয়াদি বোরো ধানের কোনো জাত আছে কি না? আমার জানামতে নেই। তবে ব্রির মহাপরিচালক ড. শাজাহান কবীর বলেছেন, খুব শিগগির তাঁরা হাওরাঞ্চলের জন্য স্বল্পমেয়াদি উচ্চফলনশীল ধান কৃষক পর্যায়ে দিতে পারবেন। ষাট-সত্তর-আশির দশকে কৃষক আইআর-৮ জাতের ধান চাষ করতেন হাওরাঞ্চলে; যার মেয়াদকাল লাগানোর পর থেকে কাটা পর্যন্ত ১৭০ দিন। পরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিআর-২৮ ও ২৯ জাত বোরো মৌসুমের জন্য উফশী জাত হিসেবে চাষ করলেন কৃষক। বিআর-২৮ লাগানোর পর থেকে ১৪০ এবং ১৬০ দিনে বিআর-২৯ ফসল কাটা যায়। সাধারণত হাওরের কৃষক বিআর-২৮-এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়লেন বেশি। কারণ আগাম বন্যার পানি আসার আগেই তাঁরা ফসল তুলতে পারেন।
কৃষি-বাণিজ্য আগামীর অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে। এই উপলব্ধি থেকেই উন্নত বিশ্ব নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। আমাদের ডেলটা প্ল্যান তথা বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০তেও কৃষিকে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য কৃষিকে টেকসই ও নিরাপদ করে খাদ্য এবং পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি খাতে নেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। ‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ নামের এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। এটি কৃষির উন্নয়নে এ পর্যন্ত নেওয়া সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এই প্রকল্পগুলো সত্যিকার অর্থে যথাযথ বাস্তবায়ন করা গেলে বাণিজ্যিক কৃষির যেমন নতুন ধারা তৈরি হবে, তেমনি বাড়বে জিডিপিতে কৃষির অবদান।
তবে বাংলাদেশের কৃষক অসম্ভবকে সম্ভব করার মতোই কাজ করেছেন। করোনার মতো বড় অভিঘাত যা বিশ্ব অর্থনীতিকে তছনছ করে দিয়েছে। এরপর বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহের মতো সময়েও আমাদের খাদ্য উৎপাদনের ধারাবাহিকতা সমুন্নত রেখেছেন বাংলাদেশের কৃষক। যদিও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আমাদের কিছুটা বিচলিত করেছে। কিন্তু বিশ্বমহলের খাদ্যঘাটতির ইঙ্গিতকে পাশ কাটিয়ে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখেছে আমাদের কৃষি উৎপাদন।
‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে আজ খাদ্য স্বয়ম্ভরতার দিকে বাংলাদেশ। এই সময়ে ধান-পাট চাষের দেশটি কৃষি বৈচিত্র্যে অনন্য হয়ে উঠেছে। শুধু ফসল কৃষিই নয়, পোলট্রি, গবাদি পশু, মৎস্য খাতের অনন্য সাফল্য খাদ্যনিরাপত্তার বলয় রচনা করেছে। বছর দশেক আগেও উত্তরাঞ্চলের ভয়াবহ মঙ্গা আজ গল্পের মতো শোনায়। এই সাফল্য কৃষকের, গবেষকের, সরকারের সময়োপযোগী পরিকল্পনার।
আজকের পর্বে শুধু আমাদের মূল ফসল ধানের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, সংকট ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছি। বিশ্বাস করি—একটি সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনার ভেতর দিয়ে রচিত হবে আগামীর খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষিভিত্তিক টেকসই অর্থনীতি।

বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও খাদ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে কৃষির অপরিহার্যতা অপরিবর্তিত রয়েছে। জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩-১৪ শতাংশ হলেও সাম্প্রতিক শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, শ্রমশক্তির ৪৪ শতাংশ এখনো কৃষিতে নিয়োজিত, মানে কৃষি এখনো বিনিয়োগের বড় ক্ষেত্র।
এই সময়ে এসে আমরা আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার কোন স্তরে রয়েছি, যে ক্ষুধাকে জয় করার জন্য আমরা জীবন বাজি রেখে স্বাধীন হয়েছি...এই ৫২ বছরে আমরা তার কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি? খাদ্যনিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের আগামী পরিকল্পনাটাই বা কী? মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা কণ্ঠে তুলেছি স্বাধীনতা দুর্বার ইচ্ছার গান—
বাংলার প্রতি ঘর ভরে দিতে চাই মোরা অন্নে
আমাদের রক্তে টগবগ দুলছে মুক্তির রিক্ত তারুণ্যে
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষুধামুক্তির। একটি আত্মনির্ভরশীল জাতিতে পরিণত হওয়া। মূলত স্বাধীনতার সংগ্রাম ছিল কৃষকের...শ্রমিকের...সাধারণ মানুষের। পরাধীনতার শিকল ছিঁড়ে যে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনা হয়েছে...এই বিজয় অর্জিত হয়েছে তাদের রক্তের দামে। দুবেলা দুমুঠো ভাতের নিশ্চয়তা চেয়েই আমাদের সংগ্রাম আজও চলমান।
১৯৭১ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি (৭৫ মিলিয়ন, ইউএনএফপিএ, ২০২০)। সেই সময় খাদ্যঘাটতি ছিল ২৫-৩০ লাখ টন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কৃষির ওপর ব্যাপক গুরুত্বারোপ করা হয়। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করাই ছিল স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য। তাই স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে আমাদের স্লোগান হয়ে ওঠে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কৃষিকে ঘিরেই ছিল সে সময়কার উন্নয়নচিন্তা। কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাও ছিল।
পরে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলে তৈরি পোশাক খাত চলে এলেও কৃষি সব সময়ই শক্তিশালী খুঁটি হিসেবে কাজ করেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের ৩৪ দশমিক ৫ কোটি মানুষ তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছে। বিশ্বের যখন এই পরিস্থিতি, তখন খাদ্যনিরাপত্তার দিকে জোর দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। খাদ্যনিরাপত্তার সবচেয়ে বড় বাধা জলবায়ু পরিবর্তন। একে কীভাবে মোকাবিলা করে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেই পরিকল্পনা করতে হবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বীজের গজানো, পরাগায়ন, ফুল ও ফল ধরা, পরিপক্ব হতে সুনির্দিষ্ট তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ও সূর্যের আলো দরকার। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দীর্ঘ সময় খরা থাকছে। অথবা অসময়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, হচ্ছে বন্যা। শীতকাল কম হচ্ছে বা বেশি হচ্ছে। এভাবে ফসল ফলানোর জন্য উপাদানগুলো পরিবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু বীজ বপন ও চারা রোপণের সময় পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। ফলে শস্য উৎপাদনে নানামুখী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কৃষকেরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ুর কারণে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে। আর এ কারণে গম, ছোলা, মসুর, মুগ ডালসহ কিছু কিছু ফসলের উৎপাদন কমে গেছে।
বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ। এ পর্যন্ত লবণাক্ততা, খরা, প্লাবনসহিষ্ণু এবং জিঙ্কসমৃদ্ধ ১৩৪টি উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে আমাদের রয়েছে লবণ, খরা, বন্যাসহিষ্ণু ধানের জাত। তবে সময় এসেছে এই জাতগুলোর সহনশীল ক্ষমতা আবার পরীক্ষা করার। প্রয়োজনে নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে। আমাদের বিজ্ঞানী এবং নীতিনির্ধারকদের সময় জয় করে চলতে হবে। যেকোনো বিপদের আগাম দিকটাও মাথায় রেখে এসব প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে যেতে হবে।
যেমন কার্তিকে যে মঙ্গা হতো দেশের উত্তরাঞ্চলে, সেই মঙ্গাকে প্রতিহত করা গেছে একাধিক স্বল্পমেয়াদি (শর্ট ডিউরেশন ভ্যারাইটি) ধানের জাত দিয়ে। ব্রি ধান ৩৩, ৩৯ এবং বিনা ধান ৭, এগুলো আগাম জাতের স্বল্পমেয়াদি ধান; যা কার্তিক আসার আগেই কৃষক ঘরে তুলতে পারেন। নতুন জাতের এই ধান দিয়ে মঙ্গাকে জয় করেছে স্থানীয় কৃষক। এই সফলতা দেখিয়েছেন আমাদের ধান বিজ্ঞানীরা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, হাওরাঞ্চলের জন্য স্বল্পমেয়াদি বোরো ধানের কোনো জাত আছে কি না? আমার জানামতে নেই। তবে ব্রির মহাপরিচালক ড. শাজাহান কবীর বলেছেন, খুব শিগগির তাঁরা হাওরাঞ্চলের জন্য স্বল্পমেয়াদি উচ্চফলনশীল ধান কৃষক পর্যায়ে দিতে পারবেন। ষাট-সত্তর-আশির দশকে কৃষক আইআর-৮ জাতের ধান চাষ করতেন হাওরাঞ্চলে; যার মেয়াদকাল লাগানোর পর থেকে কাটা পর্যন্ত ১৭০ দিন। পরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিআর-২৮ ও ২৯ জাত বোরো মৌসুমের জন্য উফশী জাত হিসেবে চাষ করলেন কৃষক। বিআর-২৮ লাগানোর পর থেকে ১৪০ এবং ১৬০ দিনে বিআর-২৯ ফসল কাটা যায়। সাধারণত হাওরের কৃষক বিআর-২৮-এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়লেন বেশি। কারণ আগাম বন্যার পানি আসার আগেই তাঁরা ফসল তুলতে পারেন।
কৃষি-বাণিজ্য আগামীর অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে। এই উপলব্ধি থেকেই উন্নত বিশ্ব নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। আমাদের ডেলটা প্ল্যান তথা বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০তেও কৃষিকে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য কৃষিকে টেকসই ও নিরাপদ করে খাদ্য এবং পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি খাতে নেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। ‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ নামের এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। এটি কৃষির উন্নয়নে এ পর্যন্ত নেওয়া সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এই প্রকল্পগুলো সত্যিকার অর্থে যথাযথ বাস্তবায়ন করা গেলে বাণিজ্যিক কৃষির যেমন নতুন ধারা তৈরি হবে, তেমনি বাড়বে জিডিপিতে কৃষির অবদান।
তবে বাংলাদেশের কৃষক অসম্ভবকে সম্ভব করার মতোই কাজ করেছেন। করোনার মতো বড় অভিঘাত যা বিশ্ব অর্থনীতিকে তছনছ করে দিয়েছে। এরপর বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহের মতো সময়েও আমাদের খাদ্য উৎপাদনের ধারাবাহিকতা সমুন্নত রেখেছেন বাংলাদেশের কৃষক। যদিও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আমাদের কিছুটা বিচলিত করেছে। কিন্তু বিশ্বমহলের খাদ্যঘাটতির ইঙ্গিতকে পাশ কাটিয়ে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখেছে আমাদের কৃষি উৎপাদন।
‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে আজ খাদ্য স্বয়ম্ভরতার দিকে বাংলাদেশ। এই সময়ে ধান-পাট চাষের দেশটি কৃষি বৈচিত্র্যে অনন্য হয়ে উঠেছে। শুধু ফসল কৃষিই নয়, পোলট্রি, গবাদি পশু, মৎস্য খাতের অনন্য সাফল্য খাদ্যনিরাপত্তার বলয় রচনা করেছে। বছর দশেক আগেও উত্তরাঞ্চলের ভয়াবহ মঙ্গা আজ গল্পের মতো শোনায়। এই সাফল্য কৃষকের, গবেষকের, সরকারের সময়োপযোগী পরিকল্পনার।
আজকের পর্বে শুধু আমাদের মূল ফসল ধানের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, সংকট ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছি। বিশ্বাস করি—একটি সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনার ভেতর দিয়ে রচিত হবে আগামীর খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষিভিত্তিক টেকসই অর্থনীতি।
শাইখ সিরাজ

বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও খাদ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে কৃষির অপরিহার্যতা অপরিবর্তিত রয়েছে। জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩-১৪ শতাংশ হলেও সাম্প্রতিক শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, শ্রমশক্তির ৪৪ শতাংশ এখনো কৃষিতে নিয়োজিত, মানে কৃষি এখনো বিনিয়োগের বড় ক্ষেত্র।
এই সময়ে এসে আমরা আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার কোন স্তরে রয়েছি, যে ক্ষুধাকে জয় করার জন্য আমরা জীবন বাজি রেখে স্বাধীন হয়েছি...এই ৫২ বছরে আমরা তার কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি? খাদ্যনিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের আগামী পরিকল্পনাটাই বা কী? মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা কণ্ঠে তুলেছি স্বাধীনতা দুর্বার ইচ্ছার গান—
বাংলার প্রতি ঘর ভরে দিতে চাই মোরা অন্নে
আমাদের রক্তে টগবগ দুলছে মুক্তির রিক্ত তারুণ্যে
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষুধামুক্তির। একটি আত্মনির্ভরশীল জাতিতে পরিণত হওয়া। মূলত স্বাধীনতার সংগ্রাম ছিল কৃষকের...শ্রমিকের...সাধারণ মানুষের। পরাধীনতার শিকল ছিঁড়ে যে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনা হয়েছে...এই বিজয় অর্জিত হয়েছে তাদের রক্তের দামে। দুবেলা দুমুঠো ভাতের নিশ্চয়তা চেয়েই আমাদের সংগ্রাম আজও চলমান।
১৯৭১ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি (৭৫ মিলিয়ন, ইউএনএফপিএ, ২০২০)। সেই সময় খাদ্যঘাটতি ছিল ২৫-৩০ লাখ টন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কৃষির ওপর ব্যাপক গুরুত্বারোপ করা হয়। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করাই ছিল স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য। তাই স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে আমাদের স্লোগান হয়ে ওঠে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কৃষিকে ঘিরেই ছিল সে সময়কার উন্নয়নচিন্তা। কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাও ছিল।
পরে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলে তৈরি পোশাক খাত চলে এলেও কৃষি সব সময়ই শক্তিশালী খুঁটি হিসেবে কাজ করেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের ৩৪ দশমিক ৫ কোটি মানুষ তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছে। বিশ্বের যখন এই পরিস্থিতি, তখন খাদ্যনিরাপত্তার দিকে জোর দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। খাদ্যনিরাপত্তার সবচেয়ে বড় বাধা জলবায়ু পরিবর্তন। একে কীভাবে মোকাবিলা করে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেই পরিকল্পনা করতে হবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বীজের গজানো, পরাগায়ন, ফুল ও ফল ধরা, পরিপক্ব হতে সুনির্দিষ্ট তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ও সূর্যের আলো দরকার। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দীর্ঘ সময় খরা থাকছে। অথবা অসময়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, হচ্ছে বন্যা। শীতকাল কম হচ্ছে বা বেশি হচ্ছে। এভাবে ফসল ফলানোর জন্য উপাদানগুলো পরিবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু বীজ বপন ও চারা রোপণের সময় পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। ফলে শস্য উৎপাদনে নানামুখী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কৃষকেরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ুর কারণে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে। আর এ কারণে গম, ছোলা, মসুর, মুগ ডালসহ কিছু কিছু ফসলের উৎপাদন কমে গেছে।
বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ। এ পর্যন্ত লবণাক্ততা, খরা, প্লাবনসহিষ্ণু এবং জিঙ্কসমৃদ্ধ ১৩৪টি উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে আমাদের রয়েছে লবণ, খরা, বন্যাসহিষ্ণু ধানের জাত। তবে সময় এসেছে এই জাতগুলোর সহনশীল ক্ষমতা আবার পরীক্ষা করার। প্রয়োজনে নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে। আমাদের বিজ্ঞানী এবং নীতিনির্ধারকদের সময় জয় করে চলতে হবে। যেকোনো বিপদের আগাম দিকটাও মাথায় রেখে এসব প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে যেতে হবে।
যেমন কার্তিকে যে মঙ্গা হতো দেশের উত্তরাঞ্চলে, সেই মঙ্গাকে প্রতিহত করা গেছে একাধিক স্বল্পমেয়াদি (শর্ট ডিউরেশন ভ্যারাইটি) ধানের জাত দিয়ে। ব্রি ধান ৩৩, ৩৯ এবং বিনা ধান ৭, এগুলো আগাম জাতের স্বল্পমেয়াদি ধান; যা কার্তিক আসার আগেই কৃষক ঘরে তুলতে পারেন। নতুন জাতের এই ধান দিয়ে মঙ্গাকে জয় করেছে স্থানীয় কৃষক। এই সফলতা দেখিয়েছেন আমাদের ধান বিজ্ঞানীরা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, হাওরাঞ্চলের জন্য স্বল্পমেয়াদি বোরো ধানের কোনো জাত আছে কি না? আমার জানামতে নেই। তবে ব্রির মহাপরিচালক ড. শাজাহান কবীর বলেছেন, খুব শিগগির তাঁরা হাওরাঞ্চলের জন্য স্বল্পমেয়াদি উচ্চফলনশীল ধান কৃষক পর্যায়ে দিতে পারবেন। ষাট-সত্তর-আশির দশকে কৃষক আইআর-৮ জাতের ধান চাষ করতেন হাওরাঞ্চলে; যার মেয়াদকাল লাগানোর পর থেকে কাটা পর্যন্ত ১৭০ দিন। পরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিআর-২৮ ও ২৯ জাত বোরো মৌসুমের জন্য উফশী জাত হিসেবে চাষ করলেন কৃষক। বিআর-২৮ লাগানোর পর থেকে ১৪০ এবং ১৬০ দিনে বিআর-২৯ ফসল কাটা যায়। সাধারণত হাওরের কৃষক বিআর-২৮-এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়লেন বেশি। কারণ আগাম বন্যার পানি আসার আগেই তাঁরা ফসল তুলতে পারেন।
কৃষি-বাণিজ্য আগামীর অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে। এই উপলব্ধি থেকেই উন্নত বিশ্ব নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। আমাদের ডেলটা প্ল্যান তথা বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০তেও কৃষিকে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য কৃষিকে টেকসই ও নিরাপদ করে খাদ্য এবং পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি খাতে নেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। ‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ নামের এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। এটি কৃষির উন্নয়নে এ পর্যন্ত নেওয়া সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এই প্রকল্পগুলো সত্যিকার অর্থে যথাযথ বাস্তবায়ন করা গেলে বাণিজ্যিক কৃষির যেমন নতুন ধারা তৈরি হবে, তেমনি বাড়বে জিডিপিতে কৃষির অবদান।
তবে বাংলাদেশের কৃষক অসম্ভবকে সম্ভব করার মতোই কাজ করেছেন। করোনার মতো বড় অভিঘাত যা বিশ্ব অর্থনীতিকে তছনছ করে দিয়েছে। এরপর বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহের মতো সময়েও আমাদের খাদ্য উৎপাদনের ধারাবাহিকতা সমুন্নত রেখেছেন বাংলাদেশের কৃষক। যদিও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আমাদের কিছুটা বিচলিত করেছে। কিন্তু বিশ্বমহলের খাদ্যঘাটতির ইঙ্গিতকে পাশ কাটিয়ে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখেছে আমাদের কৃষি উৎপাদন।
‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে আজ খাদ্য স্বয়ম্ভরতার দিকে বাংলাদেশ। এই সময়ে ধান-পাট চাষের দেশটি কৃষি বৈচিত্র্যে অনন্য হয়ে উঠেছে। শুধু ফসল কৃষিই নয়, পোলট্রি, গবাদি পশু, মৎস্য খাতের অনন্য সাফল্য খাদ্যনিরাপত্তার বলয় রচনা করেছে। বছর দশেক আগেও উত্তরাঞ্চলের ভয়াবহ মঙ্গা আজ গল্পের মতো শোনায়। এই সাফল্য কৃষকের, গবেষকের, সরকারের সময়োপযোগী পরিকল্পনার।
আজকের পর্বে শুধু আমাদের মূল ফসল ধানের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, সংকট ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছি। বিশ্বাস করি—একটি সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনার ভেতর দিয়ে রচিত হবে আগামীর খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষিভিত্তিক টেকসই অর্থনীতি।

বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও খাদ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে কৃষির অপরিহার্যতা অপরিবর্তিত রয়েছে। জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩-১৪ শতাংশ হলেও সাম্প্রতিক শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, শ্রমশক্তির ৪৪ শতাংশ এখনো কৃষিতে নিয়োজিত, মানে কৃষি এখনো বিনিয়োগের বড় ক্ষেত্র।
এই সময়ে এসে আমরা আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার কোন স্তরে রয়েছি, যে ক্ষুধাকে জয় করার জন্য আমরা জীবন বাজি রেখে স্বাধীন হয়েছি...এই ৫২ বছরে আমরা তার কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি? খাদ্যনিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের আগামী পরিকল্পনাটাই বা কী? মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা কণ্ঠে তুলেছি স্বাধীনতা দুর্বার ইচ্ছার গান—
বাংলার প্রতি ঘর ভরে দিতে চাই মোরা অন্নে
আমাদের রক্তে টগবগ দুলছে মুক্তির রিক্ত তারুণ্যে
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষুধামুক্তির। একটি আত্মনির্ভরশীল জাতিতে পরিণত হওয়া। মূলত স্বাধীনতার সংগ্রাম ছিল কৃষকের...শ্রমিকের...সাধারণ মানুষের। পরাধীনতার শিকল ছিঁড়ে যে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনা হয়েছে...এই বিজয় অর্জিত হয়েছে তাদের রক্তের দামে। দুবেলা দুমুঠো ভাতের নিশ্চয়তা চেয়েই আমাদের সংগ্রাম আজও চলমান।
১৯৭১ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি (৭৫ মিলিয়ন, ইউএনএফপিএ, ২০২০)। সেই সময় খাদ্যঘাটতি ছিল ২৫-৩০ লাখ টন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কৃষির ওপর ব্যাপক গুরুত্বারোপ করা হয়। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করাই ছিল স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য। তাই স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে আমাদের স্লোগান হয়ে ওঠে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কৃষিকে ঘিরেই ছিল সে সময়কার উন্নয়নচিন্তা। কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাও ছিল।
পরে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলে তৈরি পোশাক খাত চলে এলেও কৃষি সব সময়ই শক্তিশালী খুঁটি হিসেবে কাজ করেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের ৩৪ দশমিক ৫ কোটি মানুষ তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছে। বিশ্বের যখন এই পরিস্থিতি, তখন খাদ্যনিরাপত্তার দিকে জোর দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। খাদ্যনিরাপত্তার সবচেয়ে বড় বাধা জলবায়ু পরিবর্তন। একে কীভাবে মোকাবিলা করে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেই পরিকল্পনা করতে হবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বীজের গজানো, পরাগায়ন, ফুল ও ফল ধরা, পরিপক্ব হতে সুনির্দিষ্ট তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ও সূর্যের আলো দরকার। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দীর্ঘ সময় খরা থাকছে। অথবা অসময়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, হচ্ছে বন্যা। শীতকাল কম হচ্ছে বা বেশি হচ্ছে। এভাবে ফসল ফলানোর জন্য উপাদানগুলো পরিবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু বীজ বপন ও চারা রোপণের সময় পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। ফলে শস্য উৎপাদনে নানামুখী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কৃষকেরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ুর কারণে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে। আর এ কারণে গম, ছোলা, মসুর, মুগ ডালসহ কিছু কিছু ফসলের উৎপাদন কমে গেছে।
বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ। এ পর্যন্ত লবণাক্ততা, খরা, প্লাবনসহিষ্ণু এবং জিঙ্কসমৃদ্ধ ১৩৪টি উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে আমাদের রয়েছে লবণ, খরা, বন্যাসহিষ্ণু ধানের জাত। তবে সময় এসেছে এই জাতগুলোর সহনশীল ক্ষমতা আবার পরীক্ষা করার। প্রয়োজনে নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে। আমাদের বিজ্ঞানী এবং নীতিনির্ধারকদের সময় জয় করে চলতে হবে। যেকোনো বিপদের আগাম দিকটাও মাথায় রেখে এসব প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে যেতে হবে।
যেমন কার্তিকে যে মঙ্গা হতো দেশের উত্তরাঞ্চলে, সেই মঙ্গাকে প্রতিহত করা গেছে একাধিক স্বল্পমেয়াদি (শর্ট ডিউরেশন ভ্যারাইটি) ধানের জাত দিয়ে। ব্রি ধান ৩৩, ৩৯ এবং বিনা ধান ৭, এগুলো আগাম জাতের স্বল্পমেয়াদি ধান; যা কার্তিক আসার আগেই কৃষক ঘরে তুলতে পারেন। নতুন জাতের এই ধান দিয়ে মঙ্গাকে জয় করেছে স্থানীয় কৃষক। এই সফলতা দেখিয়েছেন আমাদের ধান বিজ্ঞানীরা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, হাওরাঞ্চলের জন্য স্বল্পমেয়াদি বোরো ধানের কোনো জাত আছে কি না? আমার জানামতে নেই। তবে ব্রির মহাপরিচালক ড. শাজাহান কবীর বলেছেন, খুব শিগগির তাঁরা হাওরাঞ্চলের জন্য স্বল্পমেয়াদি উচ্চফলনশীল ধান কৃষক পর্যায়ে দিতে পারবেন। ষাট-সত্তর-আশির দশকে কৃষক আইআর-৮ জাতের ধান চাষ করতেন হাওরাঞ্চলে; যার মেয়াদকাল লাগানোর পর থেকে কাটা পর্যন্ত ১৭০ দিন। পরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিআর-২৮ ও ২৯ জাত বোরো মৌসুমের জন্য উফশী জাত হিসেবে চাষ করলেন কৃষক। বিআর-২৮ লাগানোর পর থেকে ১৪০ এবং ১৬০ দিনে বিআর-২৯ ফসল কাটা যায়। সাধারণত হাওরের কৃষক বিআর-২৮-এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়লেন বেশি। কারণ আগাম বন্যার পানি আসার আগেই তাঁরা ফসল তুলতে পারেন।
কৃষি-বাণিজ্য আগামীর অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে। এই উপলব্ধি থেকেই উন্নত বিশ্ব নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। আমাদের ডেলটা প্ল্যান তথা বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০তেও কৃষিকে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য কৃষিকে টেকসই ও নিরাপদ করে খাদ্য এবং পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি খাতে নেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। ‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ নামের এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। এটি কৃষির উন্নয়নে এ পর্যন্ত নেওয়া সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এই প্রকল্পগুলো সত্যিকার অর্থে যথাযথ বাস্তবায়ন করা গেলে বাণিজ্যিক কৃষির যেমন নতুন ধারা তৈরি হবে, তেমনি বাড়বে জিডিপিতে কৃষির অবদান।
তবে বাংলাদেশের কৃষক অসম্ভবকে সম্ভব করার মতোই কাজ করেছেন। করোনার মতো বড় অভিঘাত যা বিশ্ব অর্থনীতিকে তছনছ করে দিয়েছে। এরপর বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহের মতো সময়েও আমাদের খাদ্য উৎপাদনের ধারাবাহিকতা সমুন্নত রেখেছেন বাংলাদেশের কৃষক। যদিও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আমাদের কিছুটা বিচলিত করেছে। কিন্তু বিশ্বমহলের খাদ্যঘাটতির ইঙ্গিতকে পাশ কাটিয়ে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখেছে আমাদের কৃষি উৎপাদন।
‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে আজ খাদ্য স্বয়ম্ভরতার দিকে বাংলাদেশ। এই সময়ে ধান-পাট চাষের দেশটি কৃষি বৈচিত্র্যে অনন্য হয়ে উঠেছে। শুধু ফসল কৃষিই নয়, পোলট্রি, গবাদি পশু, মৎস্য খাতের অনন্য সাফল্য খাদ্যনিরাপত্তার বলয় রচনা করেছে। বছর দশেক আগেও উত্তরাঞ্চলের ভয়াবহ মঙ্গা আজ গল্পের মতো শোনায়। এই সাফল্য কৃষকের, গবেষকের, সরকারের সময়োপযোগী পরিকল্পনার।
আজকের পর্বে শুধু আমাদের মূল ফসল ধানের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, সংকট ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছি। বিশ্বাস করি—একটি সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনার ভেতর দিয়ে রচিত হবে আগামীর খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষিভিত্তিক টেকসই অর্থনীতি।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও খাদ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে কৃষির অপরিহার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও খাদ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে কৃষির অপরিহার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও খাদ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে কৃষির অপরিহার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও খাদ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে কৃষির অপরিহার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫