Ajker Patrika

নগরে রিকশা ধর্মঘটে বিড়ম্বনা

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২২, ১৮: ০০
নগরে রিকশা ধর্মঘটে বিড়ম্বনা

নগরীতে আট দফা দাবিতে ধর্মঘট পালন করেছে রিকশাচালকদের ছয়টি সংগঠন। দাবির মধ্যে রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে ভাড়া বৃদ্ধি এবং পুলিশের অন্যায়ভাবে চাপিয়ে দেওয়া জরিমানা আদায় বন্ধ করা।

গতকাল সোমবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস এই কর্মসূচি চলে। এ সময় নগরীর রাস্তায় কোনো রিকশাভ্যান ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা যায়নি। এতে করে দিনের প্রথম ভাগে গন্তব্যে পৌঁছাতে বিড়ম্বনার শিকার হন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।

সকাল ৯টার দিকে নগরীর কয়েকটি পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে দেখা গেছে, অটোরিকশার দৌরাত্ম্যের কারণে চিরচেনা যানজটের রাস্তা একেবারেই ফাঁকা। কোথাও নেই কোনো অটোরিকশা বা এ ধরনের বাহন। কেউ কেউ রিকশা বের করার চেষ্টা করলেও সংগঠনের কর্মীদের তোপের মুখে ফিরে যেতে হয়েছে।

যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য মোড়ে মোড়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর উপায় না পেয়ে হেঁটে রওনা হতে দেখা গেছে। এই সুযোগে উপজেলা সড়কে যাতায়াত করা কয়েকটি বাস নগরে চললেও রিকশা ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শাপলা চত্বরে কথা হয় লাইজু আক্তার নামে এক স্কুলশিক্ষকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি, কোনো অটোরিকশা নাই। ধর্মঘটের নামে এমন ভোগান্তি মেনে নেওয়া যায় না।’

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল-আমীন হোসেন জানান, সকালে টিউশনের জন্য তাঁকে শহরে যেতে হচ্ছে। অটোরিকশা না পেয়ে হেঁটে রওনা হয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী ফরহাদুজ্জামান ফারুক অভিযোগ করেন, অটোরিকশা চালকদের ধর্মঘট পালনের সুযোগ নিয়েছে নগরে চলাচল করা বাসগুলো। শাপলা চত্বর থেকে বাসে চড়ে প্রেসক্লাবের সামনে নামতে গুনতে হয়েছে ১০ টাকা। অথচ অটোরিকশায় নেওয়া হয় পাঁচ টাকা।

রংপুর মহানগর ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যান জাতীয় শ্রমিক ঐক্যজোটের ব্যানারে গতকাল এ ধর্মঘট পালন করা হয়। এর আগে ১৩ মার্চ একই দাবিতে নগরীতে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর স্মারকলিপি দেয় চালকদের ছয় সংগঠন।

রংপুর মহানগর জাতীয় শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বাবু বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন থেকে আট দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলন করে আসছি। দাবি আদায়ে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো দাবি আমলে নেয়নি। তাই আমরা অটোচালকদের ছয়টি সংগঠন একত্রিত হয়ে ধর্মঘট পালন করেছি।’

শ্রমিকদের দাবির মধ্যে আছে নগরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় ভাড়ার তালিকা টাঙানো, ব্যাটারিচালিত রিকশার ২ হাজার নতুন লাইসেন্স দেওয়া, শাপলা চত্বর থেকে জিলা স্কুল মোড় পর্যন্ত প্রধান সড়কে রং দিয়ে চিহ্নিত করে রিকশা চলাচলে পৃথক লেন করা, রিকশা চুরি, ছিনতাই ও প্রতারণায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার এবং ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ।

এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘নগরীতে নিবন্ধনধারী অটোরিকশার তুলনায় বেশি গাড়ি চলাচল করছে। শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। যে দাবিগুলো পূরণ করার মতো, সেগুলো বিবেচনা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত