Ajker Patrika

ইটভাটার ধোঁয়ায় শতাধিক বিঘা জমির ধানের ক্ষতি

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ মে ২০২২, ১৫: ০০
ইটভাটার ধোঁয়ায় শতাধিক বিঘা জমির ধানের ক্ষতি

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় ক্ষতির শিকার হচ্ছে শতাধিক বিঘা জমির ধান। ফলে দিশেহারা ওই এলাকার কৃষকেরা। এ ঘটনা উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের বিলবালিয়া গ্রামের। তবে ইটভাটার মালিকেরা বলছেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেবেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে বিষয়টি দেখা হবে।

জানা গেছে, উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের বিলবালিয়া (ধোপাদহ) গ্রামে ধানের জমির পাশে তৈরি করা হয় ‘রূপকথা’ ইটভাটা। ইটভাটার ধোয়ায় শতাধিক বিঘা জমির ধান ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকেরা বলছেন, সার দেওয়া থেকে শুরু করে ধানের সব ধরনের পরিচর্যা করা হয়েছে। কিন্তু ধান পরিপক্ব হওয়ার আগেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর ১০ দিন পেরোলেই পাকা ধান ঘরে তোলা যেত। কিন্তু শতাধিক বিঘা জমির কাঁচা ধান পুড়ে গেছে। বিলবালিয়া (ধোপাদহ) গ্রামের জুলহাস, শহীদ, কামাল, বাদশা ও ফজলুল হকের মতো শতাধিক কৃষকের ধানের অবস্থা দেখে দুশ্চিন্তায়। তাঁদের মনের আনন্দ ধানের এই অবস্থা দেখে কষ্টে পরিণত হয়েছে। তাঁদের সব স্বপ্ন ইটভাটার তাপে আর ধোঁয়ায় পুড়ে গেছে।

স্থানীয় নয়ন তারা, নুরে আলম বাবু ও তোতা মাস্টার মিলে কয়েক বছর আগে ওই এলাকার কৃষি জমিতে রূপকথা নামে একটি ইটভাটা গড়ে তোলে। সেই ইটভাটার তাপে আর কালো ধোঁয়ায় শতাধিক বিঘা জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। ওই কৃষকদের মধ্যে বাদশা হাজী, জুলহাস মিয়া, কামাল ফকির ও ফজলুল হকের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, রূপকথা ইটভাটা থেকে তাপ ও কালো ধোঁয়া নির্গত হতে থাকে সব সময়। পরে তা পাশের ধানের জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। নয়ন তারা কৃষকদের নিয়ে সম্প্রতি ফসলের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করার চেষ্টা করেছেন।

ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় কৃষকদের খেতের ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন রূপকথা ইটভাটার ব্যবস্থাপক আবুল হোসেন। তিনি বলেন, কয়কে দিন আগে ঝোড়ো বাতাসে ইটভাটার নির্গত ধোঁয়া চিমনি দিয়ে বের হয়ে ওপরের দিকে না গিয়ে ফসলি জমিতে নেমে আসে। ওই ধোঁয়ায় পাশের জমির কাঁচা ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এ নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে ইটভাটা মালিক নয়ন তারা বৈঠক করেছেন। ওই কৃষকদের ক্ষতি পূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে রূপকথা ইটভাটার মালিক নয়ন তারা বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে হাসমত আলীর বেশি ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কৃষক হাসমত আলীর সঙ্গে কথা হয়েছে। ইটভাটার ধোঁয়ায় এ ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।’

এ ব্যাপারে কৃষক হাসত আলী ফকির বলেন, ইটভাটার কারণে তার ১৫ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। সবাই মিলিয়ে এলাকায় শতাধিক বিঘা জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ইটভাটার মালিকদের মধ্যে নয়ন তারার সঙ্গে তার কথা হয়েছে। ভাটামালিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছেন বলেও তিনি জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ইটভাটার তাপে ও ধোঁয়ায় মাঝেমধ্যেই ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তার ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলেও তিনি জানান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত