Ajker Patrika

লোডশেডিং চলবেই?

সম্পাদকীয়
লোডশেডিং চলবেই?

বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাফল্যের কথা যখন বলা হয়েছিল, তখনো দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে লোডশেডিং চলছিল। উৎপাদন ও বিতরণব্যবস্থায় সমন্বয়হীনতা কিংবা অন্য কোনো ত্রুটির কারণে দেশ শতভাগ লোডশেডিংমুক্ত হতে পারেনি। তবে এটা ঠিক বিদ্যুৎ খাতে উন্নতি হয়েছে। মানুষ চায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। এখানে সামান্য ব্যত্যয় ঘটলেও গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। কারণ বিদ্যুৎ বিনা পয়সায় দেওয়া হয় না। পয়সা যেহেতু নিয়মিত নেওয়া হয়, সেহেতু সরবরাহটাও নিয়মিত হতে হবে।

কয়েক দিন ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহে সমস্যা দেখা যাচ্ছে। প্রথমে বলা হয়েছিল, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে এই সাময়িক সমস্যা। দু-এক দিনের মধ্যে সমস্যা দূর হবে। কিন্তু মঙ্গলবার আজকের পত্রিকায় ‘শিগগির কাটছে না লোডশেডিং’ শিরোনামে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, আগামী দিন দশেকের আগে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা কম। গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক হবে না। আর বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক না হলে লোডশেডিংও কমবে না।

তীব্র গ্যাসের সংকটে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ধস নেমেছে। উৎপাদনে ঘাটতি থাকায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরেও দৈনিক ৫-৭ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং হচ্ছে ১০-১২ ঘণ্টা করে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। এ অবস্থায় শিগগিরই মুক্তি মিলছে না লোডশেডিং থেকে।

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এখন ২৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি, আর চাহিদা থাকে গড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াটের মতো। কিন্তু সেটা গ্রীষ্মকালে বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৬ হাজার মেগাওয়াট। তিন দিন ধরে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন নেমেছে ১০ হাজার মেগাওয়াটে। 
পিডিবি থেকে দেওয়া তথ্যে জানা যায়, গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসে প্রায় ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। গত শুক্রবার এলএনজি সরবরাহ বন্ধের পর থেকে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ৬ হাজার থেকে কমে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াটে ঠেকেছে। একই সঙ্গে আগে থেকে রামপালসহ বেশ কিছু কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকায় বেড়েছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা।

গ্যাসের সংকট শিগগির কাটছে না, এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে জানিয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে আমাদের একটা ভাসমান টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটার কারিগরি ত্রুটি সারিয়ে আমরা এলএনজি সরবরাহ শুরু করেছি। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আমাদের কেনা তিনটি এলএনজি কার্গোকে বাংলাদেশে না আসার জন্য বলা হয়েছে। সেগুলো এখন আরব সাগরে অবস্থান করছে। সেগুলো এলেও এখন সরবরাহ করা যাবে না। কারণ, আগাম সতর্কতার অংশ হিসেবে টার্মিনালকে গভীর সমুদ্রে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেটা আবার অপারেশনে আসতে বেশ সময় লাগবে। এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলে এলএনজি সরবরাহ স্বাভাবিক হতে বেশ সময় লাগবে।’

বিদ্যুৎ উৎপাদন যেহেতু গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল, সেহেতু গ্যাসের সরবরাহ ব্যাহত হলে উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দেওয়াই স্বাভাবিক। গ্যাসের সংকট কাটিয়ে ওঠার স্থায়ী পরিকল্পনার কথা কবে ভাবা হবে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত