Ajker Patrika

‘রোহিঙ্গারা জায়গা পেলে আমরা কেন পাব না’

মিজানুর রহমান, তানোর
আপডেট : ২৪ মে ২০২২, ১৬: ২০
Thumbnail image

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃপায় রোহিঙ্গারা জায়গা পেয়েছেন, মাথা গোঁজার ঘর পেয়েছেন। কিন্তু আমরা বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও আজ পাঁচ দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। খাবার নেই, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। কোনো জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কেউ আমাদের কাছে আসল না, আমাদের দুঃখ দেখার কেউ কি নেই?’

রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর স্কুলসংলগ্ন এলাকায় গতকাল দুপুরে ডুকরে কাঁদতে কাঁদতে এসব কথা বলছিলেন শ্যামল কর্মকার (৪১) নামের এক কৃষক। তিনিসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আরও ১৫টি হতদরিদ্র পরিবার সম্প্রতি আদালতের রায়ে বাড়ির জায়গা থেকে উচ্ছেদ হয়েছে।

ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে উপজেলার কৃষ্ণপুর স্কুলসংলগ্ন এলাকায় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের জমিকে খাসজমি বলে গুজব রটানোর অভিযোগ ওঠে। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী স্থানীয় কয়েকজন নেতা এ গুজব ছড়ান। সে সময় আর্থিক চুক্তির বিনিময়ে তাঁরা দরিদ্র কয়েকটি পরিবারকে রাতারাতি ওই স্থানে ঘর তৈরি করে দখলে থাকতে দেন। তবে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে আদালতে উচ্ছেদের মামলা ঠুকে দেন জমির মালিক। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে মামলা চলে। এরপর চলতি মাসের ১৮ তারিখে আদালতের রায়ে ওই স্থানে বসতি করে থাকা প্রায় ২৮টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। ঘর উচ্ছেদের পর মাথা গোঁজার ঠায় নিয়ে তারা পড়েছে বিপাকে। বয়োবৃদ্ধ ও শিশুসন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচেই বসে আছে ১৫টি পরিবার।

উচ্ছেদ হওয়া নিপেন কর্মকার বলেন, ‘মাত্র আধা ঘণ্টা আগে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছিল। ঘর সরিয়ে নিয়েছি। খোলা আকাশের নিচে বসে আছি। সামনের দিন কীভাবে কাটাব জানি না।’

জামেলী রাশী ও সুনীলা রানী নামের দুই বয়োবৃদ্ধ নারী বলেন, ১০ বছর ধরে এখানে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন তাঁরা। আচমকা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁদের থাকার জায়গাটাও নেই।

পাঁচন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের মোবাইল ফোনে গতকাল দুপুরে কল করা হলে ব্যস্ত আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘শুনেছি আদালতের রায়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর মধ্যে যারা প্রকৃত অসহায়, তারা আবেদন করলে বাসস্থানের বিষয়টি দেখা হবে।’ তবে তা সময়সাপেক্ষ বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত