Ajker Patrika

অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পথে প্রকৌশলীর মৃত্যু

চৌগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ১০
Thumbnail image

যশোরের চৌগাছার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পথে পানিতে ডুবে মারা গেছেন রফিকুল ইসলাম জনি (৫৫) নামে এক প্রকৌশলী। তিনি ঢাকার ৭০৬ বড় মগবাজারের বাসিন্দা ছিলেন। গত

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার মাশিলা সীমান্তের গদাধরপুর বাঁওড়ে ভাসমান অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে ভারতে বাস করা তাঁর খালাতো ভাই মোহনের সঙ্গে কথা বলে এবং আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। ভোর ৪টার দিকে লাশটি চৌগাছা থানায় নেওয়া হয়।

রফিকুল ইসলাম জনির ভাগনে যশোর সরকারি পলিটেকনিক কলেজের অধ্যক্ষ (পিআরএল) মাশরেকুল ইসলাম বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী। তাঁর স্ত্রী কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। সে কয়েক দিন আগে যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ায় আমার বাড়ির ছাদ ঢালাইয়ের কাজ তদারকি করতে আসে।’

ভাগনে মাশরেকুল ইসলাম আরও বলেন, ২ / ৩ আগে সে আমাকে বলে, মামা আমি তো মায়ের কবর জিয়ারত করতে ভারতে যাব। কিন্তু পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আমি তাঁকে বলি আমি ঢাকায় সচিবালয়ে যাচ্ছি। এসে তোমার পাসপোর্টের বিষয়টি দেখব। এরই মধ্যে সে গত বুধবার যশোর থেকে ঝিকরগাছায় তাঁর ভাইয়ের মেয়ের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে ভারতে থাকা খালাতো ভাই মোহনের সঙ্গে যোগাযোগ করে চৌগাছার সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করছিল সে। ভারতে যাওয়ার সময় পানিতে ডুবে মারা যায় বলে মোহনের কাছ থেকে মুঠোফোনে জেনে থানায় এসেছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী গদাধরপুর বাঁওড়ের নৈশপ্রহরী শাহিন ও নওফেল জানান, রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রতিদিনের মতো নৌকায় চড়ে বাঁওড় পাহারা দেওয়ার সময় নৌকা থেকে তাঁরা দেখেন বাঁওড়ের গদাধরপুর মসজিদ ঘাটের পাশে একটি মানুষের দেহ পড়ে আছে।

তাঁরা আরও জানান, মানুষের দেহ নিশ্চিত হয়ে মাশিলা বিজিবি ক্যাম্পে মুঠোফোনে খবর দেন তাঁরা। পরে বিজিবি সদস্যরা থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

গদাধরপুর গ্রামের খলিলের ছেলে শান্তি বলেন, ‘ভারতের বয়রায় নানা বাড়ি হওয়ার সুবাদে সেখানকার অভি নামে দালালের সঙ্গে মাঝে মধ্যে মুঠোফোনে কথা হতো।’

তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সে মুঠোফোনে জানায় একজন লোক আসবে। তাঁকে ভারতে নিতে হবে। পরে দালাল অভি এসে রাত সাড়ে আটটার দিকে মসজিদ ঘাট থেকে রফিকুল ইসলামকে নিয়ে বাঁওড় দিয়ে সাতরিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পরে সে ফোন দিয়ে বলে যাকে নিয়ে যাচ্ছিলাম সে হাঁসফাস (পানিতে ডুবে হাবুডুবু করা) করছিল। যেখান থেকে নিয়ে এসেছিলাম সেখানেই তাকে রেখে এসেছি। পরে বিজিবি সেখানে যায়। তাঁরও পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।’

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘মাশিলা ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যদের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে সুরতহাল করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি পাসপোর্ট ছাড়া অবৈধভাবে দালালের মাধ্যমে বাঁওড় পার হয়ে ভারতে যাওয়ার পথে পানিতে ডুবে মারা যান। পরে দালালেরা লাশটি ঘটনাস্থলে রেখে যায়।’

চৌগাছা থানার ওসি বলেন, ‘ভারতে কথা বলে তাঁর খালাতো ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। শুক্রবার সকালে পরিবারের সদস্যরা থানায় এসে লাশটি শনাক্ত করেন’।

ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ আরও বলেন, দুপুরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত