Ajker Patrika

১৬০ কোটির সড়কে ৩ বছরেই খানাখন্দ

শামিমুজ্জামান, খুলনা
Thumbnail image

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ২০২০ সালে। ব্যয় হয়েছে ১৬০ কোটি টাকা। অথচ তিন বছর না যেতেই খানাখন্দ আর গর্ত তৈরি হয়েছে সড়কটিতে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, ভোগান্তি বাড়ছে যাত্রীদের।

এ ব্যাপারে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব বাবুল হাওলাদার বলেন, ১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সড়ক মাত্র তিন বছরের মধ্যে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাওয়া দুঃখজনক। যদি কাজটি সঠিকভাবে হতো, তাহলে এত দ্রুত সড়কটি নষ্ট হতো না। কাজ যেমন সঠিকভাবে হয়নি, তেমনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলরাও তদারকি করেননি। শুধু এই রাস্তাটি নয়, বাংলাদেশের অধিকাংশ সড়ক নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যে নষ্ট হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহি না থাকায় কাজের মান খারাপ হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কে আশির দশকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। সড়কটি পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে, শেষ হয় ২০২০ সালের জুনে। খুলনার জিরো পয়েন্ট থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারো মাইল পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণ ও প্রশস্ত করার কাজে ব্যয় হয়েছে ১৬০ কোটি টাকা। সড়কটি ১৮ ফুট থেকে ৩৬ ফুটে প্রশস্ত করা হয়েছে। পুরুত্ব হয়েছে প্রায় তিন ফুট। কিন্তু তিন বছর পার হতে না হতেই চুকনগর বাজার এলাকা, কাঁঠালতলা, গুটুদিয়া, ডুমুরিয়া বাজারের সন্নিকট, হুগলাডাঙ্গা বিদ্যুৎ অফিসের সামনে, রাজবাঁধ মসজিদ এলাকা, জিরো পয়েন্ট থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উঁচুনিচু খানাখন্দ আর গর্ত তৈরি হয়েছে। এসব খানাখন্দে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কের খানাখন্দগুলো সংস্কারের চেষ্টা করছে। কোথাও কোথাও শুকনো খোয়ার ওপর বিটুমিনের প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই জোড়াতালির সংস্কার কয়েক দিন না যেতেই আবার পণ্ড হচ্ছে। 

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেন স্থানীয় মো. আওয়াল শেখ। তিনি বলেন, এই সড়ক দিয়ে অনেক যানবাহন চলে। কিন্তু অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যে মোটরসাইকেল চালাতে হয় ভয়ে ভয়ে। সড়কের দুপাশ বসে গিয়ে সরু নালায় পরিণত হয়েছে। কোথাও কোথাও নালার উঁচু অংশ এক্সকাভেটর দিয়ে ভেঙে শুকনো খোয়া দেওয়া হয়েছে। এগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে।

ডুমুরিয়ার বাসিন্দা মো. হেদায়েত উল্লাহ সম্প্রতি এই সড়কে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হন। তিনি বলেন, সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়েছে। কোথাও সংস্কারের নামে খোয়া-বালু দেওয়া হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে গর্তে পানি জমে থাকে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, আগে এটি আঞ্চলিক মহাসড়ক ছিল। পুনর্নির্মাণের সময়ও এটি আঞ্চলিক মহাসড়ক ছিল। কিন্তু গত জানুয়ারিতে জাতীয় মহাসড়ক হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সড়কে যানবাহনের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সড়কের সর্বোচ্চ ওজন নেওয়ার ক্ষমতা ২২ টনের মতো। কিন্তু এখন ৬০-৭০ টন পণ্য নিয়ে যানবাহন চলছে। বাড়তি চাপের কারণে সড়কটি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কটিকে জাতীয় সড়কের অবকাঠামো অনুযায়ী করতে প্রকল্প তৈরি করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত