Ajker Patrika

ফুলতলায় বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হচ্ছে কাটা ধান

নেছার উদ্দিন, ফুলতলা
আপডেট : ১২ মে ২০২২, ১৪: ৩৯
ফুলতলায় বৃষ্টির পানিতে  নষ্ট হচ্ছে কাটা ধান

ফুলতলায় বৃষ্টিতে খেতে কেটে রাখা পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এতে হতাশায় দিন পার করছেন কৃষকেরা। একদিকে শ্রমিক-সংকট, অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়া যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খেতে কেটে রাখা ধান ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টির পানিতে ভাসছে।

জানা গেছে, ধানের ফলন ও দাম ভালো হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। ধান ঘরে তোলার মুহূর্তে বৈরী আবহাওয়া ও ভারী বৃষ্টির কারণে চাষিরা চরম উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন। এ ছাড়া শ্রমিক সংকটে ধান ঘরে তোলা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক কৃষকেরা। এই উপজেলায় ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে বৃষ্টি হওয়ায় অনেক কৃষক আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করেছেন।

পুরোদমে ধান কাটার মৌসুম শুরু হলেও এখনো ২০ শতাংশ কৃষক খেতের ধান ঘরে তুলতে পারেননি। আর দুই এক সপ্তাহ সময় পেলে পাকা ধানগুলো কেটে ঘরে তুলতে পারতেন কৃষকেরা। একদিকে সপ্তাহ পার না হতেই ফের গত সোমবার থেকে ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ায় অধিকাংশ মাঠের পাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে কেটে রাখা ধান পানিতে ডুবে গেছে। এতে ধানের সঙ্গে ডুবছে কৃষকের স্বপ্ন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, উপজেলায় এ বছর বোরো ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে। তেমনি ফলনও ভালো হয়েছিল। গত সোমবার থেকে বৃষ্টির কারণে যে সব বোরো খেত তলিয়ে গেছে, সেসব খেতে আইল কেটে দ্রুত পানি বের করে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যেসব খেতে ধান নুয়ে পড়েছে; সেসব খেতের ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা কৃষকদের পাশে আছি, তারা আমাদের পরামর্শ নিয়ে খেতের ধান ঘরে তোলার জন্য চেষ্টা করছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্র জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ৪ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। ২০ শতাংশ জমির ধান ঈদের কারণে শ্রমিক সংকট ও মজুরি বেশি হওয়ায় কাটতে পারেনি।

৪৫ বছর বয়সী কৃষক মকবুল গাজী ১৮ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। শ্রমিক না পেয়ে সব ধান সময়মতো ঘরে তুলতে পারেননি তিনি। জামিরা গ্রামের ওসমান গাজী বলেন, শ্রমিকের অভাবে এক বিঘা জমির ধান কাটতি পারিনি। দুই বিঘার ধান কাটিছি। বাড়ি আনতি পারিনি। মাঠে ধান ভাসছে।

মশিয়ালী গ্রামের আজগর আলী পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। তিনি বললেন, `মাঠের ধান এখনো পুরো কাটা হয়নি। যা কাটা হইছে, মাঠেই পড়ে আছে। বৃষ্টি একদম শ্যাষ করে দিল। কি করব এখন বুঝতি পারছিনে।’ একই গ্রামের কৃষক আবদুল জব্বার (৫০) বলেন, বৃষ্টিতে ধান তো গেলোই, সঙ্গে বিচেলিগুলোও নষ্ট হয়ে গেল। ধান বিক্রির পাশাপাশি বিচেলিগুলো বিক্রি করতি পারলি লাভ একটু বেশি হয়। এখন বিচেলিগুলো পচে যাচ্ছে।

জামিরা, ছাতিয়ানি, বাড্ডাগাতী, ধোপাখোলা, পিপরাইল, বসুরাবাদ, বেগুনবাড়িয়া, মশিয়ালী, পাড়িয়ারডাঙ্গা, শিরোমণি, ডাকাতিয়াসহ কয়েক এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা তাদের জমি থেকে ধান তুলে রাস্তার ওপর রেখেছে শুকানোর জন্য। দ্রুত সময়ে তারা ধান ঘরে তুলতে ও ধান মাড়াইয়ের ব্যবস্থা করতে পারলে ক্ষতি থেকে অনেকটা রক্ষা পাবে। অনেক কৃষক তলিয়ে যাওয়া ধান তুলে এনে আইলের ওপরে রেখেছে। আবার কিছু কিছু জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত