Ajker Patrika

২০০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়ল চট্টগ্রাম বন্দরে

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১১: ০০
২০০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়ল চট্টগ্রাম বন্দরে

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরে প্রথমবারের মতো ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে বন্দরের মূল জেটিতে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজটি ভেড়ে। এর আগে সর্বোচ্চ ১৯০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারত।

চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) ভেড়ানো বড় এই জাহাজের নাম ‘কমন অ্যাটলাস’। জাহাজটি মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, জেটিতে বর্তমানে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফট (পানির নিচে থাকা জাহাজের অংশ) এবং ১৯০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়তে পারে। এমন প্রতিটি জাহাজ ২৫০০ থেকে ২৬০০ টিইইউএস কনটেইনার বহন করতে পারে। আর ১০ মিটার ড্রাফটের ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ ৩৮০০ থেকে ৪০০০ কনটেইনার পরিবহন করতে পারবে। অর্থাৎ এমন আকারের প্রতিটি জাহাজে বর্তমানের চেয়ে ১০০০ থেকে ১১০০ টিইইউএস কনটেইনার বেশি পরিবহন করা যাবে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারীরা কম খরচে পণ্য পরিবহনের সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। দেশের ভাবমূর্তি বাড়বে মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে।

বন্দর সূত্র জানায়, ১৯৭৫ সালে বন্দরে ১৬০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৭ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো হতো। ১৯৮০ সালে তা বাড়িয়ে ১৭০ মিটার লম্বা ও ৮ মিটার ড্রাফট করা হয়। ১৯৯০ সালে তা ১৮০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটে উন্নীত করা হয়। ১৯৯৫ সালে ১৮৬ মিটার লম্বা ও ৯ দশমিক ২ মিটার ড্রাফট করা হয়। আর ২০১৪ সাল থেকে ১৯০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো শুরু হয়। গতকাল শুরু হলো আরও বড় জাহাজ ভেড়ানো।
দুপুরে বেলুন উড়িয়ে ২০০ মিটার লম্বা জাহাজের বার্থিং কার্যক্রম উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এর আগে তিনি বন্দরের ভান্ডার ভবন এলাকায় নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন। বার্থিংয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এটি দেশের জন্য গর্ব ও অহংকারের। দেশের অগ্রযাত্রাকে কোনো অপশক্তি দমাতে পারবে না। বে টার্মিনালে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করবে চট্টগ্রাম বন্দর। ২০২৫ সালের শেষ দিকে কিংবা ২০২৬ সালের শুরুতে এর কার্যক্রম চালু করতে পারব।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন দাতাগোষ্ঠীরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার নিয়ে আমাদের পেছনে ঘুরছে।’অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান। বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, যুক্তরাজ্যভিত্তিক হাইড্রোলিক সংস্থা এইচআর ওয়েলিংফোর্ডের প্রতিনিধি ড. মনজুরুল কাদের, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম এবং বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মো. আরিফ।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, এটি চট্টগ্রাম বন্দর ও বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক দিন। ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। এর ফলে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানিতে আরও গতি আসবে। সভাপতির বক্তব্যে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত