Ajker Patrika

বাঁধ নেই, ভাসছে লোকালয়

লক্ষ্মীপুর ও কমলনগর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪: ৪১
বাঁধ নেই, ভাসছে লোকালয়

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে লক্ষ্মীপুরে তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারে রামগতির চর আবদুল্লাহ, বড়খেরী, কমলনগরের চরফলকন, চরকালকিনি, সাহেবেরহাট ও রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশীর চরকাচিয়া, চরখাসিয়া এবং সদর উপজেলার চর রমণীমোহন ইউনিয়নের প্রায় ২০টি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্ছানগর, সমসেরাবাদ, শাহাপুর, মিয়া আবু তাহের সড়কসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নালা (ড্রেন) ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পৌরসভার রাস্তাঘাটে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দ্রুত এসব সমস্যা সমাধানের দাবি জানান পৌরবাসী।

অপর দিকে মেঘনার তীব্র ঢেউয়ে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার প্রায় ১৫টি পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত তিন দিনে শতাধিক পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। ভাঙন আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন, সাহেবের হাট, মাতব্বর হাট, মতিরহাট, চরলরেন্স, চরকালকিনি এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। একই অবস্থা রামগতির চর আবদুল্লাহ, বড়খেরী, তেলির চর, বয়ারচর, বাংলাবাজার, আসলপাড়া ও জনতা বাজার এলাকার।

স্থানীয়রা জানান, মেঘনার তীরবর্তী এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি খুব সহজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে নদীভাঙনসহ উপকূলীয় বাসিন্দাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। গত তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্রায় শতাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এর কয়েক দিন আগেও একইভাবে প্লাবিত হয়েছে এসব অঞ্চল। প্রতিদিন অন্তত ছয় ঘণ্টার বেশি প্লাবিত থাকে। ভাটা সময় পানি কমলেও দুর্ভোগ কমে না।

কমলনগর উপজেলার চরলরেন্স এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, গতকাল দুপুরে পানি উঠতে শুরু করে। বেলা ৩টার দিকে পানি ঘরের ভেতর ঢুকে যায়। এতে শিশুসন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তাই সন্তান নিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। পানি নামলে ঘরে ফিরবেন।

একই এলাকার বাসিন্দা কহিনুর বেগম বলেন, জোয়ারের পানিতে তাঁদের রান্নার চুলা তলিয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত তাঁরা এমন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়ার কথাও জানান তিনি।

কমলনগরের চর কালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইফউল্যা বলেন, জোয়ারের পানি নামার সময় উপকূলে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। এতে অনেকের বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

রামগতি আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. সৌরভ হোসেন জানান, লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। এটি আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। সবাইকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মেঘনায় মাছ ধরার নৌকা ও জেলেদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারে পানি লোকালয়ে ঢুকে কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ বলেন, মেঘনায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি অস্বাভাবিক জোয়ারে উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। তবে ভাটা পড়লে পানি নেমে যাবে। ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করা হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত