ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট ও নাজমুল হাসান সাগর, ঢাকা
শুরুর আগেই বরাদ্দ ছেড়ে দিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। বরাদ্দ পাওয়া বাকি ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগ এখনো কাজ শুরু করেনি। যে দু-একটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে, তা-ও চলছে ঢিমেতালে। কেউ মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, কেউ আছে বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিধায়। একটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেলেও ওই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমন হাল সিলেটের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঋণের সুবিধা না থাকা, বিনিয়োগ করা অর্থ উঠে আসা নিয়ে সংশয়, বিশ্ববাজারে মন্দা, ডলার সংকট, প্রকল্প এলাকায় বসবাসসহ অন্যান্য সুবিধা গড়ে না ওঠা, ভালো পরিবেশ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে আগ্রহে ভাটা পড়েছে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণি এলাকায় প্রায় ১৬৩ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত হচ্ছে এই হাই-টেক পার্ক। এটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বাহাটেপাক)। কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্মাণ শেষে আগামী মার্চেই প্রকল্পটি বুঝিয়ে দেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড। এখন বিনিয়োগকারীদের জন্য অপেক্ষা।
২০১৬ সালের ৮ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৩৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর। সম্প্রতি মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন।
বাহাটেপাক কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্প নির্মাণে ৩৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও ৩১৯ কোটি টাকা খরচ হওয়ায় সাশ্রয় হচ্ছে ১৭ কোটি টাকা। পার্কে ইতিমধ্যে ১২টি প্রতিষ্ঠান প্লট এবং ৬টি প্রতিষ্ঠান ভবনে জায়গা বরাদ্দ নিয়েছে। পার্কটি প্রবাসী-অধ্যুষিত সিলেটে বড় বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করেছে। সব ঠিক থাকলে এখানে ২০২৪ সালে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হবে। এখানে উৎপাদিত পণ্য ভারতের সেভেন সিস্টার্সের বাজার ধরতে পারবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ হবে। স্থানীয় অদক্ষ শ্রমিকসহ অর্ধলক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এতে সিলেট অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে আরও উন্নত হবে।
বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কের প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভুঁইয়া বলেন, এখানে সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক পণ্য ও যন্ত্রাংশ তৈরি হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ১২টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১.৩৯৯ একর জমি ও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ভবনে ১৪,৭৬০ বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪০ বছরের জন্য। পরে মেয়াদ বাড়তে পারে। এর মধ্যে র্যাংগস ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ৩২ একর, আরএফএল ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ২০, ব্যাবিলন রিসোর্সেস লিমিটেড ২, হেলথ ল্যান্ডমার্ক হোল্ডিং লিমিটেড ১.৫, রহমানিয়া সুপার মার্কেট ১, টুগেদার আইটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ১, ইএলবি ১, মেসার্স নুহ এবং সোহান এন্টারপ্রাইজ প্রায় সাড়ে ৩, অটোমেশন সার্ভিস লিমিটেড ১, আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ৮, ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিমিটেড ০.১৪৯, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ০.৩৩০ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। পাঁচ তারকা হোটেলের জন্য ৩ একর, বোর্ড ক্লাবের জন্য ২ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে ৪ হাজার বর্গফুট, সিমেড হেলথ লিমিটেডকে ১ হাজার, নুডস সল্যুশনকে ১ হাজার ৫০০, মেসার্স আব্দুল বাশির এন্টারপ্রাইজকে ২ হাজার ২৬০, ইন টাচ আইটিকে ২ হাজার বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছয়টি সিলেট অঞ্চলের। বছরে প্রতি বর্গমিটার জমির ভাড়া দেড় মার্কিন ডলার এবং মাসে প্রতি বর্গফুট জায়গার ভাড়া ৫ টাকা, সার্ভিস চার্জ ৫ টাকা।
কর্তৃপক্ষের দাবি, বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি মাসে কিস্তি দিচ্ছে। তাদের দ্রুত কাজ শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনা নির্মাণকাজ শুরুও করেছে। তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হলেও বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্মাণকাজের তোড়জোড় নেই। অথচ চুক্তি অনুযায়ী বরাদ্দের এক বছরের মধ্যে কাজ শুরুর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রবেশপথেই চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন সেতু। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি অঙ্গন। প্রবেশপথ পেরিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের ভবনের একতলা কাঠামো। এরপর ব্যাংক ভবন ও প্রশাসনিক ভবন। কিছু দূরে ভূমি জরিপ করছেন র্যাংগসের লোকজন। প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপক (সিভিল) এস এম আসিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরিপ শেষ হলেই স্থাপনা নির্মাণ শুরু হবে।
বোর্ড ক্লাব এবং রিসার্চ ও ট্রেনিং হাসপাতালের প্রাথমিক পর্যায়ের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। আরএফএল ১০০ একর জমি চাইলেও পর্যাপ্ত জমি না থাকায় দেওয়া যায়নি।
শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারসহ তিনটি ভবনের কাজ শেষ। আনসার সদস্যদের ব্যারাক, অভ্যন্তরীণ সড়ক ও কানেক্টিং কালভার্ট, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি অঙ্গন, প্রশাসনিক ভবন, ৩৩ কেভিএ লাইনের ১০ মেগাওয়াট বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাস স্টেশন, ভূমি উন্নয়ন, সেতু, গেট হাউস, কালভার্ট কাম স্লুইসগেট, দুই হাজার ফুট গভীর নলকূপ, রাস্তা, স্যুয়ারেজ সিস্টেম, ইউটিলিটি ভবন, প্রশাসনিক ভবনের চারপাশের বেড়া, নালা, ঘাট কাম স্লোপ প্রোটেকশন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার (ইঞ্জিনিয়ারিং) মতিলাল হাওলাদার বলেন, পার্কটি পুরোপুরি প্রস্তুত। হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিনিয়োগের সব সুযোগ-সুবিধা বা শর্ত প্রস্তুত। এখন বিনিয়োগকারী এসে কাজ শুরু করবে। আগামী এক বছরের মধ্যে এখানে অনেক বড় কর্মযজ্ঞ দেখা যাবে।
তবে এই সুযোগ-সুবিধা নিয়েই দ্বিমত পোষণ করেছেন কয়েকজন বরাদ্দপ্রাপ্ত। ঋণসহ অন্য সুবিধা না থাকায় আগ্রহ হারিয়েছেন তাঁরা। চারটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পাওয়া জমি ও জায়গা ছেড়ে দিয়েছে বা দেবে। এর মধ্যে মেসার্স নুহ ও সোহান এন্টারপ্রাইজের মালিক শামীম আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ তারকা হোটেল করতে ১২০ কোটি টাকা লাগে। ঋণের ব্যবস্থাও নেই। ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছিলাম, তারাও ফান্ড ম্যানেজ করতে পারছে না। এখন আমরা ছেড়ে দেব।’
সিমেড হেলথ লিমিটেডের পরিচালক অধ্যাপক খন্দকার এ মামুন বলেন, কোভিডের কারণে কিছু সমস্যা হওয়ায় তাঁরা জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন। নুডস সল্যুশনের সিইও এম রাহবার জুমার আবেশও বরাদ্দ জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা জানান।
এদিকে ইন টাচ আইটির চৌধুরী মুহসিন সিদ্দিকী বলেন, সেখানে গিয়ে তাঁদের তেমন লাভ হবে না। তাই ছেড়ে দিয়েছেন। তারা ফোন করেছিল ছেড়ে দেওয়ার মেইলটা আবার ফরওয়ার্ড করার জন্য।
টুগেদার আইটি ইন্ডাস্ট্রিয়ালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমতিয়াজুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এই হাই-টেক পার্কে কী ধরনের কাজ করব, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। পরে জানাব।’
ইএলবি জমি বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই ডেটা সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু করলেও দুই দফা বন্যার কারণে থামিয়ে দেয়। প্রতিষ্ঠানটির কাজ তদারক করা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ তারিক বলেন, ‘আবার কবে কাজ শুরু করব জানি না।’
আরটিএম টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ জগলুল পাশা বলেন, ‘আমরা তো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। যদি সরকার সহায়ক হয়, তাহলে বিষয়টা সুবিধা হবে।’ রহমানিয়া সুপার মার্কেটের বরাদ্দপ্রাপ্ত জমিতে বোর্ড ক্লাব ও রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সৈয়দ মহসিন হোসেন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, পার্কের বর্তমান পরিবেশ দেখে বিনিয়োগের টাকা উঠবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তিনি বলেন, তিনি কাজ করলেও অনেকে জমি, জায়গা বরাদ্দ নিয়ে ফেলে রেখেছে।
তবে ইমতিয়াজুল হক ভুঁইয়া বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করেছি। এখনো সুযোগ-সুবিধার অভাব দেখিনি।’ অটোমেশন সার্ভিস লিমিটেডের সিইও পাপ্পু বলেন, ‘আমাদের চুক্তি হয়নি এখনো। আমাদের পার্টনারও চলে গেছে। পার্টনার পেলে কাজ শুরু করব।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মুমিন জানান, তাঁরা সেখানে ল্যাব করবেন। কাজ শুরু করেননি।
মেসার্স আব্দুল বাশির এন্টারপ্রাইজের জয়নাল আহমদ বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করিনি। এখনো চুক্তি হয়নি।’ এদিকে ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী হেলথ ল্যান্ডমার্ক হোল্ডিং লিমিটেড দেড় একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। তবে ওয়েবসাইটে দেওয়া চারটি মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে জানানো হয়, এ নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের কথা তাঁরা জানেন না। নামও শোনেননি। একটি নম্বরের ফোনের অপর প্রান্ত থেকে আলমগীর নামের এক ব্যক্তি নিজেকে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘অনেকেই আমার এই নম্বরে ফোন করে ওই প্রতিষ্ঠানের কথা জানতে চায়। আমি প্রতিষ্ঠানটির নামই শুনিনি। আমারও কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
আরএফএল ইলেকট্রনিকস লিমিটেড, আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি, ব্যাবিলন রিসোর্সেস লিমিটেড, ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘লাখ লাখ টাকায় বরাদ্দ নেওয়া জায়গার ওপর ঋণের সুবিধা নেই। ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। সুযোগ-সুবিধা না পেলে কেউ কি যাবে? যেখানে সরকারের বিনিয়োগ নেই, সেখানে ব্যবসায়ীরাও বিনিয়োগ করবেন না। এটা আমাদের সিলেটিদের জন্য করা হয়নি। আমরা অযথা নিজের পয়সা খরচ করে দেশ-বিদেশে সিলেটের মানুষকে হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে সভা-সেমিনার করেছি।’
বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষের কাছে জমি ও ফ্লোরস্পেস বরাদ্দের ভাড়া, আয়-ব্যয় ও প্রতিষ্ঠানের সঠিক তালিকা চেয়ে পাওয়া যায়নি। তিনি সোমবার আরও দুদিনের সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি পার্ককে আরও আট একর জায়গা দেওয়া হয়েছে। আরও ৮০ একর জায়গা পেয়েছেন, তবে বরাদ্দ হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানুষের অনেক প্রত্যাশা থাকে, সব তো পূরণ হয় না। আমরাও সমালোচনার ঊর্ধ্বে নই। আমরা সব রেডি করেছি। সিলেট অঞ্চলের মানুষের বিনিয়োগের একটা জায়গা হয়েছে, এটা অস্বীকার করার কিছু নেই।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুধু হাইটেক পার্ক করলেই হবে না, সেগুলোতে তদারকিও করতে হবে। আবার সহজ ব্যবসার পরিবেশসহ অন্যান্য সুবিধাও নিশ্চিত করতে হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সময়সাপেক্ষ।
শুরুর আগেই বরাদ্দ ছেড়ে দিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। বরাদ্দ পাওয়া বাকি ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগ এখনো কাজ শুরু করেনি। যে দু-একটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে, তা-ও চলছে ঢিমেতালে। কেউ মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, কেউ আছে বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিধায়। একটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেলেও ওই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমন হাল সিলেটের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঋণের সুবিধা না থাকা, বিনিয়োগ করা অর্থ উঠে আসা নিয়ে সংশয়, বিশ্ববাজারে মন্দা, ডলার সংকট, প্রকল্প এলাকায় বসবাসসহ অন্যান্য সুবিধা গড়ে না ওঠা, ভালো পরিবেশ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে আগ্রহে ভাটা পড়েছে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণি এলাকায় প্রায় ১৬৩ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত হচ্ছে এই হাই-টেক পার্ক। এটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বাহাটেপাক)। কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্মাণ শেষে আগামী মার্চেই প্রকল্পটি বুঝিয়ে দেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড। এখন বিনিয়োগকারীদের জন্য অপেক্ষা।
২০১৬ সালের ৮ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৩৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর। সম্প্রতি মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন।
বাহাটেপাক কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্প নির্মাণে ৩৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও ৩১৯ কোটি টাকা খরচ হওয়ায় সাশ্রয় হচ্ছে ১৭ কোটি টাকা। পার্কে ইতিমধ্যে ১২টি প্রতিষ্ঠান প্লট এবং ৬টি প্রতিষ্ঠান ভবনে জায়গা বরাদ্দ নিয়েছে। পার্কটি প্রবাসী-অধ্যুষিত সিলেটে বড় বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করেছে। সব ঠিক থাকলে এখানে ২০২৪ সালে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হবে। এখানে উৎপাদিত পণ্য ভারতের সেভেন সিস্টার্সের বাজার ধরতে পারবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ হবে। স্থানীয় অদক্ষ শ্রমিকসহ অর্ধলক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এতে সিলেট অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে আরও উন্নত হবে।
বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কের প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভুঁইয়া বলেন, এখানে সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক পণ্য ও যন্ত্রাংশ তৈরি হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ১২টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১.৩৯৯ একর জমি ও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ভবনে ১৪,৭৬০ বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪০ বছরের জন্য। পরে মেয়াদ বাড়তে পারে। এর মধ্যে র্যাংগস ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ৩২ একর, আরএফএল ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ২০, ব্যাবিলন রিসোর্সেস লিমিটেড ২, হেলথ ল্যান্ডমার্ক হোল্ডিং লিমিটেড ১.৫, রহমানিয়া সুপার মার্কেট ১, টুগেদার আইটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ১, ইএলবি ১, মেসার্স নুহ এবং সোহান এন্টারপ্রাইজ প্রায় সাড়ে ৩, অটোমেশন সার্ভিস লিমিটেড ১, আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ৮, ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিমিটেড ০.১৪৯, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ০.৩৩০ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। পাঁচ তারকা হোটেলের জন্য ৩ একর, বোর্ড ক্লাবের জন্য ২ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে ৪ হাজার বর্গফুট, সিমেড হেলথ লিমিটেডকে ১ হাজার, নুডস সল্যুশনকে ১ হাজার ৫০০, মেসার্স আব্দুল বাশির এন্টারপ্রাইজকে ২ হাজার ২৬০, ইন টাচ আইটিকে ২ হাজার বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছয়টি সিলেট অঞ্চলের। বছরে প্রতি বর্গমিটার জমির ভাড়া দেড় মার্কিন ডলার এবং মাসে প্রতি বর্গফুট জায়গার ভাড়া ৫ টাকা, সার্ভিস চার্জ ৫ টাকা।
কর্তৃপক্ষের দাবি, বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি মাসে কিস্তি দিচ্ছে। তাদের দ্রুত কাজ শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনা নির্মাণকাজ শুরুও করেছে। তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হলেও বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্মাণকাজের তোড়জোড় নেই। অথচ চুক্তি অনুযায়ী বরাদ্দের এক বছরের মধ্যে কাজ শুরুর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রবেশপথেই চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন সেতু। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি অঙ্গন। প্রবেশপথ পেরিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের ভবনের একতলা কাঠামো। এরপর ব্যাংক ভবন ও প্রশাসনিক ভবন। কিছু দূরে ভূমি জরিপ করছেন র্যাংগসের লোকজন। প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপক (সিভিল) এস এম আসিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরিপ শেষ হলেই স্থাপনা নির্মাণ শুরু হবে।
বোর্ড ক্লাব এবং রিসার্চ ও ট্রেনিং হাসপাতালের প্রাথমিক পর্যায়ের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। আরএফএল ১০০ একর জমি চাইলেও পর্যাপ্ত জমি না থাকায় দেওয়া যায়নি।
শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারসহ তিনটি ভবনের কাজ শেষ। আনসার সদস্যদের ব্যারাক, অভ্যন্তরীণ সড়ক ও কানেক্টিং কালভার্ট, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি অঙ্গন, প্রশাসনিক ভবন, ৩৩ কেভিএ লাইনের ১০ মেগাওয়াট বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাস স্টেশন, ভূমি উন্নয়ন, সেতু, গেট হাউস, কালভার্ট কাম স্লুইসগেট, দুই হাজার ফুট গভীর নলকূপ, রাস্তা, স্যুয়ারেজ সিস্টেম, ইউটিলিটি ভবন, প্রশাসনিক ভবনের চারপাশের বেড়া, নালা, ঘাট কাম স্লোপ প্রোটেকশন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার (ইঞ্জিনিয়ারিং) মতিলাল হাওলাদার বলেন, পার্কটি পুরোপুরি প্রস্তুত। হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিনিয়োগের সব সুযোগ-সুবিধা বা শর্ত প্রস্তুত। এখন বিনিয়োগকারী এসে কাজ শুরু করবে। আগামী এক বছরের মধ্যে এখানে অনেক বড় কর্মযজ্ঞ দেখা যাবে।
তবে এই সুযোগ-সুবিধা নিয়েই দ্বিমত পোষণ করেছেন কয়েকজন বরাদ্দপ্রাপ্ত। ঋণসহ অন্য সুবিধা না থাকায় আগ্রহ হারিয়েছেন তাঁরা। চারটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পাওয়া জমি ও জায়গা ছেড়ে দিয়েছে বা দেবে। এর মধ্যে মেসার্স নুহ ও সোহান এন্টারপ্রাইজের মালিক শামীম আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ তারকা হোটেল করতে ১২০ কোটি টাকা লাগে। ঋণের ব্যবস্থাও নেই। ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছিলাম, তারাও ফান্ড ম্যানেজ করতে পারছে না। এখন আমরা ছেড়ে দেব।’
সিমেড হেলথ লিমিটেডের পরিচালক অধ্যাপক খন্দকার এ মামুন বলেন, কোভিডের কারণে কিছু সমস্যা হওয়ায় তাঁরা জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন। নুডস সল্যুশনের সিইও এম রাহবার জুমার আবেশও বরাদ্দ জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা জানান।
এদিকে ইন টাচ আইটির চৌধুরী মুহসিন সিদ্দিকী বলেন, সেখানে গিয়ে তাঁদের তেমন লাভ হবে না। তাই ছেড়ে দিয়েছেন। তারা ফোন করেছিল ছেড়ে দেওয়ার মেইলটা আবার ফরওয়ার্ড করার জন্য।
টুগেদার আইটি ইন্ডাস্ট্রিয়ালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমতিয়াজুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এই হাই-টেক পার্কে কী ধরনের কাজ করব, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। পরে জানাব।’
ইএলবি জমি বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই ডেটা সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু করলেও দুই দফা বন্যার কারণে থামিয়ে দেয়। প্রতিষ্ঠানটির কাজ তদারক করা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ তারিক বলেন, ‘আবার কবে কাজ শুরু করব জানি না।’
আরটিএম টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ জগলুল পাশা বলেন, ‘আমরা তো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। যদি সরকার সহায়ক হয়, তাহলে বিষয়টা সুবিধা হবে।’ রহমানিয়া সুপার মার্কেটের বরাদ্দপ্রাপ্ত জমিতে বোর্ড ক্লাব ও রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সৈয়দ মহসিন হোসেন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, পার্কের বর্তমান পরিবেশ দেখে বিনিয়োগের টাকা উঠবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তিনি বলেন, তিনি কাজ করলেও অনেকে জমি, জায়গা বরাদ্দ নিয়ে ফেলে রেখেছে।
তবে ইমতিয়াজুল হক ভুঁইয়া বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করেছি। এখনো সুযোগ-সুবিধার অভাব দেখিনি।’ অটোমেশন সার্ভিস লিমিটেডের সিইও পাপ্পু বলেন, ‘আমাদের চুক্তি হয়নি এখনো। আমাদের পার্টনারও চলে গেছে। পার্টনার পেলে কাজ শুরু করব।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মুমিন জানান, তাঁরা সেখানে ল্যাব করবেন। কাজ শুরু করেননি।
মেসার্স আব্দুল বাশির এন্টারপ্রাইজের জয়নাল আহমদ বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করিনি। এখনো চুক্তি হয়নি।’ এদিকে ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী হেলথ ল্যান্ডমার্ক হোল্ডিং লিমিটেড দেড় একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। তবে ওয়েবসাইটে দেওয়া চারটি মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে জানানো হয়, এ নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের কথা তাঁরা জানেন না। নামও শোনেননি। একটি নম্বরের ফোনের অপর প্রান্ত থেকে আলমগীর নামের এক ব্যক্তি নিজেকে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘অনেকেই আমার এই নম্বরে ফোন করে ওই প্রতিষ্ঠানের কথা জানতে চায়। আমি প্রতিষ্ঠানটির নামই শুনিনি। আমারও কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
আরএফএল ইলেকট্রনিকস লিমিটেড, আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি, ব্যাবিলন রিসোর্সেস লিমিটেড, ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘লাখ লাখ টাকায় বরাদ্দ নেওয়া জায়গার ওপর ঋণের সুবিধা নেই। ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। সুযোগ-সুবিধা না পেলে কেউ কি যাবে? যেখানে সরকারের বিনিয়োগ নেই, সেখানে ব্যবসায়ীরাও বিনিয়োগ করবেন না। এটা আমাদের সিলেটিদের জন্য করা হয়নি। আমরা অযথা নিজের পয়সা খরচ করে দেশ-বিদেশে সিলেটের মানুষকে হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে সভা-সেমিনার করেছি।’
বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষের কাছে জমি ও ফ্লোরস্পেস বরাদ্দের ভাড়া, আয়-ব্যয় ও প্রতিষ্ঠানের সঠিক তালিকা চেয়ে পাওয়া যায়নি। তিনি সোমবার আরও দুদিনের সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি পার্ককে আরও আট একর জায়গা দেওয়া হয়েছে। আরও ৮০ একর জায়গা পেয়েছেন, তবে বরাদ্দ হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানুষের অনেক প্রত্যাশা থাকে, সব তো পূরণ হয় না। আমরাও সমালোচনার ঊর্ধ্বে নই। আমরা সব রেডি করেছি। সিলেট অঞ্চলের মানুষের বিনিয়োগের একটা জায়গা হয়েছে, এটা অস্বীকার করার কিছু নেই।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুধু হাইটেক পার্ক করলেই হবে না, সেগুলোতে তদারকিও করতে হবে। আবার সহজ ব্যবসার পরিবেশসহ অন্যান্য সুবিধাও নিশ্চিত করতে হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সময়সাপেক্ষ।
ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট ও নাজমুল হাসান সাগর, ঢাকা
শুরুর আগেই বরাদ্দ ছেড়ে দিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। বরাদ্দ পাওয়া বাকি ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগ এখনো কাজ শুরু করেনি। যে দু-একটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে, তা-ও চলছে ঢিমেতালে। কেউ মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, কেউ আছে বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিধায়। একটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেলেও ওই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমন হাল সিলেটের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঋণের সুবিধা না থাকা, বিনিয়োগ করা অর্থ উঠে আসা নিয়ে সংশয়, বিশ্ববাজারে মন্দা, ডলার সংকট, প্রকল্প এলাকায় বসবাসসহ অন্যান্য সুবিধা গড়ে না ওঠা, ভালো পরিবেশ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে আগ্রহে ভাটা পড়েছে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণি এলাকায় প্রায় ১৬৩ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত হচ্ছে এই হাই-টেক পার্ক। এটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বাহাটেপাক)। কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্মাণ শেষে আগামী মার্চেই প্রকল্পটি বুঝিয়ে দেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড। এখন বিনিয়োগকারীদের জন্য অপেক্ষা।
২০১৬ সালের ৮ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৩৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর। সম্প্রতি মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন।
বাহাটেপাক কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্প নির্মাণে ৩৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও ৩১৯ কোটি টাকা খরচ হওয়ায় সাশ্রয় হচ্ছে ১৭ কোটি টাকা। পার্কে ইতিমধ্যে ১২টি প্রতিষ্ঠান প্লট এবং ৬টি প্রতিষ্ঠান ভবনে জায়গা বরাদ্দ নিয়েছে। পার্কটি প্রবাসী-অধ্যুষিত সিলেটে বড় বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করেছে। সব ঠিক থাকলে এখানে ২০২৪ সালে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হবে। এখানে উৎপাদিত পণ্য ভারতের সেভেন সিস্টার্সের বাজার ধরতে পারবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ হবে। স্থানীয় অদক্ষ শ্রমিকসহ অর্ধলক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এতে সিলেট অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে আরও উন্নত হবে।
বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কের প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভুঁইয়া বলেন, এখানে সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক পণ্য ও যন্ত্রাংশ তৈরি হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ১২টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১.৩৯৯ একর জমি ও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ভবনে ১৪,৭৬০ বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪০ বছরের জন্য। পরে মেয়াদ বাড়তে পারে। এর মধ্যে র্যাংগস ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ৩২ একর, আরএফএল ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ২০, ব্যাবিলন রিসোর্সেস লিমিটেড ২, হেলথ ল্যান্ডমার্ক হোল্ডিং লিমিটেড ১.৫, রহমানিয়া সুপার মার্কেট ১, টুগেদার আইটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ১, ইএলবি ১, মেসার্স নুহ এবং সোহান এন্টারপ্রাইজ প্রায় সাড়ে ৩, অটোমেশন সার্ভিস লিমিটেড ১, আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ৮, ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিমিটেড ০.১৪৯, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ০.৩৩০ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। পাঁচ তারকা হোটেলের জন্য ৩ একর, বোর্ড ক্লাবের জন্য ২ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে ৪ হাজার বর্গফুট, সিমেড হেলথ লিমিটেডকে ১ হাজার, নুডস সল্যুশনকে ১ হাজার ৫০০, মেসার্স আব্দুল বাশির এন্টারপ্রাইজকে ২ হাজার ২৬০, ইন টাচ আইটিকে ২ হাজার বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছয়টি সিলেট অঞ্চলের। বছরে প্রতি বর্গমিটার জমির ভাড়া দেড় মার্কিন ডলার এবং মাসে প্রতি বর্গফুট জায়গার ভাড়া ৫ টাকা, সার্ভিস চার্জ ৫ টাকা।
কর্তৃপক্ষের দাবি, বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি মাসে কিস্তি দিচ্ছে। তাদের দ্রুত কাজ শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনা নির্মাণকাজ শুরুও করেছে। তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হলেও বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্মাণকাজের তোড়জোড় নেই। অথচ চুক্তি অনুযায়ী বরাদ্দের এক বছরের মধ্যে কাজ শুরুর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রবেশপথেই চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন সেতু। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি অঙ্গন। প্রবেশপথ পেরিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের ভবনের একতলা কাঠামো। এরপর ব্যাংক ভবন ও প্রশাসনিক ভবন। কিছু দূরে ভূমি জরিপ করছেন র্যাংগসের লোকজন। প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপক (সিভিল) এস এম আসিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরিপ শেষ হলেই স্থাপনা নির্মাণ শুরু হবে।
বোর্ড ক্লাব এবং রিসার্চ ও ট্রেনিং হাসপাতালের প্রাথমিক পর্যায়ের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। আরএফএল ১০০ একর জমি চাইলেও পর্যাপ্ত জমি না থাকায় দেওয়া যায়নি।
শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারসহ তিনটি ভবনের কাজ শেষ। আনসার সদস্যদের ব্যারাক, অভ্যন্তরীণ সড়ক ও কানেক্টিং কালভার্ট, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি অঙ্গন, প্রশাসনিক ভবন, ৩৩ কেভিএ লাইনের ১০ মেগাওয়াট বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাস স্টেশন, ভূমি উন্নয়ন, সেতু, গেট হাউস, কালভার্ট কাম স্লুইসগেট, দুই হাজার ফুট গভীর নলকূপ, রাস্তা, স্যুয়ারেজ সিস্টেম, ইউটিলিটি ভবন, প্রশাসনিক ভবনের চারপাশের বেড়া, নালা, ঘাট কাম স্লোপ প্রোটেকশন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার (ইঞ্জিনিয়ারিং) মতিলাল হাওলাদার বলেন, পার্কটি পুরোপুরি প্রস্তুত। হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিনিয়োগের সব সুযোগ-সুবিধা বা শর্ত প্রস্তুত। এখন বিনিয়োগকারী এসে কাজ শুরু করবে। আগামী এক বছরের মধ্যে এখানে অনেক বড় কর্মযজ্ঞ দেখা যাবে।
তবে এই সুযোগ-সুবিধা নিয়েই দ্বিমত পোষণ করেছেন কয়েকজন বরাদ্দপ্রাপ্ত। ঋণসহ অন্য সুবিধা না থাকায় আগ্রহ হারিয়েছেন তাঁরা। চারটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পাওয়া জমি ও জায়গা ছেড়ে দিয়েছে বা দেবে। এর মধ্যে মেসার্স নুহ ও সোহান এন্টারপ্রাইজের মালিক শামীম আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ তারকা হোটেল করতে ১২০ কোটি টাকা লাগে। ঋণের ব্যবস্থাও নেই। ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছিলাম, তারাও ফান্ড ম্যানেজ করতে পারছে না। এখন আমরা ছেড়ে দেব।’
সিমেড হেলথ লিমিটেডের পরিচালক অধ্যাপক খন্দকার এ মামুন বলেন, কোভিডের কারণে কিছু সমস্যা হওয়ায় তাঁরা জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন। নুডস সল্যুশনের সিইও এম রাহবার জুমার আবেশও বরাদ্দ জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা জানান।
এদিকে ইন টাচ আইটির চৌধুরী মুহসিন সিদ্দিকী বলেন, সেখানে গিয়ে তাঁদের তেমন লাভ হবে না। তাই ছেড়ে দিয়েছেন। তারা ফোন করেছিল ছেড়ে দেওয়ার মেইলটা আবার ফরওয়ার্ড করার জন্য।
টুগেদার আইটি ইন্ডাস্ট্রিয়ালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমতিয়াজুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এই হাই-টেক পার্কে কী ধরনের কাজ করব, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। পরে জানাব।’
ইএলবি জমি বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই ডেটা সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু করলেও দুই দফা বন্যার কারণে থামিয়ে দেয়। প্রতিষ্ঠানটির কাজ তদারক করা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ তারিক বলেন, ‘আবার কবে কাজ শুরু করব জানি না।’
আরটিএম টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ জগলুল পাশা বলেন, ‘আমরা তো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। যদি সরকার সহায়ক হয়, তাহলে বিষয়টা সুবিধা হবে।’ রহমানিয়া সুপার মার্কেটের বরাদ্দপ্রাপ্ত জমিতে বোর্ড ক্লাব ও রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সৈয়দ মহসিন হোসেন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, পার্কের বর্তমান পরিবেশ দেখে বিনিয়োগের টাকা উঠবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তিনি বলেন, তিনি কাজ করলেও অনেকে জমি, জায়গা বরাদ্দ নিয়ে ফেলে রেখেছে।
তবে ইমতিয়াজুল হক ভুঁইয়া বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করেছি। এখনো সুযোগ-সুবিধার অভাব দেখিনি।’ অটোমেশন সার্ভিস লিমিটেডের সিইও পাপ্পু বলেন, ‘আমাদের চুক্তি হয়নি এখনো। আমাদের পার্টনারও চলে গেছে। পার্টনার পেলে কাজ শুরু করব।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মুমিন জানান, তাঁরা সেখানে ল্যাব করবেন। কাজ শুরু করেননি।
মেসার্স আব্দুল বাশির এন্টারপ্রাইজের জয়নাল আহমদ বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করিনি। এখনো চুক্তি হয়নি।’ এদিকে ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী হেলথ ল্যান্ডমার্ক হোল্ডিং লিমিটেড দেড় একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। তবে ওয়েবসাইটে দেওয়া চারটি মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে জানানো হয়, এ নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের কথা তাঁরা জানেন না। নামও শোনেননি। একটি নম্বরের ফোনের অপর প্রান্ত থেকে আলমগীর নামের এক ব্যক্তি নিজেকে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘অনেকেই আমার এই নম্বরে ফোন করে ওই প্রতিষ্ঠানের কথা জানতে চায়। আমি প্রতিষ্ঠানটির নামই শুনিনি। আমারও কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
আরএফএল ইলেকট্রনিকস লিমিটেড, আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি, ব্যাবিলন রিসোর্সেস লিমিটেড, ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘লাখ লাখ টাকায় বরাদ্দ নেওয়া জায়গার ওপর ঋণের সুবিধা নেই। ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। সুযোগ-সুবিধা না পেলে কেউ কি যাবে? যেখানে সরকারের বিনিয়োগ নেই, সেখানে ব্যবসায়ীরাও বিনিয়োগ করবেন না। এটা আমাদের সিলেটিদের জন্য করা হয়নি। আমরা অযথা নিজের পয়সা খরচ করে দেশ-বিদেশে সিলেটের মানুষকে হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে সভা-সেমিনার করেছি।’
বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষের কাছে জমি ও ফ্লোরস্পেস বরাদ্দের ভাড়া, আয়-ব্যয় ও প্রতিষ্ঠানের সঠিক তালিকা চেয়ে পাওয়া যায়নি। তিনি সোমবার আরও দুদিনের সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি পার্ককে আরও আট একর জায়গা দেওয়া হয়েছে। আরও ৮০ একর জায়গা পেয়েছেন, তবে বরাদ্দ হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানুষের অনেক প্রত্যাশা থাকে, সব তো পূরণ হয় না। আমরাও সমালোচনার ঊর্ধ্বে নই। আমরা সব রেডি করেছি। সিলেট অঞ্চলের মানুষের বিনিয়োগের একটা জায়গা হয়েছে, এটা অস্বীকার করার কিছু নেই।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুধু হাইটেক পার্ক করলেই হবে না, সেগুলোতে তদারকিও করতে হবে। আবার সহজ ব্যবসার পরিবেশসহ অন্যান্য সুবিধাও নিশ্চিত করতে হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সময়সাপেক্ষ।
শুরুর আগেই বরাদ্দ ছেড়ে দিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। বরাদ্দ পাওয়া বাকি ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগ এখনো কাজ শুরু করেনি। যে দু-একটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে, তা-ও চলছে ঢিমেতালে। কেউ মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, কেউ আছে বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিধায়। একটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেলেও ওই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমন হাল সিলেটের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঋণের সুবিধা না থাকা, বিনিয়োগ করা অর্থ উঠে আসা নিয়ে সংশয়, বিশ্ববাজারে মন্দা, ডলার সংকট, প্রকল্প এলাকায় বসবাসসহ অন্যান্য সুবিধা গড়ে না ওঠা, ভালো পরিবেশ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে আগ্রহে ভাটা পড়েছে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণি এলাকায় প্রায় ১৬৩ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত হচ্ছে এই হাই-টেক পার্ক। এটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বাহাটেপাক)। কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্মাণ শেষে আগামী মার্চেই প্রকল্পটি বুঝিয়ে দেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড। এখন বিনিয়োগকারীদের জন্য অপেক্ষা।
২০১৬ সালের ৮ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৩৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর। সম্প্রতি মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন।
বাহাটেপাক কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্প নির্মাণে ৩৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও ৩১৯ কোটি টাকা খরচ হওয়ায় সাশ্রয় হচ্ছে ১৭ কোটি টাকা। পার্কে ইতিমধ্যে ১২টি প্রতিষ্ঠান প্লট এবং ৬টি প্রতিষ্ঠান ভবনে জায়গা বরাদ্দ নিয়েছে। পার্কটি প্রবাসী-অধ্যুষিত সিলেটে বড় বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করেছে। সব ঠিক থাকলে এখানে ২০২৪ সালে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হবে। এখানে উৎপাদিত পণ্য ভারতের সেভেন সিস্টার্সের বাজার ধরতে পারবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ হবে। স্থানীয় অদক্ষ শ্রমিকসহ অর্ধলক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এতে সিলেট অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে আরও উন্নত হবে।
বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কের প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভুঁইয়া বলেন, এখানে সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক পণ্য ও যন্ত্রাংশ তৈরি হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ১২টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১.৩৯৯ একর জমি ও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ভবনে ১৪,৭৬০ বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪০ বছরের জন্য। পরে মেয়াদ বাড়তে পারে। এর মধ্যে র্যাংগস ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ৩২ একর, আরএফএল ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ২০, ব্যাবিলন রিসোর্সেস লিমিটেড ২, হেলথ ল্যান্ডমার্ক হোল্ডিং লিমিটেড ১.৫, রহমানিয়া সুপার মার্কেট ১, টুগেদার আইটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ১, ইএলবি ১, মেসার্স নুহ এবং সোহান এন্টারপ্রাইজ প্রায় সাড়ে ৩, অটোমেশন সার্ভিস লিমিটেড ১, আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ৮, ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিমিটেড ০.১৪৯, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ০.৩৩০ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। পাঁচ তারকা হোটেলের জন্য ৩ একর, বোর্ড ক্লাবের জন্য ২ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে ৪ হাজার বর্গফুট, সিমেড হেলথ লিমিটেডকে ১ হাজার, নুডস সল্যুশনকে ১ হাজার ৫০০, মেসার্স আব্দুল বাশির এন্টারপ্রাইজকে ২ হাজার ২৬০, ইন টাচ আইটিকে ২ হাজার বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছয়টি সিলেট অঞ্চলের। বছরে প্রতি বর্গমিটার জমির ভাড়া দেড় মার্কিন ডলার এবং মাসে প্রতি বর্গফুট জায়গার ভাড়া ৫ টাকা, সার্ভিস চার্জ ৫ টাকা।
কর্তৃপক্ষের দাবি, বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি মাসে কিস্তি দিচ্ছে। তাদের দ্রুত কাজ শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনা নির্মাণকাজ শুরুও করেছে। তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হলেও বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্মাণকাজের তোড়জোড় নেই। অথচ চুক্তি অনুযায়ী বরাদ্দের এক বছরের মধ্যে কাজ শুরুর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রবেশপথেই চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন সেতু। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি অঙ্গন। প্রবেশপথ পেরিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের ভবনের একতলা কাঠামো। এরপর ব্যাংক ভবন ও প্রশাসনিক ভবন। কিছু দূরে ভূমি জরিপ করছেন র্যাংগসের লোকজন। প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপক (সিভিল) এস এম আসিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরিপ শেষ হলেই স্থাপনা নির্মাণ শুরু হবে।
বোর্ড ক্লাব এবং রিসার্চ ও ট্রেনিং হাসপাতালের প্রাথমিক পর্যায়ের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। আরএফএল ১০০ একর জমি চাইলেও পর্যাপ্ত জমি না থাকায় দেওয়া যায়নি।
শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারসহ তিনটি ভবনের কাজ শেষ। আনসার সদস্যদের ব্যারাক, অভ্যন্তরীণ সড়ক ও কানেক্টিং কালভার্ট, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি অঙ্গন, প্রশাসনিক ভবন, ৩৩ কেভিএ লাইনের ১০ মেগাওয়াট বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাস স্টেশন, ভূমি উন্নয়ন, সেতু, গেট হাউস, কালভার্ট কাম স্লুইসগেট, দুই হাজার ফুট গভীর নলকূপ, রাস্তা, স্যুয়ারেজ সিস্টেম, ইউটিলিটি ভবন, প্রশাসনিক ভবনের চারপাশের বেড়া, নালা, ঘাট কাম স্লোপ প্রোটেকশন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার (ইঞ্জিনিয়ারিং) মতিলাল হাওলাদার বলেন, পার্কটি পুরোপুরি প্রস্তুত। হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিনিয়োগের সব সুযোগ-সুবিধা বা শর্ত প্রস্তুত। এখন বিনিয়োগকারী এসে কাজ শুরু করবে। আগামী এক বছরের মধ্যে এখানে অনেক বড় কর্মযজ্ঞ দেখা যাবে।
তবে এই সুযোগ-সুবিধা নিয়েই দ্বিমত পোষণ করেছেন কয়েকজন বরাদ্দপ্রাপ্ত। ঋণসহ অন্য সুবিধা না থাকায় আগ্রহ হারিয়েছেন তাঁরা। চারটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পাওয়া জমি ও জায়গা ছেড়ে দিয়েছে বা দেবে। এর মধ্যে মেসার্স নুহ ও সোহান এন্টারপ্রাইজের মালিক শামীম আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ তারকা হোটেল করতে ১২০ কোটি টাকা লাগে। ঋণের ব্যবস্থাও নেই। ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছিলাম, তারাও ফান্ড ম্যানেজ করতে পারছে না। এখন আমরা ছেড়ে দেব।’
সিমেড হেলথ লিমিটেডের পরিচালক অধ্যাপক খন্দকার এ মামুন বলেন, কোভিডের কারণে কিছু সমস্যা হওয়ায় তাঁরা জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন। নুডস সল্যুশনের সিইও এম রাহবার জুমার আবেশও বরাদ্দ জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা জানান।
এদিকে ইন টাচ আইটির চৌধুরী মুহসিন সিদ্দিকী বলেন, সেখানে গিয়ে তাঁদের তেমন লাভ হবে না। তাই ছেড়ে দিয়েছেন। তারা ফোন করেছিল ছেড়ে দেওয়ার মেইলটা আবার ফরওয়ার্ড করার জন্য।
টুগেদার আইটি ইন্ডাস্ট্রিয়ালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমতিয়াজুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এই হাই-টেক পার্কে কী ধরনের কাজ করব, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। পরে জানাব।’
ইএলবি জমি বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই ডেটা সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু করলেও দুই দফা বন্যার কারণে থামিয়ে দেয়। প্রতিষ্ঠানটির কাজ তদারক করা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ তারিক বলেন, ‘আবার কবে কাজ শুরু করব জানি না।’
আরটিএম টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ জগলুল পাশা বলেন, ‘আমরা তো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। যদি সরকার সহায়ক হয়, তাহলে বিষয়টা সুবিধা হবে।’ রহমানিয়া সুপার মার্কেটের বরাদ্দপ্রাপ্ত জমিতে বোর্ড ক্লাব ও রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সৈয়দ মহসিন হোসেন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, পার্কের বর্তমান পরিবেশ দেখে বিনিয়োগের টাকা উঠবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তিনি বলেন, তিনি কাজ করলেও অনেকে জমি, জায়গা বরাদ্দ নিয়ে ফেলে রেখেছে।
তবে ইমতিয়াজুল হক ভুঁইয়া বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করেছি। এখনো সুযোগ-সুবিধার অভাব দেখিনি।’ অটোমেশন সার্ভিস লিমিটেডের সিইও পাপ্পু বলেন, ‘আমাদের চুক্তি হয়নি এখনো। আমাদের পার্টনারও চলে গেছে। পার্টনার পেলে কাজ শুরু করব।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মুমিন জানান, তাঁরা সেখানে ল্যাব করবেন। কাজ শুরু করেননি।
মেসার্স আব্দুল বাশির এন্টারপ্রাইজের জয়নাল আহমদ বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করিনি। এখনো চুক্তি হয়নি।’ এদিকে ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী হেলথ ল্যান্ডমার্ক হোল্ডিং লিমিটেড দেড় একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। তবে ওয়েবসাইটে দেওয়া চারটি মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে জানানো হয়, এ নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের কথা তাঁরা জানেন না। নামও শোনেননি। একটি নম্বরের ফোনের অপর প্রান্ত থেকে আলমগীর নামের এক ব্যক্তি নিজেকে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘অনেকেই আমার এই নম্বরে ফোন করে ওই প্রতিষ্ঠানের কথা জানতে চায়। আমি প্রতিষ্ঠানটির নামই শুনিনি। আমারও কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
আরএফএল ইলেকট্রনিকস লিমিটেড, আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি, ব্যাবিলন রিসোর্সেস লিমিটেড, ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘লাখ লাখ টাকায় বরাদ্দ নেওয়া জায়গার ওপর ঋণের সুবিধা নেই। ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। সুযোগ-সুবিধা না পেলে কেউ কি যাবে? যেখানে সরকারের বিনিয়োগ নেই, সেখানে ব্যবসায়ীরাও বিনিয়োগ করবেন না। এটা আমাদের সিলেটিদের জন্য করা হয়নি। আমরা অযথা নিজের পয়সা খরচ করে দেশ-বিদেশে সিলেটের মানুষকে হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে সভা-সেমিনার করেছি।’
বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষের কাছে জমি ও ফ্লোরস্পেস বরাদ্দের ভাড়া, আয়-ব্যয় ও প্রতিষ্ঠানের সঠিক তালিকা চেয়ে পাওয়া যায়নি। তিনি সোমবার আরও দুদিনের সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি পার্ককে আরও আট একর জায়গা দেওয়া হয়েছে। আরও ৮০ একর জায়গা পেয়েছেন, তবে বরাদ্দ হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানুষের অনেক প্রত্যাশা থাকে, সব তো পূরণ হয় না। আমরাও সমালোচনার ঊর্ধ্বে নই। আমরা সব রেডি করেছি। সিলেট অঞ্চলের মানুষের বিনিয়োগের একটা জায়গা হয়েছে, এটা অস্বীকার করার কিছু নেই।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুধু হাইটেক পার্ক করলেই হবে না, সেগুলোতে তদারকিও করতে হবে। আবার সহজ ব্যবসার পরিবেশসহ অন্যান্য সুবিধাও নিশ্চিত করতে হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সময়সাপেক্ষ।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
শুরুর আগেই বরাদ্দ ছেড়ে দিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। বরাদ্দ পাওয়া বাকি ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগ এখনো কাজ শুরু করেনি। যে দু-একটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে, তা-ও চলছে ঢিমেতালে। কেউ মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, কেউ আছে বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিধায়। একটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেলেও ওই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে
২৪ জানুয়ারি ২০২৩‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
শুরুর আগেই বরাদ্দ ছেড়ে দিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। বরাদ্দ পাওয়া বাকি ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগ এখনো কাজ শুরু করেনি। যে দু-একটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে, তা-ও চলছে ঢিমেতালে। কেউ মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, কেউ আছে বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিধায়। একটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেলেও ওই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে
২৪ জানুয়ারি ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
শুরুর আগেই বরাদ্দ ছেড়ে দিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। বরাদ্দ পাওয়া বাকি ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগ এখনো কাজ শুরু করেনি। যে দু-একটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে, তা-ও চলছে ঢিমেতালে। কেউ মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, কেউ আছে বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিধায়। একটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেলেও ওই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে
২৪ জানুয়ারি ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
শুরুর আগেই বরাদ্দ ছেড়ে দিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। বরাদ্দ পাওয়া বাকি ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগ এখনো কাজ শুরু করেনি। যে দু-একটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে, তা-ও চলছে ঢিমেতালে। কেউ মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, কেউ আছে বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিধায়। একটি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেলেও ওই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে
২৪ জানুয়ারি ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫